দক্ষিণ আফ্রিকার ১০ বছর বয়সী ৮০% শিশুই ‘ঠিকমতো পড়তে পারে না’

আন্তর্জাতিক গড় ৫০০ ধরে নিয়ে তার সঙ্গে দেশগুলোর অবস্থা তুলনা করে করা তালিকায় সবার উপরে আছে সিঙ্গাপুর।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2023, 11:05 AM
Updated : 17 May 2023, 11:05 AM

দক্ষিণ আফ্রিকার স্কুলগামী প্রতি ১০টি শিশুর ৮ জনই বয়স ১০ বছর হওয়ার পরও ঠিকমতো পড়তে পারে না বলে আন্তর্জাতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী ৪ লাখ শিক্ষার্থীর পড়ার সক্ষমতা নিয়ে প্রগ্রেস ইন ইন্টারন্যাশনাল রিডিং লিটারেসি স্টাডির এ সমীক্ষায় ৫৭টি দেশের তালিকায় আফ্রিকা মহাদেশের দেশটি সবার শেষে স্থান করে নিয়েছে।

২০১৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকান শিশুদের মধ্যে নিরক্ষরতার হার ছিল ৭৮ শতাংশ, তা এখন বেড়ে ৮১ শতাংশে পৌঁছেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

শিক্ষার এমন বেহাল দশার জন্য কোভিড-১৯ মহামারীকালে স্কুল বন্ধ থাকাকে দোষ দিচ্ছেন দেশটির শিক্ষামন্ত্রী।

আন্তর্জাতিক ওই গবেষণার ফলকে ‘ব্যাপক হতাশাজনক’ উল্লেখ করে মন্ত্রী আঙ্গি মোতশেকগা বলেছেন, তার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা দারিদ্র্য, বৈষম্য ও সরঞ্জামের ঘাটতিসহ এক গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।

“অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার ক্ষেত্রে কেবল মৌখিক কাজটুকুর উপরই নজর দেওয়া হয়, বুঝে পড়া বা লিখিত শব্দের অর্থ অনুধাবন করাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না,” বলেছেন তিনি।   

প্রগ্রেস ইন ইন্টারন্যাশনাল রিডিং লিটারেসি স্টাডির সমীক্ষায় দেখা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকার শিশুদের ৮১ শতাংশই দেশটির ১১টি সরকারি ভাষার কোনোটিই বুঝে পড়তে পারে না।

সাক্ষরতার হার এবং ৯-১০ বছর বয়সী শিশুদের বুঝে পড়ার ধারা পর্যালোচনার এই সমীক্ষায় আফ্রিকার তিনটি দেশ অংশ নিয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়া মহাদেশটির বাকি দুটি দেশ হচ্ছে মরক্কো ও মিশর।

প্রতি ৫ বছর পরপর শিক্ষাবর্ষ শেষে নেওয়া পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে হওয়া নতুন এ গবেষণাতে বৈশ্বিক শিক্ষা পরিস্থিতি সংক্রান্ত তালিকায় দেশগুলোর অবস্থান ঠিক করা হয়।

এ তালিকায় গড় ৫৮৭ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে স্থান করে নিয়েছে সিঙ্গাপুর। দক্ষিণ আফ্রিকার অবস্থান সবার নিচে, তার পয়েন্ট ২৮৮। তাদের উপরে থাকা মিশরের গড় পয়েন্ট ৩৭৮। আন্তর্জাতিক গড় ৫০০ ধরে নিয়ে তার সঙ্গে দেশগুলোর অবস্থা তুলনা করে এই পয়েন্ট ও তালিকা করা হয়েছে।

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, সমীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রায় সব দেশেই পড়ার সক্ষমতায় মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে। সাম্প্রতিক পরীক্ষাগুলোতে লৈঙ্গিক ব্যবধান কমে আসারও চিত্র মিলেছে।

বিবিসি লিখেছে, দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই খাবি খাচ্ছে; বর্ণবৈষম্যের শাসনামলে শিশুদের পৃথক রাখা হতো, যার কারণে কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারাত্মক বৈষম্য রয়েই গেছে।

দেশটির সরকার এখন বাজেটে যেসব খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেয় শিক্ষা তার একটি হলেও শিক্ষার্থীদের এমন মান হতাশা বয়ে আনছে।

পড়ার উপযুক্ত সরঞ্জামের ঘাটতি, টয়লেটের মতো প্রয়োজনীয় স্থাপনাসহ বিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত অবকাঠামো না থাকাও শিক্ষার এমন সংকটে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে।