দেশটির আইনপ্রণেতারা ব্যাপকভাবে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন, এতে নিয়োগ পাওয়ার তিন মাসের মাথায় প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হন।
Published : 05 Dec 2024, 01:08 PM
পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারিয়েছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ে, এতে তার সরকারেরও পতন হয়েছে।
বুধবার দেশটির আইনপ্রণেতারা ব্যাপকভাবে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন, এতে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ নিয়োগ দেওয়ার তিন মাসের মাথায় বার্নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হন। ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তির রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বার্নিয়ের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে কট্টর ডানপন্থি ও বামপন্থি আইপ্রণেতারাও সমর্থন দেন, এতে প্রস্তাবটির পক্ষে ৩৩১ ভোট পড়ে।
এই ভোটাভুটির পর বার্নিয়েরকে এখন তার ও তার সরকারের পদত্যাগপত্র প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর কাছে পেশ করতে হবে। এর মাধ্যমে ১৯৫৮ সাল থেকে শুরু হওয়া ফ্রান্সের পঞ্চম রিপাবলিকে সবচেয়ে স্বল্পস্থায়ী হল তার তিন মাস মেয়াদের সংখ্যালঘু সরকার।
ফ্রান্সের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালেই বার্নিয়ে তার ও তার সরকারের পদত্যাগপত্র জমা দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বার্নিয়ে পার্লামেন্টে কোনো চূড়ান্ত ভোট ছাড়াই অজনপ্রিয় একটি বাজেটের অংশ বিশেষ সাংবিধানিক ক্ষমতা ব্যবহার করে পাস করিয়ে নেন। পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই এর বিরুদ্ধে ছিল। প্রস্তাবিত বাজেটে ৬ হাজার কোটি ইউরো কর বাড়িয়ে এবং ব্যয় কাটছাঁট করে ফ্রান্সের বাড়তে থাকা বাজেট ঘাটতি কমানো লক্ষ্য নিয়েছিল। নভেম্বরে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, দেশটির ৬৭ শতাংশ মানুষ এই বাজেটের বিরোধিতা করেছে।
এই বাজেট পাস করাতে পার্লামেন্টে ভোটাভুটি এড়িয়ে বিশেষ সাংবিধানিক ক্ষমতা ব্যবহার করেই বার্নিয়ে অনাস্থা ভোটের মুখে পড়ার ঝুঁকি নিয়েছিলেন। অতি বাম ও কট্টর ডানরা তাকে পার্লামেন্টের ভোটাভুটি এড়ানোর শাস্তিই দিল।
বাজেট পাস করিয়ে অনাস্থা ভোটের ঝুঁকি নিলেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী
অনাস্থা ভোটের আগে বার্নিয়ে আইনপ্রণেতাদের বলেন, পরবর্তীতে যে সরকারই আসুক বাজেট ঘাটতি ফিরে আসবে।
১৯৬২ সালে জর্জে পম্পিদুর সময় থেকে ফ্রান্সের কোনো সরকার আর আস্থা ভোটে হারেনি। জুনে মাক্রোঁ একটি আগাম নির্বাচন ডেকে ফ্রান্সের রাজনৈতিক সংকটের সূচনা করেন। ওই জাতীয় নির্বাচনে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় একক সংখ্যাগরিষ্ঠাতা কোনও দলই পায়নি।
ফলে রাজনৈতিকভাবে বড় তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে পড়ে পার্লামেন্টের জাতীয় পরিষদ। এই বিভক্তি এড়িয়ে টেকসই সরকার গঠনের চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছিল বার্নিয়েকে।
রয়টার্স বলছে, ফ্রান্স এখন গভীর রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। মাক্রোঁকে এখন অবশ্যই একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ইলিজি প্যালাস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (স্থানীয় সময়) জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন।