Published : 10 Mar 2025, 06:41 PM
বাইবিট থেকে কিছুদিন আগে দেড়শ কোটি ডলারের ক্রিপ্টোমুদ্রা চুরি করে উত্তর কোরিয়ার সরকারের হয়ে কাজ করা হ্যাকার দল। ক্রিপ্টোর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চুরি থেকে ৩০ কোটি ডলার সফলভাবে নগদ করেছে দেশটির হ্যাকাররা।
‘ল্যাজারাস গ্রুপ’ নামে পরিচিত এ সাইবার অপরাধীরা দুই সপ্তাহ আগে দুবাইভিত্তিক ক্রিপ্টোমুদ্রা কোম্পানি ‘বাইবিট’ হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ডিজিটাল টোকেনের বিশাল ভাণ্ডার হাতিয়ে নেয় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
ওই সময় বাইবিট বলেছিল, কোম্পানিটির ডিজিটাল ‘ইথেরিয়াম ওয়ালেট’ থেকে এ অর্থ চুরি করেছে হ্যাকাররা। বিটকয়েনের পরে মূল্য ও গুরুত্বের দিক থেকে দ্বিতীয় বড় ক্রিপ্টোমুদ্রা ইথেরিয়াম বা ইথার।
তারপর থেকে বেহাত হওয়া ওই ক্রিপ্টোমুদ্রা উদ্ধার ও ভাঙানো ঠেকাতে এবং হ্যাকারদের ধরার বিষয়টি রীতিমতো ‘ইঁদুর বিড়াল’ খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অর্থ নগদে রূপান্তর করতে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকিং দলটি প্রতিদিন প্রায় ২৪ ঘণ্টা করে কাজ করেছে। সম্ভবত এই অর্থ উত্তর কোরিয়ার শাসকগোষ্ঠীর সামরিক উন্নয়নে খরচ হবে।
ক্রিপ্টোমুদ্রা তদন্তকারী ‘এলিপটিক’-এর সহ প্রতিষ্ঠাতা ড. টম রবিনসন বলেছেন, “হ্যাকারদের জন্য প্রতিটি মিনিট অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারা এই অর্থের লেনদেনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে এবং তারা যা করছে তাতে তারা অত্যন্ত দক্ষ”।
হ্যাকিংয়ের পাশাপাশি ক্রিপ্টোমুদ্রা পাচারেও উত্তর কোরিয়া সেরা বলে উল্লেখ করেছেন ড. রবিনসন।
২০২৪ সালে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা একশ ৩৪ কোটি ডলার সমমূল্যের ক্রিপ্টোমুদ্রা চুরি করেছে, যা বিশ্বব্যাপী চুরি হওয়া মোট ক্রিপ্টোর ৬০ শতাংশ।
ব্লকচেইন বিশ্লেষণ কোম্পানি চেইনালাইসিসের গবেষণায় উঠে এসেছে, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্রিপ্টো হ্যাকিং বর্তমানে “আরও ঘন ঘন হচ্ছে।”
মার্কিন ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ধারণা প্রকাশ করেছেন, কোরিয়া সরকার চুরি করা ডিজিটাল মুদ্রার অর্থ ব্যবহার করে “দেশটির বিধ্বংসী অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির অর্থায়ন করে।”
এদিকে, এলিপটিক ও বাইবিট-এর বিশ্লেষণ বলছে, দেড়শ কোটি ডলারের ক্রিপ্টোমুদ্রার ২০ শতাংশ তহবিল এখনও ‘অন্ধকারে রয়ে গেছে’, যার মানে এ অর্থ ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকারের সামরিক ও পারমাণবিক উন্নয়নের জন্য কয়েক ডজন হ্যাকিং চালিয়েছে উত্তর কোরিয়ানরা।
এর আগে, ২০২২ সালে ‘রনিন নেটওয়ার্ক’ থেকে ৬২ কোটি ডলার মূল্যের ‘ইথেরিয়াম’ ও ‘ইউএসডি’ কয়েন চুরির ঘটনা ছিল ক্রিপ্টোমুদ্রা চুরির অন্যতম বড় ঘটনা।
২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বাইবিটের প্রাথমিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও সাবেক পেপ্যাল প্রধান পিটার থিল।