অদূর ভবিষ্যতে হয়তো বাটন ফোন ব্যবহার করা লাগতে পারে ধসের মুখে পড়া ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ এফটিএক্স-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধান নির্বাহী স্যাম ব্যাঙ্কম্যান-ফ্রিড’কে।
মামলায় ফ্রিডের আইনজীবিরা তার জামিনের শর্তাবলী পরিবর্তনে রাজী হয়েছেন - এই মর্মে লেখা একটি চিঠি শুক্রবার দেখার সুযোগ হয়েছে মার্কিন বাণিজ্য প্রকাশনা ব্লুমবার্গের। সেখানেই উল্লেখ রয়েছে এই সীমাবদ্ধতার কথা।
মামলার বিচারক এই পরিবর্তনে সায় দিলে জামিনে থাকা অবস্থায় ফ্রিডকে ইন্টারনেট সংযোগবিহীন একটি ‘নন-স্মার্টফোন’ ব্যবহার করতে হবে। আর কোনো আইনজীবির উপস্থিতি ছাড়া তিনি নিজের এফটিএক্স ও আলামেডা রিসার্চের সাবেক বা বর্তমান কোনো কর্মীর সঙ্গেও কথা বলতে পারবেন না।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বছরের শুরুতে সিগনাল অ্যাপের মাধ্যমে ফ্রিড এফটিএক্স-এর মার্কিন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের প্রধান আইনজীবির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টার পর এই সীমাবদ্ধতার প্রস্তাব এলো।
“আমি সত্যিই আবার তাদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে দেখতে চাই, আমাদের গঠনমূলক সম্পর্ক রাখার, যখন সম্ভব একে অপরকে কাজে লাগানোর, বা অন্তত একে অপরের বিভিন্ন জিনিস পরীক্ষার উপায় আছে কি না।” --বিচার বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এক বার্তায় বলেন তিনি।
এই সপ্তাহের শুরুতে ফেডারেল জালিয়াতি ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে নিজের দায় স্বীকার করেন এফটিএক্স’র প্রকৌশল বিভাগের সাবেক পরিচালক নিশাদ সিং। তিনি ব্যাঙ্কম্যান-ফ্রিডের ঘনিষ্ঠ তৃতীয় ব্যক্তি, যিনি তার বিরুদ্ধে আনা মামলায় আইনজীবিদের সহযোগিতা করেছেন।
২০২২ সালের শেষে জালিয়াতির অভিযোগে নিজেদের দায় স্বীকার করে তদন্তকারীদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন আলামেডা রিসার্চের সাবেক প্রধান নির্বাহী ক্যারোলিন এলিসন ও এফটিএক্স-এর আরেক সহ-প্রতিষ্ঠাতা জিশিয়াও ‘গ্যারি’ ওয়াং।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘মুখে চুন কালি পড়া’ এই উদ্যোক্তা সম্ভাব্য সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন, এমন ঝুঁকির কথা জানতে পেরে ফ্রিডের জামিন প্রত্যাহারের পাশাপাশি বিচার শুরুর আগেই তাকে জেলে পাঠানোর হুমকি দেন ডিস্ট্রিক্ট জাজ লুইস কাপলান।
গত মাসে ফ্রিডের ‘ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন)’ ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা দেন কাপলান। এর আগে ফুটবল খেলা দেখার জন্য তিনি ভিপিএন ব্যবহার করেছেন বলে জানান তার তার আইনজীবিরা। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাপলান বলেন, তিনি চান ফ্রিড যেন ‘ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ভীড়ে হারিয়ে’ না যান।
পরিবর্তিত জামিনের চুক্তিতে, ‘এসবিএফ’কে (ফ্রিডের নামের সংক্ষিপ্ত রূপ) ওয়েব সার্ফিংয়ের জন্য একটি ল্যাপটপ ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হলেও তার প্রবেশাধিকার একটি ভিপিএন-এর মাধ্যমে সীমিত করা হবে, যা তাকে দুই কেবল ধরনের ওয়েবসাইটে প্রবেশের সুযোগ দেবে।
ফ্রিডের আইনজীবিরা বলেন, এর একটি হলো বিভিন্ন এমন ওয়েবসাইট, যেগুলো তার মামলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আর অন্যটিতে ২৩টি এমন তালিকাভুক্ত ওয়েবসাইট রয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করে ফ্রিড খাবার অর্ডার করতে, খবর পড়তে ও বিভিন্ন স্ট্রিমিং কনটেন্ট দেখতে পারেন। এই প্রস্তাবিত সীমাবদ্ধতা তার ‘লিগ অফ লিজেন্ডস’ গেইম খেলা বন্ধ করবে কি না, সেটি অবশ্য পরিষ্কার নয়।