তাদের এক মাস থেকে তিন মাসের জন্য অবস্থানের সুযোগ দেওয়া হতে পারে।
Published : 09 Mar 2025, 01:11 PM
অবৈধ অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে ধরা পড়া ১১২ জনকে আরো অন্তত এক মাসের জন্য আশ্রয় দিতে সম্মত হয়েছে পানামা।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক আব্রিগো শুক্রবার এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেছেন, ওই ব্যক্তিদের বেশিরভাগই এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের নাগরিক। তারা সাময়িকভাবে ৩০ দিন অবস্থানের অনুমতি পাবেন, ওই মেয়াদ ৯০ দিন পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।
আব্রিগো বলেছেন, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা তাদের দেশে ফিরতে সহায়তা করার প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু ওই ব্যক্তিরা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
সিএনএন লিখেছে, অবৈধ অভিবাসী খেদাও অভিযানের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পানামায় পাঠানো প্রায় ৩০০ জনের মধ্যে ছিলেন ওই ১১২ জন। এ অভিযানে সহায়তা করতে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোকে চাপে রেখেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
সিএনএন এর আগে এক প্রতিবেদনে দেখিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র যাদের পানামায় পাঠিয়েছে, তাদের মধ্যে এমন আশ্রয়প্রার্থীও আছেন, যারা বলেছেন, নিজের দেশে সহিংসতা বা নিপীড়নের মুখে তারা পালিয়ে এসেছেন।
ওই ১১২ জনের মধ্যে ৯ জন আফগানিস্তানের, ১২ জন চীনের নাগরিক, ২৪ জন ইরানের এবং দুজন রাশিয়ার নাগরিক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আব্রিগো।
এই দলের অনেককে দুর্গম দারিয়েন জঙ্গলের কাছে একটি অস্থায়ী শিবিরে রাখা হয়েছে।
ইরানি আশ্রয়প্রার্থী আর্টেমিস ঘাসেমজাদেহসহ ১০ শরণার্থীর আইনজীবী আলী হেরিসচি শুক্রবার সিএনএনকে বলেন, তারা ক্যাম্পে রয়েছেন এবং চলে যাওয়ার জন্য কাগজপত্রে স্বাক্ষর করতে ভয় পাচ্ছেন, কারণ শর্তগুলো এখনো অস্পষ্ট।
ঘাসেমজাদেহ খ্রিস্টান হিসেবে ধর্মান্তরিত হওয়ার পর নিপীড়নের ভয়ে ইরান থেকে পালিয়ে এসেছিলেন। দেশে ফিরতে বাধ্য করা হলে জীবন হুমকিতে পড়েবে ভেবে তিনি শঙ্কিত।
গেল ফেব্রুয়ারিতে সিএনএনকে পাঠানো খুদে বার্তায় তিনি বলেন, “আমরা বিপদে আছি। আমরা অলৌকিক ঘটনার জন্য অপেক্ষা করছি।”
মানবাধিকার বিষয়ক আন্তঃআমেরিকান কমিশনে যারা পানামার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন, সেই আইনজীবীরা শুক্রবারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে তারা জোর দিয়ে বলেছেন, ৯০ দিনের সময়সীমা শেষে আশ্রয়প্রার্থীদের প্রত্যাবাসন করা উচিত হবে না।
মামলার একজন আইনজীবী এবং সহ-পরামর্শদাতা সিলভিয়া সেরনা রোমান এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আজ, আমাদের বিচারাধীন মামলার প্রেক্ষাপটে পানামানিয়ান সরকার তাদের গতিপথ পরিবর্তন করেছে – তারা আমাদের মক্কেলদের নির্বাসন না দেওয়ার এবং তাদের যোগাযোগহীন ও বেআইনি আটকাবস্থা থেকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
“যারা নিপীড়নের ভয়ে নিজেদের দেশে ফিরতে পারছে না, আমাদের সেই সব মক্কেলদের সরকার কোনো সমাধান না দেওয়ায় আমরা প্রাথমিকভাবে উদ্বিগ্ন।”
আইনজীবীদের বিবৃতি এবং সিএনএনের দেখা একটি সংক্ষিপ্ত নথি অনুসারে, নির্বাসিতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু এবং কয়েক ডজন মানুষ রয়েছে- যারা তাদের ধর্ম বা তাদের যৌন বা লিঙ্গ পরিচয়ের কারণে নিপীড়নের আশঙ্কা করছে।
সিএনএন লিখেছে, শুরুতে ওইসব অভিবাসীদের পানামা সিটির একটি হোটেলে আটকে রাখা হয়েছিল। কয়েকজনকে দূরবর্তী বন্দিশিবিরে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, সেখানে ওষুধ পাওয়া কঠিন, ইন্টারনেট সেবার সুযোগ সীমিত।
পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো অবশ্য দাবি করে আসছেন, আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকার লঙ্ঘন কিংবা আটকে রাখার মত কোনো ঘটনাই পানামায় ঘটেনি।