২০০৮ সালের নভেম্বরে মুম্বাইয়ের তাজ হোটেল, রেল স্টেশন ও ইহুদি কেন্দ্রে চালানো তিন দিনের ভয়াবহ ওই হামলা ১৬৬ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল।
Published : 14 Feb 2025, 02:18 PM
ভারতের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র মুম্বাইয়ে ১৬ বছর আগে চালানো জঙ্গি হামলার এক সন্দেহভাজনকে নয়া দিল্লির হাতে তুলে দিতে রাজি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
২০০৮ সালের নভেম্বরে মুম্বাইয়ে তিনদিনের হামলা ১৬৬ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প মুম্বাই হামলার সন্দেহভাজন তাহাউর রানাকে ভারতের কাছে হস্তান্তরে তার প্রশাসনের সম্মতির কথা জানান।
“আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, আমার প্রশাসন এক কুচক্রী, বিশ্বের অন্যতম খারাপ একটি লোক, যার সঙ্গে ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার যোগ আছে, তাকে ভারতে বিচারের মুখোমুখি করতে হস্তান্তরের অনুমোদন দিয়েছে। বিচারের মুখোমুখি হতে এখন তাকে ভারতে ফিরতে হচ্ছে,” হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের ট্রাম্প এমনটাই বলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
১৬ বছর আগে মুম্বাইয়ের হোটেল, রেল স্টেশন ও ইহুদি কেন্দ্রে ওই হামলার জন্য নয়া দিল্লি পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বাকে দায়ী করছে। পাকিস্তান সরকার এই হামলার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে আসছে।
ট্রাম্প তার বিবৃতিতে সন্দেহভাজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করলেও পরে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে তার নাম তাহাউর রানা বলে জানানো হয়। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত রানা কানাডারও নাগরিক, তিনি শিকাগোতে ব্যবসা করতেন।
যৌথ বিবৃতিতে ভারতে জঙ্গি হামলায় অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনতে এবং পাকিস্তান যেন তাদের ভূখণ্ডকে জঙ্গিবাদী কার্যক্রমে ব্যবহার হতে না দেয় তা নিশ্চিতে ইসলামাবাদের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে।
গত মাসের শেষের দিকে ভারতে প্রত্যর্পণ ঠেকাতে রানার রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেয় মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। লস্কর-ই-তৈয়বা গোষ্ঠীকে সহযোগিতা করার অভিযোগে রানাকে আগে মার্কিন ফেডারেল কারাগারেও পাঠানো হয়েছিল।
বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কার্যকলাপ নিয়েও প্রশ্ন করা হয়।
ভারত ভেঙে স্বাধীন ‘খালিস্তান’ প্রতিষ্ঠার দাবিতে সংগ্রাম চালিয়ে চাওয়া এই শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নয়া দিল্লি তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে।
এ নিয়ে প্রশ্নে ট্রাম্প সরাসরি কোনো উত্তর না দিলেও বলেন, অপরাধ দমনে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করছে।
২০২৩ সাল থেকে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়। শিখদের টার্গেট করে করা এক চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে এতে জড়িত সন্দেহে ভারতের সাবেক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগও আনে ওয়াশিংটন।
পরে নয়া দিল্ল জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।