পিকেকে অস্ত্র তুলে নেওয়ার পর থেকে তাদের সঙ্গে তুরস্ক রাষ্ট্রের সংঘাতে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
Published : 01 Mar 2025, 08:11 PM
তুরস্কের নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দিস্তান ওয়াকার্স পার্টি (পিকেকে) যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। কারাবন্দি নেতা আব্দুল্লাহ ওজলানের নিরস্ত্রীকরণের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দলটি এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে তাদের ঘনিষ্ঠ একটি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে।
শনিবারের এই ঘোষণাকে তুরস্ক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পিকেকের ৪০ বছরের সশস্ত্র বিদ্রোহ অবসানের দিকে এক বড় পদক্ষেপ বলে বর্ননা করেছে রয়টার্স।
ওজালন বৃহস্পতিবার পিকেকে-কে তাদের অস্ত্র নামিয়ে রেখে দল ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানান। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তায়িপ এরদোয়ানের সরকার এবং বিরোধীদলীয় কুর্দিপন্থি ডিইএম পার্টি এ আহ্বানের সমর্থন জানিয়েছে।
পিকেকে ইরাকের উত্তরাঞ্চলে ঘাঁটি বানিয়ে সেখান থেকেই তাদের লড়াই পরিচালনা করছে।
যদি তাদের এ উদ্যোগ সফল হয় তাহলে ওই অঞ্চলে এর বিস্তৃত প্রভাব পড়তে পারে। ১৯৮৪ সালে পিকেকে অস্ত্র তুলে নেওয়ার পর থেকে তাদের সঙ্গে তুরস্ক রাষ্ট্রের সংঘাতে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। উদ্যোগটি সফল হলে রক্তক্ষয়ী এ লড়াই বন্ধ হবে।
এমনটি হলে তুরস্কে এরদোয়ানের জনপ্রিয়তা আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে। আর এতে তিনি তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে সেখানে উন্নয়নের ঐতিহাসিক সুযোগ পাবেন। পিকেকের বিদ্রোহের কারণে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন আর সহিংসতার কারণে ওই এলাকার অর্থনীতিও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বার্তা সংস্থা ফিরাতে প্রকাশিত বিবৃতিতে পিকেকে বলেছে, “আমরা, পিকেকের পক্ষ থেকে ওই আহ্বানের বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত আর ঘোষণা দিচ্ছি যে, আমাদের এলাকা থেকে ওই আহ্বানের প্রয়োজনীয়তা বাস্তবায়নের দিকে মনোযোগ দেবো।”
দলটি বলেছে, তারা আশা করছে আঙ্কারা ওজালানকে আরও স্বাধীনতা দিবে যেন তিনি নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিতে পারেন। তারা আরও বলেছে, এই যুদ্ধবিরতি ও নিরস্ত্রীকরণকে সফল করতে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ অবশ্যই তৈরি করতে হবে। তারা আক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত অবিলম্বে সব সহিংসতা বন্ধ রাখবে।
১৯৯৯ সাল থেকে কারাগারে থাকা ওজালনকে প্রায় পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে।
তুরস্ক ও তাদরে পশ্চিমা মিত্ররা পিকেকে-কে কালো তালিকাভুক্ত করে সন্ত্রাসী সংগঠনের তকমা দিয়ে রেখেছে। এর আগে ২০০৯ থেকে ১১ ও ২০১৩ থেকে ১৫ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির দু’টি প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল, কিন্তু সেগুলো ব্যর্থ হওয়ার পর সহিংসতা আরও বেড়ে যায়।