পুরোপুরি সেরে না উঠলেও পোপের নিউমোনিয়া নেই এবং তার অবস্থা এখন বেশ স্থিতিশীল, বলেছেন তার চিকিৎসকরা।
Published : 23 Mar 2025, 05:57 PM
কয়েক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন পোপ ফ্রান্সিস হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তার শুশ্রূষায় নিয়োজিত চিকিৎসকরা।
রোমান ক্যাথলিকদের সর্বোচ্চ এ ধর্মগুরুকে রোববার হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে, এরপর ভ্যাটিকানেও তাকে অন্তত দুই মাস বিশ্রামে থাকতে হবে, বলেছেন তারা।
বিবিসি জানিয়েছে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শ্বাসযন্ত্রে তীব্র সংক্রমণ নিয়ে ৮৮ বছর বয়সী এ পোপ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, ওই সংক্রমণের কারণে তার জোড়া নিউমোনিয়া দেখা দেয়।
ভর্তি হওয়ার পরের পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে পোপ ‘দুটি সঙ্কটকালীন পর্ব’ পার করেছেন, যখন তার ‘জীবন ঝুঁকির মধ্য দিয়ে গেছে’, বলেছেন তার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা অন্যতম চিকিৎসক ড. সার্জিও আলফিয়েরি।
পুরোপুরি সেরে না উঠলেও পোপের নিউমোনিয়া নেই এবং তার অবস্থা এখন বেশ স্থিতিশীল, বলছেন তার চিকিৎসকরা।
“আজ আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে কাল তিনি বাড়ি যাবেন,” শনিবার সাংবাদিকদের এমনটাই বলেন ড. আলফিয়েরি।
রোববার হাসপাতাল ছাড়ার আগে নিজের কক্ষের জানালা থেকে পোপ ভক্তদের আশীর্বাদ করেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ভ্যাটিকানের বাসভবনে ফেরার আগে এটাই জনসমক্ষে তার প্রথম উপস্থিতি।
জোড়া নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা সাধারণত কিছু সময়ের জন্য কণ্ঠস্বর হারিয়ে ফেলতে পারেন, বিশেষ করে বয়স্করা। পোপের ক্ষেত্রেও ‘কণ্ঠস্বর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে কিছুটা সময় লাগতে পারে’, বলেছেন আলফিয়েরি।
এর আগে শুক্রবার কার্ডিনাল ভিক্টর ফার্নান্দেজ বলেছিলেন, ‘উচ্চ প্রবাহের অক্সিজেন সবকিছু শুকিয়ে ফেলে’ এবং এই কারণে পোপকে ‘কথা বলা নতুন করে শেখা লাগবে’।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পোপের সেরে ওঠার যে গতি, তাতে শিগগিরই তিনি কাজে ফিরতে পারবেন।
শুক্রবার ভ্যাটিকান জানিয়েছিল, পোপের শ্বাস-প্রশ্বাস ও চলাফেরার ক্ষেত্রে খানিকটা উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। রাতে আর তাকে যন্ত্রপাতির সাহায্যে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হচ্ছে না, তিনি নাকের নিচে ছোট একটি টিউবের সাহায্যে অক্সিজেন নিতে পারছেন। দিনের বেলায় তাকে উচ্চ-প্রবাহের অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর গত সপ্তাহে ভ্যাটিকান পোপের একটি ছবি প্রকাশ করেছিল, যাতে হাসপাতালে চ্যাপেলে পোপকে প্রার্থনা করতে দেখা গেছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ভ্যাটিকান সিটির সেইন্ট পিটারস স্কয়ারে মাতৃভাষা স্পেনিশে বলা পোপ ফ্রান্সিসের একটি অডিও রেকর্ড বাজানো হয়েছিল। সেখানে যে বিশ্বাসী ক্যাথলিকরা তার জন্য প্রার্থনা করেছে, তাদের ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে তার কণ্ঠস্বর রুদ্ধ হয়ে আসছিল।
এক যুগ রোমান ক্যাথলিক চার্চের নেতৃত্বে থাকা ফ্রান্সিস জীবনভর নানা শারীরিক সমস্যার মধ্য দিয়ে গেছেন। ২১ বছর বয়সে তার একটি ফুসফুসের অংশবিশেষ কেটে ফেলতে হয়েছিল, যে কারণে তার সংক্রমণজনিত ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি।
২০২৩ সালের মার্চেও ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্ত হয়ে তিনি ৩ রাত হাসপাতালে ছিলেন।