Published : 28 Apr 2025, 06:24 PM
দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ বালুচর স্যান্ডি কে চীন দখলে নিয়েছে বলে যে খবর ছড়িয়েছে তা সত্য নয় বলে দাবি করেছে ফিলিপিন্স।
জনমানবহীন এলাকাটিতে ফিলিপিন্সের নিরাপত্তাকর্মীরা নামার পর সেখানে চীনের কোনো ধরনের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি, বলেছে তারা।
এর আগে শুক্রবার চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি জানায়, সার্বভৌমত্ব নিশ্চিতে পরিচালিত সামুদ্রিক অভিযানের অংশ হিসেবে তাদের কোস্টগার্ড স্যান্ডি কে-তে নেমেছিল।
তবে বালুচরটি দখলে নেওয়া হয়েছে, এমন দাবি সিসিটিভি করেনি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সিসিটিভিতে প্রকাশিত ছবিতে কালো যুদ্ধপোশাক পরিহিত কোস্ট গার্ডের ৪ সদস্যকে স্যান্ডি কে-তে জাতীয় পতাকা ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। বড় একটি ডিঙ্গিতে চেপে ওই চারজন বালুচরটিতে নেমেছিলেন।
সোমবার ফিলিপিন্সের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জনাথন মালায়া বলেন, চীন স্যান্ডি কে দখলে নিয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের এমন প্রতিবেদন সত্য নয়, কারণ ফিলিপিন্সের পাঠানো দল বালুচরটি ঘুরে এসেছে এবং সেখানে কাউকে পায়নি।
“আমরা এখানে ওই গুজব মিথ্যা প্রমাণে এবং আমরা যে পাগাসা কে হারাইনি জনসাধারণকে তা নিশ্চিত করতে এসেছি,” চীনের দখল নিয়ে হওয়া প্রতিবেদনগুলোকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ অ্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন মালায়া।
ফিলিপিন্স স্যান্ডি কে বালুচরকে পাগাসা কে নামে ডাকে।
দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ অনেক এলাকা নিয়ে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চীন ও মার্কিন মিত্র ফিলিপিন্সের মধ্যে সম্পর্কে ব্যাপক টানাপড়েন দেখা যাচ্ছে। নিজেদের দাবি করা এলাকা অন্যদের দখলে যেন না যায় তা নিশ্চিতে চীন ওই এলাকায় কোস্টগার্ডের বিশাল বহর মোতায়েন করে রেখেছে।
স্যান্ডি কে থিতু দ্বীপের সন্নিকটে অবস্থিত। স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের যে ৯টি ছোটখাট দ্বীপ ও বালুচর ফিলিপিন্সের দখলে আছে তার মধ্যে থিতু দ্বীপটিই সবচেয়ে বড় এবং কৌশলগতভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন অংশে মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান ও চীনেরও উপস্থিতি আছে।
রোববার ফিলিপিন্স জানিয়েছিল, তারা থিতু দ্বীপের কাছে চীনা কোস্টগার্ড ও মিলিশিয়া নৌযানের ‘অবৈধ উপস্থিতি’ লক্ষ্য করেছে।
পরদিন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা দক্ষিণপূর্ব এশীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে করা ২০০২ সালের দক্ষিণ চীন সাগরের আচরণবিধি সংক্রান্ত যৌথ ঘোষণার ‘গুরুত্ব দৃঢ়ভাবে সমুন্নত রাখতে’ বদ্ধপরিকর।
বেইজিং যে এই ঘোষণা মেনে চলতে বাধ্য, মালায়া আগেই তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন।
“চীনের পদক্ষেপের লক্ষ্য ছিল ফিলিপিন্সের অবৈধভাবে সামুদ্রিক রিফ দখল এবং অন্যান্য অনুপ্রবেশ ও উসকানিমূলক কার্যক্রমের মতো বেআইনি কর্মকাণ্ড মোকাবেলা করা, জাতীয় ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব দৃঢ়ভাবে রক্ষা করা, পাশাপাশি (স্যান্ডি কে-র মতো প্রবালপ্রাচীর) যাতে অনাবাসিক এবং অবকাঠামোবিহীন থাকে তা নিশ্চিত করা,” বলেছেন চীনা মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন।
এমন এক সময়ে বেইজিং ও ম্যানিলার মধ্যে এ কথার লড়াই চলছে যখন তারা একে অপরের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি, অপতথ্য ছড়ানোর অভিযোগ আনছে, যা দুই পক্ষের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়াচ্ছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট গোষ্ঠী আগামী মাসে হতে যাওয়া মধ্যবর্তী নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে পারে, নিরাপত্তা পরিষদের এমন অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চলছে ফিলিপিন্সে। বেইজিং এ অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে।
দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ বালুচর স্যান্ডি কে 'দখলে নিল' বেইজিং