এক দিকে কোভিড লকডাউন, অন্যদিকে অনলাইন শিক্ষার কারণে ডিভাইসের পর্দায় ধীর্ঘক্ষণ ধরে চোখ রাখায় উদ্বেগও বেড়ে গিয়েছিল চীনা কর্তৃপক্ষের।
Published : 24 Nov 2022, 01:19 PM
কঠোর পদক্ষেপ কাঙ্ক্ষিত ফল দিয়েছে! চীনের কিশোর-তরুণদের ফেরানো সম্ভব হয়েছে গেইমিং আসক্তির করাল গ্রাস থেকে! - অনেকটা এমন বক্তব্যই উঠে এসেছে চীনে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে।
গবেষণার বরাতে এই দাবি এসেছে চীনের গেইমিং নিয়ন্ত্রক সরকারি সংস্থার অধীন ‘চায়না গেইম ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপ কমিটি’ থেকে।
দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা এক সময় ভিডিও গেইমকে “আধ্যাত্মিক আফিম” বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। নতুন এই উদঘাটনে দেশের কঠোর গেইমিং বিধিনিষেধের কঠোরতা খানিকটা কমিয়ে আনতে পারে বলে উঠে এসেছে বিবিসির প্রতিবেদনে।
চীনে ২০২১ সালের আগস্ট মাস থেকে আইন করে শিশুদের সপ্তাহে তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে গেইমিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
অসাধারণ ফলাফল
এই ডাণ্ডাবেড়ি এসে পড়েছে গোটা গেইমিং সেক্টরেই। নতুন টাইটেলের গেইমের জন্য সরকারী অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা আরোপের ফলে চীনে গোটা গেইমিং শিল্পই পড়েছে হিমঘরে।
গেইমিং সেক্টরের ওপর এই আঘাত ছিল চিনের বিশাল প্রযুক্তি সাম্রাজ্যের ওপর প্রশাসনের বজ্রমুষ্ঠি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গেইমিং জায়ান্টগুলোর অন্যতম টেনসেন্টও ছিল এর শিকার।
প্রতিবেদনটিতে তথ্য যোগান দিয়েছে সিএনজি। সংস্থাটি উপসংহারে পৌঁছেছে যে, দেশটিতে প্রতি চারজনে তিনজন তরুণ গেইমারই এখন সপ্তাহে তিন ঘন্টারও কম গেইম খেলে।
টেনসেন্টসহ চীনা গেইম কোম্পানিগুলি “অসাধারণ ফলাফল” অর্জন করেছে বলে উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে।
এশিয়ার গেইমিং বাজার বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান নাইকো পার্টনার্স বলেছে, এই প্রতিবেদনে উঠে আসা দুর্বল দিক হলো চীনে রাজস্ব কমছে।
তবে, এর প্রতিষ্ঠাতা লিসা কসমাস হ্যানসন বলছেন, “ই-স্পোর্টস, পিসি গেইমিং এবং চীনের ৭০ কোটিরও বেশি গেইমারের মধ্যে আগ্রহের কারণে ভবিষ্যত আরও ইতিবাচক বলে মনে হচ্ছে।”
বিবিসি’র বিশ্লেষণ
তরুণদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান গেইমিং আসক্তিকে চার কারণে দোষারোপ করেছে চীন-
ক্রমবর্ধমান “মায়োপিয়া”
মনোযোগহীনতা
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা
ঘুমের সমস্যা
এক দিকে কোভিড লকডাউন, অন্যদিকে অনলাইন শিক্ষার কারণে ডিভাইসের পর্দায় ধীর্ঘক্ষণ ধরে চোখ রাখায় উদ্বেগ বেড়েও গিয়েছিল চীনা কর্তৃপক্ষের।
গেইমিংয়ের ওপর বিধিনিষেধ এরপর ছড়িয়ে যায় অন্যদিকেও। টিকটকের চীনা সংস্করণ ডাউয়িন ১৪ বছরের কম বয়সীদের দিনে ৪০ মিনিটের বেশি সময় ধরে প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করতে নিষেধ করেছে।
সমস্যা হলো, শীত আসছে এবং দেশটিতে কোভিড সংক্রমণ ফের বাড়ছে। ফলে, শিশুরা আরও বেশি সময় কাটাচ্ছে বাড়িতে। এ অবস্থায় অনেক মা-বাবাই শিশুদের গেইমিং অ্যাকাউন্ট অ্যাক্সেস করার অনুমতি দিয়েছেন।
কেবল শিশু নয়, গেইমিং চীনা বয়স্কদের মধ্যেও দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
এ সপ্তাহেই, চায়না ডেইলি পত্রিকার প্রতিবেদন বলছে, ওল্ড হোমে থাকা অনেকেই তাদের নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সম্পর্ক জোড়ালো করতে তাদের সঙ্গে অনলাইনে গেইম খেলছেন।