আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান গোষ্ঠী নারী ও মেয়েশিশুদের ওপর যে নিপীড়ন চালাচ্ছে তা মানবতা-বিরোধী অপরাধের সামিল হয়ে থাকতে পারে বলেই মনে করছে জাতিসংঘ।
জেনিভার মানবাধিকার পরিষদে সোমবার জমা দেওয়া জাতিসংঘ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এমন কথা।
২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। আফগানিস্তানে মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর এই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক রিচার্ড বেনেট।
এতে দেখা গেছে, নারী ও মেয়েদের প্রতি তালেবানের আচরণ লিঙ্গভেদে বৈষম্য বা নিপীড়নের সমতুল্য, যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে বেনেট বলেন, তালেবানের ইচ্ছাকৃত এবং হিসাব-নিকাশ করে নেওয়া নীতিতে নারী ও মেয়েদের মানবাধিকার প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। তারা জনজীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। তালেবানের এই নীতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লিঙ্গভেদে নিপীড়নের অপরাধের সামিল বলা যেতে পারে; যার কারণে তালেবান কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহিতার মুখে দাঁড় করানো যায়।
তিনি বলেন, তালেবানকে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের একটি কঠোর বার্তা পাঠানো উচিত যে, “নারী ও মেয়েদের প্রতি এমর ভয়ঙ্কর আচরণ ধর্মসহ যে কোনও ভিত্তিতেই অন্যায় এবং অসহনীয়। নারীদের ওপর এমন কড়াকড়ি সামগ্রিকভাবে গোটা জনসংখ্যার ওপরই দীর্ঘমেয়াদি এবং বিপর্যয়কর ফল বয়ে আনবে।”
২০২১ সালে তালেবানগোষ্ঠী কাবুলের ক্ষমতায় আসার পর মারাত্মকভাবে নারীদের স্বাধীনতা এবং অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা উচ্চ বিদ্যালয় এমনকী বিশ্ববিদ্যালয়েও যেতে পারে না।
আফগানিস্তানের সরকারি চাকরিজীবী নারীদের অধিকাংশই চাকরি হারিয়েছেন। নারীদের বিদেশভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তালেবান; দেশের ভেতরও কোথাও যাওয়ার বেলায় সঙ্গে স্বামী-ছেলে বা পুরুষ কোনো আত্মীয়ের সঙ্গে বের হওয়া বাধ্যতামূলক করেছে।
সাম্প্রতিক এক নির্দেশনায় পার্ক, বিনোদন কেন্দ্র এমনকী বাড়ির বাইরে যাওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তালেবান।