গত মাসে ইসরায়েলের পার্লামেন্টে একটি আইন পাস হয়। যে আইনের বলে দেশটির সরকার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বিবেচনায় চাইলে যেকোনো বিদেশি সম্প্রচার মাধ্যমকে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে পারে।
Published : 05 May 2024, 08:12 PM
কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আল জাজিরা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে এমন অভিযোগে যত দিন গাজা যুদ্ধ চলবে ততদিন দেশটিতে টেলিভিশন স্টেশনটির সম্প্রচার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা।
রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স এ এক পোস্টে নেতানিয়াহু তার মন্ত্রিসভার এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, “ইসরায়েলে উস্কানিমূলক টেলিভিশন স্টেশন আল জাজিরা বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
মন্ত্রিসভায় ভোটের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে জানালেও কবে ভোট হয়েছে সে বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দেননি।
ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকেও রোববার এক বিবৃতিতে বলা হয়, দেশটির যোগাযোগমন্ত্রী মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত ‘দ্রুত কার্যকরের’ জন্য একটি নির্দেশনামায় সই করেছেন। তবে অন্তত একজন আইনপ্রণেতা বলেছেন, আল জাজিরা আদালতের মাধ্যমে ওই সিদ্ধান্ত আটকে দেওয়ার চেষ্টা করবে।
সরকারি বিবৃতিতে যেসব ব্যবস্থার কথা বলা হয় তার মধ্যে রয়েছে, ইসরায়েলে আল জাজিরার কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়া, সম্প্রচার সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা, কেবল লাইন এবং স্যাটেলাইট কোম্পানি থেকে চ্যানেলটি বাদ দেওয়া এবং তাদের ওয়েবসাইট ব্লক করা।
কাতার সরকারের তহবিলে পরিচালিত হয় আল জাজিরা। তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের তীব্র সমালোচনা করেছে এবং যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ২৪ ঘণ্টা এ সংক্রান্ত খবর প্রচার করছে।
গত মাসে ইসরায়েলের পার্লামেন্টে একটি আইন পাস হয়। যে আইনের বলে দেশটির সরকার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বিবেচনায় চাইলে যেকোনো বিদেশি সম্প্রচার মাধ্যমকে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে পারে।
ইসরায়েলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশের পর এখন পর্যন্ত আল জাজিরা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। যদিও তারা এর আগে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্য তাদের হুমকি হয়ে ওঠার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছিল, তাদের সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া অর্থ হবে তাদের চুপ করিয়ে দেওয়া।
নতুন আইনে নেতানিয়াহু এবং তার নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ইসরায়েলে ৪৫ দিনের জন্য আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ করে দিতে পারবে এবং প্রয়োজন মনে করলে মেয়াদ আরও বাড়াতে পারবে।
হামাসের রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয় দেওয়া কাতার গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই একটি যুদ্ধবিরতি চুত্তিতে উপনীত হওয়া এবং হামসের হাত থেকে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত করে নিয়ে আসা সহ সর্বপরি আলোচনার মাধ্যমে গাজা যুদ্ধ অবসানের পথ খুঁজে বের করার চেষ্টায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।