নিজেদের ‘প্রতিকূল আবহাওয়া পর্যবেক্ষক’ স্যাটেলাইটের জন্য নতুন উৎক্ষেপণ সেবাদাতা খুঁজে পেয়েছে নাসা। এতোদিন অন্য এক কোম্পানির সঙ্গে এইসব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের চুক্তি থাকলেও সেটি সংশোধন করে নতুন একটি কোম্পানি বাছাই করেছে মার্কিন এই মহাকাশ সংস্থা।
‘টাইম-রিসলভড অবসার্ভেশন্স অফ প্রিসিপিটেশন অ্যান্ড স্টর্ম ইনটেন্সিটি উইথ এ কনস্টেলেশন অফ স্মলক্যাটস (ট্রপিকস)’ নামে পরিচিত এইসব স্যাটেলাইট।
বুধবার সংস্থাটি ঘোষণা দেয়, আগামী বছর বসন্তের শেষে এইসব স্যাটেলাইটের দুটি উৎক্ষেপণ চালাতে মার্কিন অ্যারোস্পেস কোম্পানি ‘রকেট ল্যাব’কে বাছাই করেছে তারা।
এ অভিযানগুলো আগামী মে’র আগ পর্যন্ত শুরু না হলেও প্রতিটি রকেটেই দুটি করে ‘কিউবস্যাট’ (স্যাটেলাইট বক্স) থাকবে বলে উঠে এসেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)’ উৎক্ষেপণের লাইসেন্স দেওয়ায় সহজেই অনুমান করা সম্ভব, এইসব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপিত হবে ভার্জিনিয়ায় অবস্থিত রকেট ল্যাবের যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক একমাত্র লঞ্চপ্যাড থেকে।
এতোদিন কেবল নিউ জিল্যান্ডের মাহিয়া উপদ্বীপ থেকে উৎক্ষেপণ চালাতো কোম্পানিটি। তবে, ৭ ডিসেম্বর ভার্জিনিয়া থেকে প্রথম উৎক্ষেপণের মাধ্যমে এই অবস্থা হয়তো বদলে যাবে।
মার্কিন এই মহাকাশ সংস্থার প্রাথমিক অংশীদার ‘অ্যাস্ট্রা’র সঙ্গে পরবর্তীতে উৎক্ষেপণ না চালানোর ঘোষণার পর থেকে গত দুই মাস ধরেই এটি একটি ‘খোলা প্রশ্ন’ হিসাবে ছিল- ট্রপিকস মিশনের জন্য নাসা কাকে বেছে নেবে?
‘রকেট ৩.৩’ মহাকাশযানে তিনটি উৎক্ষেপণের জন্য নাসার সঙ্গে প্রায় ৮০ লাখ ডলারের চুক্তি ছিল অ্যাস্ট্রা’র। পরবর্তীতে, তুলনামূলক বড় ও শক্তিশালী ‘রকেট ৪’ চালুর লক্ষ্যে এটি বন্ধ করে দেয় তারা।
তবে, এখনও নির্মাণাধীণ পর্যায়ে আছে রকেট ৪। ২০২৪ সালের আগে এটি হয়তো উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুতও হবে না। ফলে, এত দীর্ঘ সময় অপেক্ষা না করার সিদ্ধান্ত নেয় নাসা।
নতুন রকেটে ‘কম্পেয়ারেবল সায়েন্টিফিক পেলোডের’ জন্য অ্যাস্ট্রা’র সঙ্গে ট্রপিকস স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের চুক্তি সংশোধনের কথা নাসা জানিয়েছে সেপ্টেম্বরে।
এই চুক্তির অধীনে তিনটি উৎক্ষেপণের মধ্যে জুন মাসে কেবল একটি উৎক্ষেপণের চেষ্টা চালিয়েছিল অ্যাক্সিস। তবে, রকেটটি দ্বিতীয় ধাপে সমস্যার মুখে পড়ায় ও পেলোড স্থাপনের আগে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুটো স্যাটেলাইটই হারিয়ে যায়।
নাসা’র ‘ভেঞ্চার-ক্লাস অ্যাকুইসিশন অফ ডেডিকেটেড অ্যান্ড রাইড শেয়ার (ভিএডিআর)’ লঞ্চ সেবায় চুক্তিবদ্ধ ১৩টি কোম্পানির একটি হলো রকেট ল্যাব, যেখানে ঝুঁকিপূর্ণ পেলোডের জন্য নতুন এক কার্যক্রমের পরিকল্পনা হয়েছে।
‘ভিএডিআর’ প্রকল্পে স্পেসএক্সের মতো অভিজ্ঞ কোম্পানির পাশাপাশি আছে ‘এবিএল স্পেস সিস্টেমস অ্যান্ড রিলেটিভিটি’র মতো স্টার্টআপ কোম্পানিও, যারা এখনও নিজেদের প্রথম রকেট উৎক্ষেপণ করেনি।