এ গবেষণায় যুক্তরাজ্য, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও এশিয়ার ৯০টি গবেষণা থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে, যেখানে অংশ নিয়েছেন ১৮ বা তার কম বয়সী ছয় লাখ চার হাজার ৫৫২জন শিশু।
Published : 13 Jan 2024, 09:38 AM
গোটা বিশ্বের প্রায় ১০ শতাংশ কিশোরের জীবদ্দশায় ডাক্তারের প্রেস্ক্রিপশন ছাড়া ডায়েট পিল বা ল্যাক্সেটিভের মতো ওজন কমানোর ওষুধ ব্যবহারের প্রবণতা রয়েছে --এমনই উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়।
তবে, গত বছরের হিসাবে, কিশোর কিশোরীদের মধ্যে এমন ওষুধ সেবনের প্রবণতা ছিল পাঁচ শতাংশ, যেখানে মেয়েদের সংখ্যাই বেশি।
ওই গবেষণা অনুসারে, কিশোররা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে থাকেন ডায়েট পিল। আর এর পরবর্তী অবস্থানে আছে ল্যাক্সেটিভ ও ডিউরেটিক।
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মাসিক মেডিকেল জার্নাল ‘জামা নেটওয়ার্ক ওপেন’-এ, যা সকলের জন্যেই উন্মুক্ত।
এ গবেষণায় যুক্তরাজ্য, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও এশিয়ার ৯০টি গবেষণা থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে, যেখানে অংশ নিয়েছেন ১৮ বা তার কম বয়সী ছয় লাখ চার হাজার ৫৫২জন শিশু।
এর মধ্যে ওজন কমানোর পণ্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করতে দেখা গেছে উত্তর আমেরিকায়। আর এর পরবর্তী অবস্থানে আছে যথাক্রমে এশিয়া ও ইউরোপ। গবেষণার লেখকরা বলেছেন, অন্যান্য অঞ্চলের ক্ষেত্রে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
“প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওজন কমানোর পণ্য শিশুদের পরামর্শ দেওয়া হয় না, কারণ সেগুলো তাদের বেলায় ঠিকভাবে কাজ করে না। আর এগুলো বিপজ্জনক হওয়ার পাশাপাশি পরে হঠাৎ করেই ব্যবহারকারীর ওজন বাড়িয়ে দেওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে। এমনকি ব্যবহারের কয়েক বছরের মধ্যে ‘ইটিং ডিসঅর্ডারের’ মতো খাদ্যজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে এতে।” --বলেছেন মেলবোর্নের মনাশ ইউনিভার্সিটির ‘স্কুল অফ পাবলিক অ্যান্ড প্রিভেন্টিভ হেলথ’ বিভাগ থেকে পরিচালিত গবেষণার লেখকরা।
“এমনকি ছোটবেলায় এমন পণ্য ব্যবহার করলে আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া, মানসিক অবসাদ, পুষ্টিহীনতা ও বিভিন্ন ঔষধে আসক্তির ঝুঁকিও দেখা যায়।”
গবেষকরা তাদের অনুসন্ধানকে ব্যাখ্যা করছেন ‘জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ’ বিষয় হিসেবে। এর কারণ হিসেবে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ প্রতিবেদনে বলেছে, এমন পণ্যের ব্যবহার ও যেসব কিশোরীর আত্মবিশ্বাস কম বা তাদের মা-বাবা, সমবয়সী বা সামাজিক মাধ্যম থেকে ওজন কমানোর চাপ রয়েছে, তাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে।
খাদ্য বিষয়ক অলাভজনক সংস্থা ‘বিট’-এর জননীতি বিভাগের পরিচালক টম কুইন সতর্ক করে বলেছেন, প্রেসক্রিপশনবিহীন ওষুধ ব্যবহারকারীর খাদ্যাভ্যাসের অবনতি ঘটায়। আর এতে তার সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও জটিল হয়ে ওঠে।
“এ ধরনের ডায়েট পিল ও ল্যাক্সেটিভ এত বেশি শিশু ও কম বয়সীদের নাগালের মধ্যে থাকার বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক ও আমরা এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন।” --বলেন তিনি।
তিনি আরও যোগ করেন, এ ধরনের ওজন কমানোর পণ্যের ক্ষেত্রে আরও কঠোর আইন থাকা উচিৎ। এ ছাড়া, ইটিং ডিসঅর্ডার বা দুর্বল মস্তিষ্কের লোকজনের কাছে এমন পণ্য বিক্রিতে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।