সয়ুজ নভোযানে করেই পৃথিবীতে ফেরার কথা ছিল ওই তিন নভোচারীর। রাশিয়া বিকল্প নভোযান পাঠিয়ে তাদের ফেরত আনতে চাইলে তা করতে হবে ফেব্রুয়ারি মাসেই।
Published : 30 Dec 2022, 03:08 PM
ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)-এ আটকা পড়া তিন রুশ নভোচারীকে ফিরিয়ে আনতে স্পেসএক্সের সহযোগিতা নেওয়ার কথা ভাবছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
নিজস্ব সয়ুজ নভোযানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় কার্যত আইএসএসে আটকা পড়েছেন তিন রুশ নভোচারী। ১৫ ডিসেম্বর কুল্যান্ট লিক হওয়া শুরু করে সয়ুজ থেকে। মহাকাশযানটি আদৌ নভোচারীদের নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার উপযোগী আছে কি না, রসকসমসের কাছ থেকে সে সিদ্ধান্ত আসবে জানুয়ারি মাসে।
পূর্বনির্ধারিত সময়সূচী অনুযায়ী, মার্চ মাসে সয়ুজ নভোযানে করেই পৃথিবীতে ফেরার কথা ছিল ওই তিন নভোচারীর। রাশিয়া বিকল্প নভোযান পাঠিয়ে তাদের ফেরত আনতে চাইলে তা করতে হবে ফেব্রুয়ারি মাসেই। কিন্তু সে বিষয়টিও এখনও নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে স্পেস ডটকম।
এ পরিস্থিতিতে রুশ নভোচারীদের উদ্ধারে স্পেসএক্সের সহযোগিতা নেওয়ার কথা ভাবছে নাসা। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ড থেকে নভোচারীদের মহাকাশে আনা-নেওয়ার সক্ষমতা কেবল স্পেএক্সেরই আছে।
রুশ নভোচারীদের প্রসঙ্গে সম্প্রতি রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে নাসা মুখপাত্র সান্ড্রা জোনস বলেছেন, “প্রয়োজন হলে ড্রাগন স্পেসক্র্যাফটের বাড়তি কয়েকজন ক্রু পরিবহনের সক্ষমতা আছে কি না, সে বিষয়ে স্পেসএক্সকে কিছু প্রশ্ন করেছি আমরা।”
এ প্রসঙ্গে জানতে স্পেসএক্সের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পায়নি রয়টার্স।
ইতোমধ্যেই আইএসএস ডকে অপেক্ষমান আছে একটি ক্রু ড্রাগন (এন্ডেভার) স্পেসক্র্যাফট। স্পেসএক্সের সঙ্গে আলোচনার বিষয় ঠিক কী ছিল– ওই বিদ্যমান মহাকাশযানটিতেই বাড়তি আসন যোগ করা হবে নাকি আরেকটি ক্রু ড্রাগন যান আইএসএসে পাঠানো হবে, সে প্রসঙ্গে রয়টার্সকে বিস্তারিত জানায়নি নাসা।
স্পেস ডটকম জানিয়েছে, এন্ডেভারের সবগুলো আসনেরই যাত্রী আছে আইএসএসে। ২০২৩ সালের প্রথমার্ধেই নাসার নভোচারী নিকোল ম্যান ও জশ কাসাডা, জাপানের নভোচারী কোইচি ওয়াকাতা এবং রুশ নভোচারী আন্না কিকিনাকে ফেরত আনার কথা রয়েছে মহাকাশযানটির।
আর যান্ত্রিক ত্রুটির শিকার এমএস-২২ নভোযানটি রুশ নভোচারী সের্গেই প্রোকোপিয়েভ ও দিমিত্রি পেতেলিন এবং নাসার নভোচারী ফ্র্যাঙ্ক রুবিওকে আইএসএসে বয়ে নিয়েছিল। স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগনের সঙ্গে সয়ুজ যানের কারিগরি পার্থক্য নভোচারীদের ফেরত আনার প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলছে বলে জানিয়েছে স্পেস ডটকম।
এমএস-২২ নভোযানের তিন যাত্রীর সকলেই মহাকাশে গিয়েছেন রাশিয়ার তৈরি ‘সোকল’ স্পেসস্যুট পরে। অন্যদিকে, নভোচারীদের ড্রাগন স্পেসক্র্যাফটে মহাকাশে নিতে জন্য প্রত্যেকের জন্য আলাদা করে বিশেষায়িত স্পেসস্যুট বানায় স্পেসএক্স।
মহাকাশযান ভিত্তিক এই স্পেসস্যুট জটিলতার সমাধান কী হতে পারে– সে বিষয়েও কোনো মন্তব্য করেনি নাসা।
অন্যদিকে, এমসএস-২২ থেকে কুল্যান্ট লিক হওয়ার কারণ এখনও চিহ্নিত করতে পারেননি নভোচারীরা। তবে, মহাকাশবিজ্ঞানীদের ধারণা, মহাকাশে ভাসমান আবর্জনা অথবা ক্ষুদ্র গ্রহাণুর আঘাত এর কারণ হতে পারে।