১৯৭৭ সালের আগস্ট মাসে ‘ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি’র ‘বিগ ইয়ার রেডিও’ টেলিস্কোপে এই সংকেতটি ধরা পড়ে।
Published : 22 Aug 2024, 05:35 PM
সম্প্রতি ‘ওয়াও’ সংকেতের একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা, যেটি এলিয়েনদের কাছ থেকে আসতে পারে বলে দীর্ঘদিন ধরে অনুমান ছিল তাদের।
১৯৭৭ সালের আগস্ট মাসে ‘ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি’র ‘বিগ ইয়ার রেডিও’ টেলিস্কোপে এই সংকেতটি ধরা পড়ে, যা তখন থেকেই বিজ্ঞানীদের মুগ্ধ করে রেখেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
প্রথমবারের মতো যেসব বিজ্ঞানীরা এমন সংকেত লক্ষ্য করেন তারা এই সংকেতের পাশে প্রিন্টআউটে ‘ওয়াও’ শব্দটি লিখেছিলেন। সে থেকেই শব্দটি এ নামেই পরিচিতি পায়।
অনেক দীর্ঘ ও খুব জোরালো শব্দ হলেও এটি কেবল একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতেই ছিল। সেই সময় এর উৎসের তথ্য ঘেঁটে অনেকে অনুমান করেছিলেন, এলিয়েনরা সম্ভবত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা শব্দটি কোনো উদ্দেশ্য নিয়েই পাঠিয়েছে।
শব্দটি ‘স্যাজিটেরিয়াস’ নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে এসেছে, এমন অনুমান থাকলেও এটি ঠিক কোথা থেকে এসেছে বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন না তারা। এরপর আর কখনও এমন শব্দ আসেনি। সেই সময় বিজ্ঞানীরা কেবল বুঝতে চেষ্টা করেছেন, এটি কোনও মহাজাগতিক বুদ্ধিমত্তার সংকেত হতে পারে কিনা।
এখন ‘ইউনিভার্সিটি অফ পুয়ের্তো রিকো’-এর গবেষকরা বলছেন, তারা এই সংকেতের নতুন ব্যাখ্যা খুঁজে পেয়েছেন। এটি কোনও এলিয়েনের কাছ থেকে আসা সংকেত নয়, বরং এটি বিস্ময়কর এক জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় ঘটনা বলে দাবি তাদের।
এ রকমের আরও সংকেত শনাক্ত করেছেন গবেষকরা। তবে এর কোনোটিই প্রথম ওই ‘ওয়াও’ সংকেতের মতো এতো জোরালো নয়।
গবেষকরা বলছেন, ঠাণ্ডা হাইড্রোজেন মেঘ হঠাৎ উজ্জ্বল হয়ে ওঠার কারণে এমন ধরনের সংকেতের সূত্রপাত ঘটে। সম্ভবত কোনো নিক্ষিপ্ত বস্তুর মাধ্যমে আঘাত পাওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে। এর বিকিরণের উৎস হতে পারে একটি নরম গামা রিপিটারের জন্য একটি ‘ম্যাগনেটার ফ্লেয়ার’ অর্থাৎ একটি অত্যন্ত শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র’সহ একটি নিউট্রন তারা।
এমন ঘটনার কারণে হঠাৎ করে উজ্জ্বল হয়ে উঠে ঠাণ্ডা হাইড্রোজেন মেঘগুলো। যা থেকে ইঙ্গিত মেলে, কেন অল্প সময়ের জন্য এ সংকেতটির দেখা গিয়েছিল ও এরপরে আর কখনও দেখা যায়নি।
গবেষকরা বলছেন, এই নতুন অনুমানটি কেবল ভিন গ্রহ থেকে আসা সংকেতই ব্যাখ্যা করেনি বরং ভবিষ্যতে এলিয়েনদের কাছ থেকে আসা সম্ভাব্য বিভিন্ন সংকেত শনাক্তেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এ গবেষণাটি করা হয়েছে ২০২০ সালের পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে এবং এর প্রাথমিক সংস্করণটি প্রকাশিত হয়েছিল অনলাইনে।
বর্তমানে বিজ্ঞান সম্প্রদায়ের কাছ থেকে মন্তব্য নিয়ে এ গবেষণাটি পরিমার্জন করা হচ্ছে এবং শিগগিরই এটি কোনো বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নালে প্রকাশ করা হবে বলে আশা করছেন এ গবেষণার পেছনে কাজ করা বিজ্ঞানীরা।