মেটার কাছে এটি ভালো পদক্ষেপ মনে হলেও বিষয়টি স্পর্শকাতর এবং এর ফলে মার্কিন সিনেট থেকে আরও কঠোর চিঠি আসতে পারে।
Published : 18 Jun 2023, 07:29 PM
বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি কীভাবে অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করে, সেটি নিয়ে তদন্ত বেড়েই চলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এরই মধ্যে, কোয়েস্ট সিরিজের হেডসেট ব্যবহারের বয়সসীমা ১৩ থেকে ১০-এ নামিয়ে এনেছে মেটা।
মার্কিন কংগ্রেসে সম্প্রতি প্রস্তাবিত বেশ কিছু বিলে নিয়ন্ত্রকদের ব্যপক ক্ষমতা প্রদানের পাশাপাশি ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক মাধ্যম থেকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার কথাও উঠে এসেছে।
মেটার বেঁধে দেওয়া নতুন বয়সসীমার কথা প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জকে নিশ্চিত করেছেন কোম্পানির মুখপাত্র জো অসবর্ন। পাশাপাশি, এই খবরের একটি ব্লগ পোস্টও দেখান তিনি, যা শীঘ্রই প্রকাশের পরিকল্পনা করছে কোম্পানিটি।
কোম্পানি বলছে, শিশুদের অ্যাকাউন্ট তৈরির বেলায় মা-বাবার অনুমতি লাগবে। আর মেটা কেবল সেইসব অ্যাপ ‘রেকমেন্ড করবে’ যেগুলো ওই বয়স শ্রেণির জন্য নিরাপদ। আর এটি চালাতে শিশুদের বিজ্ঞাপনও দেখতে হবে না বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ভার্জ।
সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ১০ থেকে ১২ বছর বয়সীদের মেটা প্রোফাইল ও অ্যাভাটার, যা নিজেদের সকল ধরনের অ্যাপেই ব্যবহার করে কোয়েস্ট। আর এটি ডিফল্ট হিসেবেই প্রাইভেট থাকে। এর মানে, ‘মা বাবার অনুমতি ছাড়া’ সমবয়সী কিশোরদের ফলো করতে পারবেন না ব্যবহারকারী।
মেটার ব্লগ পোস্ট বলছে, এই সুরক্ষা ফিচার বন্ধ করতে পারেন কেবল মা-বাবা। আর আপাতত ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম ‘হরাইজন ওয়ার্ল্ডস’ ব্যবহারের অভিজ্ঞতা পাবেন কেবল ১৩ বছরের বেশি বয়সীরা।
মেটার এমন সিদ্ধান্তের পেছনের কারণটি সহজ - প্রতিবেদনে লিখেছে ভার্জ। কোম্পানি জানে যে, শিশুরা ভিআর হেডসেট ব্যবহারে আগ্রহী। আর ভুয়া বয়সের মাধ্যমে প্রবেশের সুযোগ না দিয়ে বরং তাদের তুলনামূলক সীমিত সুবিধা দেওয়াই ভালো হবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ভার্জ।
ভার্জের প্রতিবেদন বলছে, মেটা সম্ভাব্য মামলা ও জরিমানা থেকে একধাপ এগিয়ে থাকতে চায়।
সম্প্রতি গেইম নির্মাতা এপিক গেইমসকে এফটিসি ৫২ কোটি ডলার জরিমানা করেছে। সংস্থাটি তদন্তে দেখেছে, ‘অনেক শিশুই যে ফোর্টনাইট গেইমটি খেলছে, তা কোম্পানিটি জানত’। তাই মেটা এখন অন্তত এটা বলতে পারে যে, মা-বাবাদের কঠোর নিয়ন্ত্রণের সুবিধা দিয়ে তারা অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্যেও বিকল্প ব্যবস্থা রেখেছে।
মেটার কাছে এটি ভালো পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হলেও বিষয়টি স্পর্শকাতর এবং এর ফলে মার্কিন সিনেট থেকে আরও কঠোর চিঠি আসতে পারে।
‘প্রজেক্ট সালসা’ কোডনামের এই ‘পরিকল্পনার ফাঁস’ ঠেকানোর সেরা প্রচেষ্টাই চালিয়েছে কোম্পানি। এর জন্য কোম্পানির কর্মীদের আলাদা এক নথিতেও স্বাক্ষর করতে হয়েছে।