প্রধানমন্ত্রী হলে জ্বালানি সংকটে আশু ব্যবস্থা নেব: লিজ ট্রাস

শুধু যুক্তরাজ্য নয় বরং বিশ্ববাজারেই জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। গোটা বিশ্বে যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Sept 2022, 02:26 PM
Updated : 4 Sept 2022, 02:26 PM

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হলে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির রাশ টেনে ধরতে এক সপ্তাহের মধ্যেই একটি পরিকল্পনা ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন লিজ ট্রাস।

তবে কীভাবে তিনি জ্বালানি তেলের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি মোকাবেলা করতে চান সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। শুধু যুক্তরাজ্য নয় বরং বিশ্ববাজারেই জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। গোটা বিশ্বেই যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

ওদিকে, ট্রাসের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ঋষি সুনাক বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে অতি দরিদ্রদের জন্য আরও বেশি ভাতার ব্যবস্থা করবেন।

এই দুইজনের মধ্যে একজনকে আগামী সোমবার যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ঘোষণা করা হবে। পরদিন তিনিই দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

রোববার বিবিসি’র সঙ্গে আলাপকালে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ট্রাস বলেন, জনগণ এবং দেশের অর্থনীতি উভয়ের জন্যই জ্বালানি বিল নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা ‘জরুরি’।

তিনি আরো বলেন, যুক্তরাজ্য আন্তর্জাতিকভাবে জ্বালানির মূল্যের ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় দেশে জ্বালানি সরবরাহ বাড়ানোর একটি পরিকল্পনা নিয়ে ‘হাতে হাত ধরে’ এগিয়ে যেতে আরও সমর্থন প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।

এদিকে, ঋষি সুনাক অবসরভোগী এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জ্বালানি বিল মেটাতে সরকার থেকে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন।

অর্থমন্ত্রী হিসেবে তিনি জ্বালানি বিলের উপর থেকে ভ্যাট কমানোর কথাও বলেছিলেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, এটা সামান্য হলেও সবার কাজে লাগবে।

শীতকালে জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য লোডশেডিংয়ের আশঙ্কাকেও তিনি উড়িয়ে দিতে পারছেন না বলে জানান। তিনি বলেন, পরিস্থিতি খুবই ‘গুরুতর’ এবং তা মোকাবেলায় আমাদের হাতে থাকা সবগুলো অস্ত্রই আমাদের ব্যবহার করে দেখতে হবে।

‘‘নিশ্চিতভাবেই আমরা ওই পরিস্থিতিতে পড়তে চাই না। তবে আমার মনে হয়, ওই আশঙ্কাকে উড়িয়ে না দেওয়াই দায়িত্বশীলের মত আচরণ হবে।”

জ্বালানি বিল নিয়ে পুরো দেশ অসুবিধায় পড়েছে এবং তিনি সবার সংকট সমাধান করতে পারবেন না বলেও মেনে নিয়েছেন।

ওদিকে, লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রী হতে পারলে এ মাসের শেষে দিকে একটি জরুরি বাজেট থেকে প্রায় তিন হাজার কোটি পাউন্ড কর কমিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এই কর কর্তনে ধনীরা অধিক লাভবান হবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আয়ের দিক দিয়ে শীর্ষ থাকা মানুষরা ‍অধিক কর প্রদাণ করেন। তাই অনিবার্যভাবে, যখন আপনি কর কর্তন করবেন তখন যারা বেশি কর দেন তারাই অধিক লাভবান হবেন।’’

অর্থনীতির অগ্রগতির বিষয়ে এই নেতা বলেন, ‘‘সব সময় সব কিছু পুনর্বন্টনের লেন্স দিয়ে দেখা ভুল বলেই আমি বিশ্বাস করি। কারণ, আমি যে সম্পর্কে বলছি তা হচ্ছে অর্থনীতির অগ্রগতি এবং অর্থনীতির বৃদ্ধি হলে প্রত্যেকে উপকৃত হবে।

‘‘গত ২০ বছরে ধরে অর্থনৈতিক বিতর্কগুলোতে বন্টন সম্পর্কিত আলোচনাই প্রাধান্য পেয়েছে। এবং তাতে যা ঘটেছে তা হল, আমরা তুলনামূলকভাবে কম প্রবৃদ্ধি পেয়েছি।”

ট্রাসের কর কর্তনের প্রস্তাবের সঙ্গে অবশ্য সম্পূর্ণ একমত হয়ে পারেননি সুনাক। তিনি কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, মূল্যস্ফীতি কমে না আসা পর্যন্ত কর কর্তন নিয়ে অপেক্ষা করা উচিত।

ট্রাস বা সুনাক কারো বক্তব্যেই সন্তুষ্ট হতে পারেননি বিরোধী লেবার পার্টির ছায়া অ্যাটর্নি-জেনারেল এমিলি থর্নবেরি। তিনি বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে নেতৃত্বে যাওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে। অথচ কোনও প্রার্থীই তাদের জ্বালানি পরিকল্পনা নিয়ে ‘সুনির্দিষ্ট জবাব’ দিতে পারেনি। এটা ‘নজিরবিহীন’।

তিনি আরও বলেন, বাড়তে থাকা বিল পরিশোধে মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষদের রীতিমত লড়াই করতে হচ্ছে। তারা সাহায্যের জন্য ‘মরিয়া’ হয়ে আছে।