ঝড়ের মুখে পড়ে গত সোমবার বায়েসিয়ান নামের ইয়টটি ডুবে যাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে একজনের মৃত্যু এবং ছয়জন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল।
Published : 22 Aug 2024, 07:19 PM
ইতালির সিসিলি দ্বীপের উপকূলে একটি বিলাসবহুল প্রমোদতরী (ইয়ট) ডুবে যারা নিখোঁজ হয়েছিলেন, তাদের কয়েকজনের মৃতদেহের মধ্যে মিলল ব্রিটিশ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও ধনকুবের মাইক লিঞ্চের লাশ।
ঝড়ের মুখে পড়ে গত সোমবার বায়েসিয়ান নামের ইয়টটি ডুবে যাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে একজনের মৃত্যু এবং ছয়জন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল।
বুধবার প্রমোদতরীটির ধ্বংসাবশেষ থেকে চার মৃতদেহ উদ্ধার হয় এবং পঞ্চম আরেকটি মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায় তরীর ভেতরে। সেটিই মাইক লিঞ্চের লাশ বলে জানানো হচ্ছে ইতালির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে। লাশটি বৃহস্পতিবার সকালে তীরে নিয়ে আসা হয়।
এর মধ্য দিয়ে নিখোঁজ পাঁচজনের মৃতদেহ মিললেও লিঞ্চের ১৮ বছর বয়সী মেয়ে হান্নার খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি।
পানির নিচে ৫০ মিটার গভীরে প্রমোদতরীটির ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে দমকল বাহিনী। ডুবুরিরা এখনও নিখোঁজদের সন্ধান করছে।
২২ জন যাত্রী ও ক্রু বহনকারী ৫৬ মিটার দীর্ঘ (১৮৪ ফুট) সুপারইয়ট বায়েসিয়ান পালেরমোর কাছে পোর্টিসেলো বন্দরে নোঙর করা হয়েছিল। ঝড় শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ঢেউয়ের কবলে পড়ে সেটি অদৃশ্য হয়ে যায়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, লিঞ্চের মরদেহটি একটি নীল বডি ব্যাগে তীরে আনা হয়েছে। পরে সেটি অ্যাম্বুলেন্সে করে কাছের হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়।
মাইক লিঞ্চ সফটওয়্যার কোম্পানি অটোনমির সহ-প্রতিষ্ঠা ছিলেন। যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর একটি হয়ে উঠেছিল এই কোম্পানি।
পরে কোম্পানিটি কিনে নেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি জায়েন্ট হিউলেট-প্যাকার্ড। ২০১১ সালে হিউলেট-প্যাকার্ডের কাছে স্বায়ত্তশাসনে কোম্পানি বিক্রির ফলে তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগও উঠেছিল।
লিঞ্চ ও তার মেয়ে হান্না ছাড়াও জুডি এবং মরগান স্ট্যানলি ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা জোনাথন ব্লুমার, ক্লিফোর্ড চান্সের আইনজীবী ক্রিস মরভিলো এবং তার স্ত্রী নেদা মরভিলো নিখোঁজ হয়েছিলেন।
তবে ভাগ্যক্রমে লিঞ্চের স্ত্রী-সহ তরীতে থাকা পনেরো জন নিরাপদে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন।
দমকল বাহিনী জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞ উদ্ধারকারীরা গত তিন দিন ধরে ডুবে যাওয়া তরীর ভেতরে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন।
তবে ডুবুরিরা যে জায়গাগুলোতে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন, সেখানকার পানির গভীরতার কারণে উদ্ধার অভিযান চালানো কঠিন হচ্ছে।
সুপারইয়ট বায়েসিয়ান ডুবে যাওয়া বিশেষজ্ঞদের বিস্মিত করেছে কারণ, এটি নির্মাণ করেছিল শীর্ষ ইতালীয় নির্মাতা কোম্পানি পেরিনি। তাই এটি অনেক নিরাপদ বলে মনে করা হয়েছিল।
টারমিনি ইমেরেসের তদন্তকারীরা যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন। তবে ইয়টের ক্যাপ্টেন এবং ক্রুরা প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি।
ঘটনাটি ইয়টের কোম্পানির খ্যাতি ক্ষুন্ন করেছে, ডুবে যাওয়ার পর থেকে এর শেয়ার ২দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।