মামলার নিষ্পত্তি হিসেবে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অন্তত ৩১ কোটি ডলার আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে অ্যাপলকে। এর সুষম বন্টন করলে প্রত্যেক ব্যবহারকারী পাবেন ৬৫ ডলার করে।
Published : 17 Aug 2023, 04:26 PM
আইফোনে অ্যাপলের ব্যাটারি প্রযুক্তি নিয়ে পাঁচ বছর আগে যথেষ্ট ‘জল ঘোলা’ হয়েছিল। সেই ঘটনা গ্রাহক পর্যন্ত গড়াল এতোদিনে। আইফোন ব্যাটারির কারণে সমস্যায় পড়া ব্যবহারকারীদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ শুরু হতে যাচ্ছে।
‘ব্যাটারিগেইট’ নামে পরিচিত ওই মামলায় যেসব পুরোনো আইফোন ডিভাইসের ক্রেতা যোগ দিয়েছিলেন, তারা সবাই ৬৫ ডলার করে ক্ষতিপূরণ পাবেন বলে জানিয়েছেন মামলা সংশ্লিষ্ট আইনজীবিরা।
বিতর্কের সূত্রপাত ২০১৭ সালে। সে সময় বেরিয়ে আসে অ্যাপল ইচ্ছা করেই আইফোনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ডিভাইসগুলো পুরোনো হয়ে যাওয়ার পর এইসব ডিভাইস চালানোর গতি যেন কমে যায় সেটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে ঠিক করে দেয় অ্যাপল।
অ্যাপল বলেছে, এই সীমাবদ্ধতার কারণ ছিল পুরোনো ডিভাইসগুলো যেন ব্যাটারির ক্ষমতা কমে যাওয়ার পরও চলমান থাকে, তা নিশ্চিত করা। পুরো কার্যকারিতা নিয়ে আইফোন চালানোর ফলে ডিভাইসগুলো হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
ব্যবহারকারীদের অভিযোগ, তাদেরকে অ্যাপলের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানানো হয়নি। আর এটি বন্ধ করারও কোনো উপায় নেই। এর ফলে, অনেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে অ্যাপলের পুরোনো ডিভাইসের গতি কমিয়ে দেওয়ার বিষয়টি তাদের ‘পরিকল্পনার অংশ’, যার লক্ষ্য, লোকজনকে নতুন আইফোন কিনতে বাধ্য করা। তবে, এর কোনো বাস্তবিক প্রমাণ নেই বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট’।
এই বিতর্কের পরপরই ২০১৮ সালে ‘আইফোন ৬’, ‘৬ প্লাস’, ‘৬ এস’, ‘৬ এস প্লাস’, ‘৭’, ‘৭ প্লাস’ বা প্রথম প্রজন্মের ‘আইফোন এসই’ ডিভাইসের মালিকদের পক্ষে মামলা করেছিলেন আইনজীবিরা। এখন ওই মামলায় সফল হয়ে তারা একে আখ্যা দিয়েছেন ‘কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট মামলার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অংকের নগদ অর্থ আদায়ের ঘটনা’ হিসেবে।
মামলার নিষ্পত্তি হিসেবে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অন্তত ৩১ কোটি ডলার আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে অ্যাপলকে। তবে, এটি কেবল ২০২০ সালের অক্টোবরের আগে এই ক্লাস অ্যাকশন মামলায় সাইন আপ করা গ্রাহকদের বেলাতেই প্রযোজ্য। সে সময় এর সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসাবে দেখা যাচ্ছে বাদী পক্ষে নাম লেখানো প্রতি ব্যবহারকারী পাবেন ৬৫ ডলার করে।
এই বিষয়ে প্রকাশ্য কোনো মন্তব্য করেনি অ্যাপল। এর আগে কোম্পানিটি যুক্তরাষ্ট্রে এই মামলার বিপরীতে আপিল করলেও সেটি নাকচ হয়ে যায়।