তিনি মাত্র ১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির সদস্য হন।
Published : 05 Jul 2024, 12:24 PM
উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনে টানা চতুর্থবারের মতো বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক। কনজারভেটিভ পার্টির ডন উইলিয়ামসকে প্রায় ১৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দিনভর ভোটগ্রহণের পর গভীর রাতে আসা ফলাফলে দেখা যায়, লেবার পার্টির প্রার্থী টিউলিপ ২৩ হাজার ৪৩২ ভোট (৪৮.৩ শতাংশ) ভোট পেয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ডন উইলিয়ামস পেয়েছেন ৮ হাজার ৪৬২ ভোট (১৭.৪ শতাংশ)। আর গ্রিন পার্টির লরনা রাসেল পেয়েছেন ৬ হাজার ৫৩০ ভোট (১৩.৭ শতাংশ)।
২০১৯ সালের নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করে বিবিসি দেখিয়েছে, আসনটিতে লেবার পার্টির ভোট বেড়েছে ০.৭ শতাংশ। অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টি খুইয়েছে ৫.৮ শতাংশ ভোট। আগেরবারের তুলনায় আসনটিতে সবচেয়ে বেশি ভোট বেড়েছে গ্রিন পার্টির, ১০ শতাংশ।
জয়ের প্রতিক্রিয়ায় টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, “সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনাদের দোয়ায় আমি চতুর্থবার নির্বাচিত হলাম। আমাদের বাংলাদেশি কমিউনিটি আমাকে সব সময় সাপোর্ট করে। আমি খুব গ্রেটফুল, এইবারও ওনারা আমাকে সাপোর্ট করেছেন।
“আমি চাই যে- আমাদের আরও তিনটা বোন যে আছে-রূপা, রুশনারা, আফসানা-সবাই যেন জয়ী হয়, আমরা সবাই যেন লেবার গভর্নমেন্টে সার্ভ করতে পারি।”
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ ২০১৫ সালে লেবার পার্টি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে জয়ী হন। পরের দফায় ২০১৭ সালের নির্বাচনে তিনি পুনর্নির্বাচিত হন।
এরপর নির্ধারিত সময়ের তিন বছর আগেই ২০১৯ সালের শেষে যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচন হয়। তাতে কনজারভেটিভ পার্টির জনি লুককে ১৪ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে হারান টিউলিপ।
এবারের নির্বাচনে লেবার পার্টির বিপুল বিজয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন কিয়ার স্টারমার। নিজের আসন হলবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাসে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি যখন সমর্থকদের সামনে হাজির হন, টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিরোধী দল লেবার পার্টির এমপি হিসাবে ছায়া সরকারে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করা টিউলিপ এবার লেবার সরকারের মন্ত্রী হতে পারেন বলেও জোর আলোচনা আছে।
একদিকে পারিবারিক পরিচয়, অন্যদিকে লন্ডনের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনে প্রার্থিতার কারণে টিউলিপ সব সময়ই ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রে। ৪১ বছর বয়সী টিউলিপ সিদ্দিককে পারিবারিক রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণেই অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা ও শফিক সিদ্দিকীর মেয়ে টিউলিপ লন্ডনের মিচামে জন্মগ্রহণ করেন। টিউলিপের শৈশব কেটেছে বাংলাদেশ, ভারত ও সিঙ্গাপুরে। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পলিটিক্স, পলিসি ও গভর্মেন্ট বিষয়ে তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গ্রেটার লন্ডন এবং সেইভ দ্য চিলড্রেনের সঙ্গে কাজ করেন টিউলিপ, যিনি মাত্র ১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির সদস্য হন। ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেট নেতা বারাক ওবামার প্রচারাভিযানেও অংশ নেন।
২০১০ সালে ক্যামডেন কাউন্সিলে প্রথম বাঙালি নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হন টিউলিপ। ২০১৩ সালের জুলাইয়ে স্থানীয় পার্টির সদস্যদের ভোটে টিউলিপ তৎকালীন হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে লেবার পার্টির হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার টিকেট পান।