মঙ্গলে একা দিন কাটানো নাসার রোভারকে ১.৬ টেরাবিট গতির ইন্টারনেট সংযোগ দিতে পারবে বলে দাবি করেছে নতুন এই স্টার্টআপ।
Published : 15 Sep 2022, 04:03 PM
পৃথিবীর দুর্গম অঞ্চলগুলো থেকে শুরু করে দূরের মহাকাশে লেজার রশ্মির মাধ্যমে উচ্চ-গতির ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে নতুন একটি স্টার্টআপ।
‘আলিরিয়া টেকনোলজিস’ নামের কোম্পানিটি দাবি করছে, চাঁদের স্পেস স্টেশন অথবা রেড প্ল্যানেটখ্যাত মঙ্গলে রিসিভার পাঠালে প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ১.৬ টেরাবিট গতির ইন্টারনেট সংযোগও দিতে পারবে তারা।
মঙ্গলবারের এক সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে ইন্টারনেট খাতের এ উদীয়মান প্রযুক্তি নিয়ে নানা তথ্য দিয়েছে আলিরিয়া টেকনোলজিস। প্রতিষ্ঠানের নামটি নতুন হলেও এর পেছনের লোকজন বা মূল প্রযুক্তির কোনোটিই প্রযুক্তি খাতে অপরিচিত নয়।
কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতারা ওয়েব জায়ান্ট গুগলের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের অভিজ্ঞ কর্মী। আর পৃথিবীর দুর্গম অঞ্চলগুলোতে এবং পৃথিবী থেকে দূরের মহাকাশে ইন্টারনেট সংযোগের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে যে দুটি প্রযুক্তি, সেই ‘অ্যাটমসফিয়ারিক লেজার কমিউনিকেশন’ আর নেটওয়ার্ক গুছাতে ব্যবহৃত সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্মটিও এসেছে গুগলের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেটের প্রকল্প থেকে।
এক সময়ে বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে ভাসমান বেলুন থেকে লেজার রশ্মির মাধ্যমে দুর্গম অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল অ্যালফাবেট। পরীক্ষামূলক প্রকল্পটির নাম ছিল ‘প্রজেক্ট লুন’। গেল বছরেই প্রকল্পটি বন্ধ করে দিয়েছে কোম্পানিটি।
কিন্তু ওই প্রকল্প থেকে আসা প্রযুক্তিকে কেন্দ্রে রেখেই আলিরিয়া প্রতিষ্ঠা করেছেন গুগলের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের কর্মীরা, সমর্থন আছে গুগলেরও।
আলিরিয়ার পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করে কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ক্রিস টেইলর বলেন, “আমরা উচ্চ-গতির আর্বান মেশ এবং বিশ্বপর্যায়ে সমন্বিত নেটওয়ার্ক চালু করতে পারবো এবং তিনশ কোটি মানুষকে সংযুক্ত করতে পারবো।”
“এবং সেটা আমরা এখনই করতে পারবো,” বলে দাবি করেছেন তিনি।
দৃশ্যপটে আলিরিয়ার আবির্ভাব ও প্রতিশ্রুতি নিয়ে গুগলের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিল প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট। কিন্তু, তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর দেয়নি ওয়েব জায়ান্ট।
অ্যালফাবেটের প্রকল্পের অধীনে নির্মিত দুই প্রযুক্তিকে ‘স্পেসটাইম’ এবং ‘টাইটবিম’ নামে ডাকছে আলিরিয়া।
‘স্পেসটাইম’ মূলত একটি সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্ম যা জল, স্থল এবং বাতাসে ভাসমান অ্যান্টেনার সর্বোচ্চ কার্যক্ষমতা নিশ্চিত করে গ্রাউন্ড স্টেশন, স্যাটেলাইট, এয়ানক্রাফট, আর্বান মেশ এবং অন্যান্য সিস্টেমের নেটওয়ার্ককে সমন্বিত করে।
আর বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে বাজারের বিদ্যমান যে কোনো প্রযুক্তির চেয়ে একশ থেকে এক হাজার গুণ বেশি গতিতে ডেটা আদান-প্রদানের লেজার প্রযুক্তি হলো টাইটবিম।
আলিরিয়া দাবি করছে, ছয় থেকে নয় মাস সময়ের মধ্যেই এই লেজার নির্ভর ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবস্থা চালু করতে পারবে তারা।
সিনেট জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ইতোমধ্যেই সরকারি পর্যায়ের সমর্থন পেয়েছে আলিরিয়া। জনসাধারণ ও ব্যক্তিমালিকানাধীন, উভয় খাতে ব্যবহার উপযোগী নিরাপদ ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবস্থা নির্মাণের জন্য ‘ডিফেন্স ইনোভেশন ইউনিট (ডিআইইউ)’-এর সঙ্গে চুক্তি করেছে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানটি।
পাশাপাশি কোম্পানিটি গুগলেরও কাছ থেকেও আর্থিক সমর্থন পাচ্ছে বলে জানিয়েছে সিনেট।