একজন নিরাপরাধ মানুষের বছরের পর বছর জেল খাটা এবং পুরো পরিবার অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করার এই ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে।
Published : 23 Feb 2025, 09:00 PM
ত্রিশ বছর ধরে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এসেছেন গর্ডন কর্ডেইরো। কিন্তু হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত এই ব্যক্তির কথায় কান দেয়নি কেউ। ফলে জেলের চার দেওয়ালেই কর্ডেইরোকে কাটাতে হয়েছে জীবনের অর্ধেকেরও বেশি সময়।
অবশেষে বিচারকের মুখে কর্ডেইরো শুনতে পেলেন, তিনি নির্দেোষ। পেলেন মুক্তিও। গর্ডন কর্ডেইরো যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই রাজ্যের বাসিন্দা। গত শুক্রবার ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন হনুলুলুর একটি আদালতে।
সেদিন রায় শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন কর্ডেইরো। নিজের কানকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তিনি। রায় ঘোষণার দিনটিকে ‘ফ্রিডম ফ্রাইডে’ আখ্যা দেন কর্ডেইরো।
সিএনএন জানায়, ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মাউই দ্বীপে টিমোথি ব্লেইজডেল হত্যা মামলায় জেল খাটছিলেন কর্ডেইরো। মাদক ব্যবসা ডাকাতির ঘটনায় খুন হন ব্লেইজডেল। ওই মামলার সন্দেহভাজন ছিলেন কর্ডেইরো।
হত্যা মামলার প্রথম শুনানিতে জুরি বোর্ড দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছিল। মাত্র একজন বিচারক তাকে দোষী সাব্যস্ত করার পক্ষে ভোট দেন। কিন্তু পরে তাকে খুন, ডাকাতি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে প্যারোলের সুযোগ ছাড়াই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে কর্ডেইরোর মামলা গ্রহণ করে হাওয়াই ইনোসেন্স প্রজেক্ট। ইনোসেন্স প্রজেক্ট তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, অপরাধস্থল থেকে পাওয়া বিভিন্ন জিনিসের কয়েকবার ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছে।
এ থেকে পাওয়া নতুন প্রমাণে দেখা গেছে, কর্ডেইরো ঘটনাস্থলের কোথাও উপস্থিতই ছিলেন না। আর কর্ডেইরোর আইনজীবীদের অভিযোগ, তাদের মক্কেলকে ফাঁসানো হয়েছে। মামলার জন্য পুলিশ কয়েদিদের বয়ানের ওপর ভরসা করেছেন।
ওই কয়েদিদেরকে সাজা কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে অর্থের বিনিময়ে কর্ডেইরো হত্যা করেছেন- এমন বানোয়াট বয়ান দেওয়ানো হয়। ফলে দোষী সাব্যস্ত হয়ে যান কর্ডেইরো। আর তার পরিবারের জন্য ৩০টি বছর পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে।
এখন কর্ডেইরোর ৫১ বছর বয়স। মুক্তির পরই তিনি মাউই দ্বীপের জেলের বাইরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাকে কারামুক্ত করতে যারা কাজ করেছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানান।