উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব এবং হরিয়ানা- মূলত এ তিন রাজ্যের কৃষকরাই এ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।তাদেরকে ঠেকাতে প্রশাসনও উঠেপড়ে লেগেছে।
Published : 13 Feb 2024, 03:57 PM
ভারতে কেন্দ্র সরকারের কাছে নিজেদের দাবিদাওয়া পৌঁছে দিতে মঙ্গলবার ‘দিল্লি চলো’ যাত্রা শুরু করেছেন কৃষকরা। উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব এবং হরিয়ানা- মূলত এ তিন রাজ্যের কৃষকরাই এ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। প্রায় সাড়ে ৩০০টি ছোট-বড় কৃষক সংগঠন এতে যোগ দিচ্ছে।
বিক্ষোভকারী কৃষকদের ঠেকাতে প্রশাসনও উঠেপড়ে লেগেছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ। শম্ভু সীমানা কৃষকদের দিল্লি চল কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ মিলনস্থল। পঞ্জাব ও হরিয়ানার মধ্যবর্তী শম্ভু সীমান্তে জড়ো হওয়া কৃষকদের উপর পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে।
হরিয়ানা হয়ে কৃষকদের দিল্লি পৌঁছানো ঠেকাতে রাজধানীকে দূর্গের মতো সুরক্ষিত করে তোলা হয়েছে। ঘিরে ফেলা হয়েছে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে। বসানো হয়েছে কংক্রিটের বড় বড় স্ল্যাব। নতুন করে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে দিল্লির প্রতিটি সীমান্তে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জলকামান। তৈরি রাখা হয়েছে দাঙ্গা পুলিশও।
কৃষক সংগঠনগুলো যে দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে তার মধ্যে অন্যতম হল, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা দিতে হবে সরকারকে। স্বামীনাথন কমিশনের প্রস্তাব মেনে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। সেইসঙ্গে সমস্ত কৃষিঋণ মওকুফ করারও দাবি তুলেছেন বিক্ষুব্ধ কৃষকরা।
এছাড়াও, ২০২০-২১ সালের প্রতিবাদে কৃষকদের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলা খারিজের দাবি জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা। বিদ্যুৎ আইন ২০২০ বাতিল এবং লখিমপুর খেরিতে নিহত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের দাবি করা হয়েছে। সোমবার রাতে কেন্দ্র এবং কৃষক সংগঠনগুলির মধ্যে এসব বিষয় নিয়ে বৈঠক হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি।
ফলে কৃষকেরা নিজেদের সংকল্পে অটল বলেই জানিয়েছেন তাদের এক প্রতিনিধি। তার অভিযোগ, দু’বছর আগে কৃষকদের অর্ধেক দাবি মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কেন্দ্র কিছুই করেনি।
২০২০ সালেও কৃষক বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা ভারত। উত্তর ভারতের রাজ্যগুলোতে লাগাতার আন্দোলন চলে। সেই আন্দোলনের জেরে শেষ পর্যন্ত পিছু হটেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। ‘বিতর্কিত’ কৃষি বিল প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কৃষক সংগঠনগুলোও নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসে।
এবার আবার সেরকম আন্দোলনেরই পুনরাবৃত্তির আশঙ্কায় আছে ভারত সরকার।কৃষকরা শান্তিপূর্ণ ভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলেও সরকার সময় নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ তাদের। তাই আবার নতুন করে আন্দোলনে পঞ্জাব-হরিয়ানার কৃষকেরা।
আপাতত কৃষক আন্দোলন থেকে দূরে আছে সর্বভারতীয় কিষাণ সভা। তবে ইউনিওনাইটেড কিষাণ মোর্চার ব্যানারে ১৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার ভারত বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভারতের সব জাতীয় সড়ক ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছে তারা।