যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া যদি পারমাণবিক অস্ত্র হামলা চালায় তবে উত্তর কোরিয়া কীভাবে জবাব দেবে তার কৃত্রিম মহড়া দেখলেন দেশটির নেতা কিম জং উন।
গত বছরই নিজেদেরকে পরমাণু অস্ত্র শক্তিধর দেশ বলে ঘোষণা করেছিলেন কিম। দেশটির একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা স্পষ্টই বলে দিচ্ছে, ওই অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের কাজ দেশটি বেশ জোরেশোরেই করছে।
রোববারও দেশটি কোরিয়া উপদ্বীপের পূর্ব উপকূলের সাগরে স্বল্পপাল্লার একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
এদিকে, উত্তরের এভাবে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং তাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগের বড় কারণ হয়ে উঠেছে।
উত্তর কোরিয়ার বাড়তে থাকা হুমকি মোকাবেলায় দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী গত সপ্তাহের শুরুতে ‘ফ্রিডম শিল্ড ২৩’ নামে ১১ দিনের যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে।
এ বছরের মহড়াটি দুই মিত্র দেশের মধ্যে হওয়া সর্ববৃহৎ সামরিক মহড়া বলে জানিয়ছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এ মহড়া নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে আসছে উত্তর কোরিয়া। প্রতিপক্ষকে হুঁশিয়ারি করতে মহড়া চলাকালে দুইটি ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণও করেছে তারা।
সোমবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, যেসব মিত্ররা সামরিক মহড়ার মাত্রা বৃদ্ধি করেছেন তাদের জন্য পরমাণু যুদ্ধের কৃত্রিম ওই মহড়া সতর্কবার্তা।
শনিবার ও রোববার ওই কৃত্রিম মহড়া অনুষ্ঠিত হয় বলেও জানায় কেসিএনএ। বলা হয়, ‘‘ওই মহড়ার লক্ষ্য প্রকৃত যুদ্ধের জবাব দেওয়ার জন্য আমাদের দৃঢ় ইচ্ছার প্রদর্শণ এবং আগ্রাসনের জন্য সামরিক মহড়ার প্রসার ঘটানো শত্রুদের কাছে একটি শক্তিশালী সতর্কবার্তা প্রেরণ।”
কৃত্রিম ওই মহড়ায় নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড নিয়ে একটি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ৮০০ কিলোমিটার উড়ে গিয়ে একটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনে কৌশলগত পরমাণু হামলা চালায়।
কেসিএনএ প্রকাশিত খবরের সঙ্গে কিম নিজে কৃত্রিম ওই মহড়া দেখছেন এমন ছবি জুড়ে দেওয়া হয়, সঙ্গে আবারও তার কিশোরী মেয়ে।
কৃত্রিম মহড়ার পর কিম বলেন, এই মহড়া তার দেশের সেনাবাহিনীর যুদ্ধ সক্ষমতার উন্নয়ন ঘটাবে।
তিনি তার সেনাবাহিনীকে যে কোনো সময় ‘তাৎক্ষণিক এবং অপ্রতিরোধ্য পারমাণবিক পাল্টা হামলা চালানোর’ জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়ার বিরুদ্ধে আগ্রাসনের পথে শত্রুদের পদক্ষেপ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে উত্তর কোরিয়াকে নিজেদের পারমাণবিক যুদ্ধ প্রতিরোধের সক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে।”
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও প্রতিবেশী দেশের পরমাণু অস্ত্র প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতি সাধনের কথা স্বীকার করা হয়। তবে উত্তর কোরিয়া কী ধরনের অগ্রগতি সাধন করছে সে বিষয়ে কিছু বলেননি দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে বাড়তে থাকা হুমকি মোকাবেলা করতে নিজেদের অতীত তিক্ততা ভুলে সম্পর্ক উন্নয়নে মনযোগী হয়েছে দুই প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান।