‘এক্সোপ্ল্যানেট’ নামে পরিচিত এইসব গ্রহ আকারে বৃহস্পতি, শনি ও নেপচুনের কাছাকাছি। আর এগুলো শনাক্ত হয়েছে নাসার ‘ট্রানজিশনিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট’ বা ‘টেস’-এ।
Published : 24 Jan 2024, 07:02 PM
এলিয়েন বা ভিন গ্রহের প্রাণী থাকার সম্ভাবনা আছে, এমন ৮৫টি সম্ভাব্য গ্রহ খুঁজে পেয়েছেন জোতির্বিদরা।
এ অনুসন্ধান চালানো বিজ্ঞানীরা বলছেন, এইসব গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার বিষয়টি এখনও নিশ্চিত না হওয়া গেলেও এগুলোর সম্ভাব্য তাপমাত্রা জীবন ধারণের উপযোগী হতে পারে।
‘এক্সোপ্ল্যানেট’ নামে পরিচিত এইসব গ্রহ আকারে বৃহস্পতি, শনি ও নেপচুনের কাছাকাছি। আর এগুলো শনাক্ত হয়েছে নাসার ‘ট্রানজিশনিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট’ বা ‘টেস’-এ।
টেস স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ‘ট্রানজিট’ নামে পরিচিত নক্ষত্রের উজ্জ্বলতা কমে আসার ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে থাকেন বিজ্ঞানীরা।
সাধারণত, এ উপায়ে কোনো এক্সোপ্ল্যানেটের অনুসন্ধান চালাতে অন্তত তিনটি দৃশ্যমান ট্রানজিট লাগে, যার মাধ্যমে যাচাই করা হয়, নিজস্ব নক্ষত্রের কক্ষপথ প্রদক্ষিণে ট্রানজিটগুলো কতো সময় নেয়।
তবে, নতুন গবেষণায় গবেষকরা কেবল সেইসব এক্সোপ্ল্যানেটের দিকে নজর দিয়েছেন, যেগুলোতে দুইবার ট্রানজিট ঘটে থাকে। এর ফলে, বিভিন্ন এমন এক্সোপ্ল্যানেট খুঁজে পাওয়া গেছে, যেগুলোর তাপমাত্রা তুলনামূলক সহনশীল এবং যেগুলো কক্ষপথে তুলনামূলক বেশি সময় ধরে প্রদক্ষিণ করে থাকে।
বাছাই করা ৮৫টি এক্সোপ্ল্যানেট এর মূল নক্ষত্রের কক্ষপথ প্রদক্ষিণে সময় নিয়ে থাকে ২০ থেকে সাতশ দিন পর্যন্ত, যেখানে টেস-এর পর্যবেক্ষণ করা বেশিরভাগ এক্সোপ্ল্যানেটের কক্ষপথ পরিক্রমণের সময়কাল তিন থেকে ১০ দিন।
গবেষকরা বলছেন, এর মধ্যে কয়েকটি গ্রহ তাদের মূল নক্ষত্র থেকে যথেষ্ট দূরে থাকায় জীবনধারণের মতো পর্যাপ্ত তাপমাত্রা পাওয়া যায় সেগুলোতে। আর সেইসব গ্রহকে ‘হ্যাবিটেবল জোন’ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
এ মূহুর্তে স্যাটেলাইটের খুঁজে পাওয়া অবকাঠামোগুলো আসলেই এক্সোপ্ল্যানেট কি না, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। তবে, গবেষকরা আশা করছেন, ভবিষ্যৎ গবেষণায় সে তথ্যও পাওয়া যাবে।
সম্ভাব্য ৮৫টি এক্সোপ্ল্যানেটের ৬০টিই নতুন করে খুঁজে পাওয়া। আর বাকি ২৫টি গ্রহ এর আগেই বিভিন্ন স্বাধীন গবেষণা দল শনাক্ত করেছিল টেস-এর পাঠানো তথ্যের বরাতে।
“আমরা ১৪ লাখ নক্ষত্রের নমুনা থেকে বিভিন্ন ট্রানজিট খুঁজে বের করে এ প্রাথমিক অ্যালগরিদমটি পরিচালনা করেছি।” --বলেন ইউনিভার্সিটি অফ ওয়ারউইকের পিএইচডি গবেষক ফেইথ হথোর্ন।
“একটি কঠোর যাচাইকরণ প্রক্রিয়া চালানোর পর আমরা এমন ৮৫টি সিস্টেম বাছাই করেছি, যেগুলোতে দুইবার ট্রানজিট ঘটে থাকে।”
গবেষণার সঙ্গে জড়িত অধ্যাপক ড্যানিয়েল বেলিস আরও যোগ করেন, “এমন গ্রহ খুঁজে পাওয়া, যেখানে জীবন ধারণের মতো সহায়ক তাপমাত্রা আছে, তা সত্যিই রোমাঞ্চকর।”
এ আন্তর্জাতিক উদ্যোগের নেতৃত্বে ছিলেন ‘ইউনিভার্সিটি অফ ওয়ারউইক’-এর গবেষক হথোর্ন। গেল বুধবার গবেষণাপত্রটি প্রকাশ পেয়েছে ‘মান্থলি নোটিসেস অফ দ্য রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিকাল সোসাইটি (এমএনআরএস)’ জার্নালে।