বিজ্ঞানীদের প্রচলিত ধারণা ছিল, এমন বিস্ফোরণের ঘটনা থেকে প্লাটিনাম ও স্বর্ণের মতো দামী উপাদানের উৎস সম্পর্কে ধারণা মিলবে। তবে, আদতে এমন কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
Published : 13 Apr 2024, 06:42 PM
মহাকাশে শনাক্ত করা সবচেয়ে উজ্জ্বল গামা রশ্মির উৎস খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
এ অতি উজ্জ্বল রশ্মিটিকে ডাকা হচ্ছে ‘বোট’ বা ‘ব্রাইটেস্ট অফ অল টাইম’ নামে। এর খোঁজ মিলেছিল ২০২২ সালের অক্টোবরে, যা এর আগে শনাক্ত করা যে কোনও গামা রশ্মির আলোচ্ছটার চেয়ে ১০ গুণ বেশি উজ্জ্বল। আর ধারণা করা হচ্ছে, এ ধরনের ঘটনা পৃথিবীতে প্রতি দশ হাজার বছরে কেবল একবারই দেখা যায়।
গবেষকরা এখন নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের সহায়তায় নিশ্চিত হয়েছেন, এটি বিশাল কোনও তারা খসে গিয়ে পরবর্তীতে তার বিস্ফোরণের ফলাফল। এর আগ পর্যন্ত গামা রশ্মিটির বিস্ফোরণ এতটাই উজ্জ্বল ছিল যে তারা এর উৎসই নিশ্চিত করতে পারেননি।
যেহেতু সুপারনোভা নিজেই বিস্ফোরণের উৎস, তাই এ ঘটনাকে স্বাভাবিক হিসাবেই দেখা হচ্ছে।
“এটি আগের কোনও সুপারনোভার চেয়ে উজ্জ্বল নয়, ” বলেন ‘নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি’র গবেষক ও এ গবেষণার নেতৃত্বে থাকা পিটার ব্ল্যানচার্ড।
“অন্যান্য সুপারনোভার সঙ্গে সম্পৃক্ত এর চেয়ে কম শক্তিওয়ালা গামা রশ্মি বিস্ফোরণের কথা বিবেচনায় নিলে, একে স্বাভাবিকই বলা চলে।”
তবে, এ গবেষণায় একটি রহস্য উন্মোচিত হলেও একে ঘিরে আরেকটি নতুন রহস্যও তৈরি হয়েছে।
বিজ্ঞানীদের প্রচলিত ধারণা ছিল, এমন বিস্ফোরণের ঘটনা থেকে প্লাটিনাম ও স্বর্ণের মতো দামী উপাদানের উৎস সম্পর্কে ধারণা মিলবে। তবে, এমন কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এর মানে দাঁড়ায়, এ ধরনের ভারী উপাদানের উৎস কী, সেটি এখনও মহাবিশ্বের অন্যতম বড় রহস্য হয়ে আছে।
“আমরা যখন নিশ্চিত হয়েছি যে গামা রশ্মির বিস্ফোরণটি খসে যাওয়া বিশাল তারা থেকে ঘটেছে, তার মাধ্যমে মহাবিশ্বের সবচেয়ে ভারী উপাদানগুলোর গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে অনুমানমূলক পরীক্ষা চালানোর সুযোগ পেয়েছি আমরা, ” বলেন ড. ব্ল্যানচার্ড।
“আমরা এইসব ভারী উপাদানের কোনও হদিস দেখতে পাইনি। এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, বোটের মতো এমন অতি শক্তিশালী ‘জিআরবি (গামা রে বার্স্ট)’ থেকে এইসব উপাদান তৈরি হয়নি।”
“তার মানে এই নয় যে, জিআরবি এগুলো তৈরি করে না। তবে, এ ধরনের ভারী উপাদানের উৎস বোঝার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এটি। আর ভবিষ্যতে জেমস ওয়েবের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হতে পারব, বোটের মতো অনুরূপ কোনও বিস্ফোরণ এদের উৎপত্তিস্থল কি না।”
গবেষণাটির বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে ‘জেডব্লিউএসটি ডিটেকশন অফ এ সুপারনোভা অ্যাসোসিয়েটেড উইথ জিআরবি ২২১০০৯এ উইদআউট অ্যান আর-প্রসেস সিগনেচার’ শীর্ষক নতুন এক গবেষণাপত্রে, যা প্রকাশ পেয়েছে ‘নেচার অ্যাস্ট্রনমি’ জার্নালে।