নতুন তহবিলের জন্য ‘শর্ট ভিডিও’ চায় না টিকটক

প্ল্যাটফর্মের ফলোয়ার ও ভিডিওর ভিউ সংখ্যা পূরণের পাশাপাশি “এক মিনিটের চেয়ে বেশি দৈর্ঘ্যের উচ্চমানের, মৌলিক ভিডিও” তৈরির শর্ত জুড়ে দিয়েছে টিকটক।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2023, 12:31 PM
Updated : 21 Feb 2023, 12:31 PM

নিজস্ব প্ল্যাটফর্মের কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য অর্থ আয়ের নতুন উপায় পরীক্ষা করে দেখছে টিকটক। তবে, এর জন্য তুলনামূলক দীর্ঘ ভিডিও পোস্টের মতো শর্ত জুড়ে দিয়েছে বাইটড্যান্স মালিকানাধীন ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটি।

‘ক্রিয়েটিভিটি প্রোগ্রাম’ নামে পরিচিত নতুন এই তহবিলের ঘোষণা এসেছে ২০ ফেব্রুয়ারি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও ফ্রান্সে এর বেটা পরীক্ষা চলছে।

এর আগে মার্কিন বাণিজ্য প্রকাশনা ‘ইনফর্মেশনের’ প্রতিবেদন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের পিছিয়ে পড়া প্রবৃদ্ধির গতি বাড়াতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে টিকটক।

কোম্পানি বলছে, আপাতত ‘কেবল আমন্ত্রণের ভিত্তিতে’ নতুন এই প্রকল্প উন্মুক্ত হলেও ভবিষ্যতে সকল যোগ্য ব্যবহারকারী এর সঙ্গে যুক্ত হবে।

এই প্রকল্পের নাগাল পেতে ব্যবহারকারীর বয়স ১৮’র বেশি হতে হবে। এ ছাড়া, প্ল্যাটফর্মের ফলোয়ার ও ভিডিও ভিউ মানদণ্ড পূরণের পাশাপাশি এর সবচেয়ে ‘চমকপ্রদ’ শর্ত হলো, “বিভিন্ন এমন উচ্চমানের, মৌলিক ভিডিও তৈরি করা, যেগুলোর দৈর্ঘ্য এক মিনিটের চেয়ে বেশি।”

প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্ল্যাটফর্মটির তুলনামূলক দীর্ঘ ভিডিও তৈরির দিকে মনযোগ দেওয়া অনেকের কাছে ‘অবাক করার মতো বিষয়’ হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে। কারণ, এর আগে টিকটকের অনুকরণেই অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিওকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে শুরু করেছিল। 

তবে টিকটক এখন একাধিক উপায়ে ইঙ্গিত দিচ্ছে, সামনের দিকে প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন লাইভস্ট্রিম’সহ তুলনামূলক দীর্ঘ কনটেন্ট বেশি গুরুত্ব পাবে।

নতুন এই তহবিল উন্মোচনের পটভূমি হলো কোম্পানির বিরুদ্ধে কনটেন্ট নির্মাতাদের গুরুত্বপূর্ণ এক অভিযোগ; ব্যবহারকারীরা বলছেন, তারা প্ল্যাটফর্মের মূল ‘ক্রিয়েটর ফান্ড’ থেকে যথেষ্ট অর্থ উপার্জন করছেন না।

টিকটক বলছে, নতুন এই প্রকল্প কনটেন্ট নির্মাতাদের ‘সৃজনশীলতা পরিচর্যা, তুলনামূলক উচ্চমাত্রার আর্থিক আয়ের সম্ভাবনা তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন চমকপ্রদ, বাস্তব জগতের সুবিধার পথ খুলে দেবে।’ তবে, নতুন এই প্রকল্পের সম্ভাবনা কতটুকু বা এতে কতোজন অংশগ্রহণকারী আর্থিক আয়ের জন্য বিবেচিত হবেন অথবা এর আয়ের মাত্রা ক্রিয়েটর ফান্ডের চেয়ে বেশি হবে কি না, ওই বিষয়গুলো পরিষ্কার করেনি কোম্পনিটি।

টিকটকের মুখপাত্র জাকারি কাইজার ভার্জকে বলেন, নতুন এই প্রকল্পে কী পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হবে, এই মুহুর্তে ওই বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারছে না কোম্পানিটি।

কাইজার আরও বলেন, এই আর্থিক ফি কোনো বিজ্ঞাপনী আয় ভাগাভাগির মাধ্যমে আসছে না। এর গণনা হবে যোগ্য ভিউ ও ‘আরপিএম’ (প্রতি হাজারবার দেখায় আর্থিক আয়)’র ভিত্তিতে, যা ভিডিও’র সম্পৃক্ততা ও দর্শকের অঞ্চলের মতো বিভিন্ন উপাত্তের ভিত্তিতে ওঠানামা করতে পারে।

এখনও মূল ক্রিয়েটর ফান্ডের অংশ হিসেবে থাকা কনটেন্ট নির্মাতারা নতুন এই প্রকল্পে যাওয়ার সুযোগ পেলেও, তারা পুনরায় আগের ব্যবস্থায় ফিরতে পারবেন না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ভার্জ।

২০২০ সালে ঘোষিত মূল তহবিলে, অংশগ্রহণকারীদের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল একশ কোটি ডলার, যা পরবর্তী তিন বছরে দেওয়ার কথা কোম্পানির।

২০২২ সালের শেষে কনটেন্ট নির্মাতাদের পেছনে একশ কোটি ডলার খরচের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আরেক সামাজিক জায়ান্ট মেটা। অন্যদিকে, কনটেন্ট নির্মাতাদের শর্টস তৈরির উদ্দেশ্যে আর্থিক আয় ভাগাভাগির সুবিধাজনক উপায় চালু করেছে ইউটিউব। ফলে, প্ল্যাটফর্মের বিজ্ঞাপনী আয়ের ৫৫ শতাংশ রাখছে ইউটিউব। আর বাকি ৪৫ শতাংশ পাচ্ছেন কনটেন্ট নির্মাতারা।