“এমন অভিজ্ঞতা, যা আপনি আগে কখনও দেখেননি। পরবর্তীতে তা দেখতে পেলে আপনার মনে হবে, এটা সত্যিই প্রশান্তিদায়ক।”
Published : 07 Apr 2024, 05:05 PM
আসন্ন সূর্য গ্রহণের সরাসরি সাক্ষী হতে গোটা বিশ্ব থেকে উত্তর আমেরিকায় পাড়ি জমাচ্ছেন প্রেকৃতিপ্রেমীরা।
২৫ বছর আগে প্রথমবার পূর্ণ সূর্য গ্রহণ দেখেছিলেন অস্ট্রেলীয় মনোবিদ কেট রুসো। সে সময় তিনি বাস করতেন উত্তর আয়ারল্যান্ডে। আর তিনি সবসময়ই এ রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার চাক্ষুষ সাক্ষী হতে চেয়েছিলেন।
সম্প্রতি বিবিসি’র কাছে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন ৫১ বছর বয়সী রুসো।
১৯৯৯ সালে নিজের মাস্টার্স ও পিএইচডি’র মাঝামাঝি সময়ে ফ্রান্সের দক্ষিণ উপকূলে তার এ চাওয়া পূরণ হয়েছিল। তখনও তার বয়স ৩০ পেরোয়নি।
“আমি ভেবেছি, এটাই আমার প্রথম ও একমাত্র গ্রহণ দেখার ঘটনা হবে, ” বলেন রুসো।
“এমন এক অভিজ্ঞতা, যা আগে কখনও দেখার সুযোগ হয়নি। আর সে সুযোগ দ্বিতীয়বার মেলার বিষয়টি কী চমৎকার না?”
তবে, রুসো ওইদিন যে অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন, তা তার জীবনকে চিরতরে বদলে দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায়, নিজের পরবর্তী জীবনে তিনি সূর্য গ্রহণ নিয়ে পড়াশোনা করেছেন ও এর খোঁজে গোটা বিশ্ব চষে বেড়িয়েছেন।
সোমবার নিজের ১৪তম সূর্যগ্রহণ দেখতে যাচ্ছেন রুসো। আর এবারের গন্তব্য টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ইউভালডি শহর। সাম্প্রতিক দিনগুলোয় সূর্য গ্রহণ দেখার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো অনেকের একজন তিনি।
বিশেষজ্ঞদের অনুমান, উত্তর আমেরিকার ভেতর ও বাইরে থেকে ১০ লাখের বেশি মানুষ এই পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখার উদ্দেশ্যে যাত্রা করছেন।
এর মধ্যে অনেকেই জোতির্বিদ্যা, অনুসন্ধান, বিজ্ঞান ও ভ্রমণের প্রতি নিজেদের ভালোবাসার কারণে একত্রিত হয়েছেন। তাদের লক্ষ্য, নিজেদের জীবদ্দশায় যতগুলো সম্ভব গ্রহণের ঘটনা দেখে যাওয়া।
এ ছাড়া, কেউ কেউ মহাকাশের প্রতি নিজের ভালোবাসা ও মহাবিশ্ব সম্পর্কে বোঝাপড়া বাড়ানোর প্রত্যাশায় এ যাত্রায় যোগ দিয়েছেন। আর রুসোর মতো অনেকেই পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখার যে চমৎকার অনুভূতি, তা পূরণের লক্ষ্যস্থির করেছেন এ যাত্রায়।
চাঁদের ছায়ায় প্রথমবার দাঁড়ানোর ‘আবেগপ্রবণ’ অভিজ্ঞতা কেমন, বিবিসি’র কাছে সে কথাও বলেছেন রুসো।
সংজ্ঞানুসারে, চাঁদের ছায়া যখন সূর্যের রশ্মিকে পুরোপুরি আবৃত করে আকাশকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে ফেলে, তখন পূর্ণ সূর্য গ্রহণ ঘটে থাকে।
তবে রুসো’র মতে, এ অভিজ্ঞতা সরাসরি দেখা তার চেয়েও বড় ঘটনা।
এ অভিজ্ঞতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বিলেন, সে সময় তাপমাত্রা কিছুটা কমে যায় ও আশপাশে বায়ুপ্রবাহ বেড়ে যায়, ঠিক ঝড়ের আগ মুহুর্তের মতো। এ ছাড়া, সূর্যরশ্মির অনুপস্থিতিতে নিজের আশপাশে থাকা আবহের রং বদলে যাওয়ার বিষয়টিও লক্ষ্য করেছেন তিনি।
তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিল কেবল দিগন্তের চারপাশে থাকা কমলা, লালচে রঙের এক আভা ও আকাশে দেখতে পাওয়া আংটির মতো সরু আলোচ্ছটা, যা ‘করোনা’ নামেও পরিচিত।
“এটা দেখা যায় সূর্যের দিকে তাকানোর ঠিক আগমুহুর্তে,” সূর্য গ্রহণ শুরুর মুহুর্ত ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন তিনি।
রুসো বলেন, এ অভিজ্ঞতাই তাকে পূর্ণ সূর্য গ্রহণ দেখার পর মানুষের আবেগঘন প্রতিক্রিয়া নিয়ে পড়াশোনার জন্য অনুপ্রাণিত করেছে।