গবেষণায় দেখা গেছে, ওয়েনাড়ে দৈনিক মৌসুমি বৃষ্টিপাত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ১০ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
Published : 14 Aug 2024, 02:56 PM
মানব সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনে ১০ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠা ভারি বৃষ্টি ভারতের কেরালা রাজ্যের প্রাণঘাতী ভূমিধসের কারণ বলে সিদ্ধান্ত টেনেছেন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল।
৩০ জুলাই ভোরে ব্যাপক ভূমিধসে কেরালার পাহাড়ি জেলা ওয়েনাড়ের কয়েকটি গ্রামের তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। ২০১৮ সালে বন্যায় ৪০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর পর এটি ছিল ওয়েনাড়ে ঘটা সবচেয়ে প্রাণঘাতী দুর্যোগ।
এই ভূমিধসের কারণ নিয়ে গবেষণা করে বুধবার তার ফলাফল প্রকাশ করেছে ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীটি চরম আবহাওয়ার ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করে।
তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, ওয়েনাড়ে দৈনিক মৌসুমি বৃষ্টিপাত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ১০ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
ভূমিধসে ব্যাপক হতাহতের জন্য অপ্রত্যাশিত ভারি বৃষ্টিপাতকে দায় দিয়েছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলে পূর্ববর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ৫৭২ মিলিমিটার (২৩ ইঞ্চি) বৃষ্টি হয়, আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ২০৪ মিলিমিটার (৮ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হতে পারে বলা হলেও হয়েছে তার দ্বিগুণেরও বেশি।
গবেষণা ফলাফলে গবেষকরা বলেছেন, বিশ্ব যদি জীবাশ্ম জ্বলানীর ব্যবহার থেকে সরে না আসে আর বৈশ্বিক উষ্ণতা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যায় তাহলে কেরালার একদিনের বৃষ্টি বিস্ফোরণ আরও ৪ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হয়ে আসবে।
“এই গবেষণায় পাওয়া জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বৃষ্টিপাতের বৃদ্ধি ভবিষ্যতে সম্ভাব্য ভূমিধসের সংখ্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে,” বলেছেন তারা।
ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্যোগ রোধে বন উজাড় এবং খনন হ্রাস করা, বিপজ্জনক ঢালে ঝুঁকি কমানোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং দুর্বল এলাকা ধরে রাখার জন্য কাঠামো নির্মাণ করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
এর আগে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ রয়টার্সকে বলেছিলেন, ভূমিধসের আগে বেশ কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাতের কারণে মাটি নরম হয়ে গিয়েছিল, এর পাশাপাশি রাজ্যটিতে অতি উন্নয়ন ও অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন সম্ভবত ওই দুর্যোগের অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করেছে।
আরও পড়ুন: