“বায়োনিক হাতটিকে খুলে টেবিলের ওপর রাখার পরও এটি হামাগুড়ি দিয়ে চলতে পারে। আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না, এ প্রযুক্তি কতটা অসাধারণ।”
Published : 10 Apr 2025, 05:06 PM
বিশ্বে প্রথমবারের মতো তারবিহীন বায়োনিক বাহু উন্মোচন করেছে যুক্তরাজ্যের একটি স্টার্টআপ। তাদের দাবি, ব্যবহারকারীর কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেলেও বাহুটি কাজ করতে পারে।
ব্রিস্টলভিত্তিক ‘ওপেন বায়োনিক্স’ স্টার্টআপটি তাদের সর্বশেষ এই ‘হিরো’ নামের বায়োনিক বাহু তৈরিতে চার বছর সময় নিয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
স্টার্টআপটি বলেছে, বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত রোবোটিক অঙ্গ এটি।
“এটি প্রচলিত বায়োনিক হাতের তুলনায় দ্বিগুণ দ্রুত ও শক্তিশালী এবং একই সঙ্গে সবচেয়ে হালকা বাহুও। আর এটিই প্রথম বায়োনিক বাহু, যা পুরোপুরি পানিরোধী ও তারবিহীন,” বলেছেন ‘ওপেন বায়োনিক্স’-এর সহ প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও সামান্থা পেইন।
“এই খাতের জন্য এক বড় পদক্ষেপ এটি এবং চিকিৎসা খাত ও রোগী উভয়ের এই বাহু নিয়ে আগ্রহ দেখার জন্য মুখিয়ে আছি আমরা। বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর মতো বিষয় এটি।”
ডিভাইসটিতে ‘মায়োপডস’ নামের তারবিহীন ‘ইএমজি’ ইলেকট্রোড ব্যবহার করেছেন গবেষকরা। ইএমজি ইলেকট্রোডকে মূলত অঙ্গ নেই এমন ব্যক্তির দেহের ওপর বসিয়ে তার পেশী সংকেত পড়েন চিকিৎসকেরা। এসব সংকেতকে পরে বায়োনিক বিভিন্ন আঙ্গুলকে নড়াচড়া করার নির্দেশ দিতে ব্যবহার করেন তারা।
১৯ বছর বয়সী টিলি লোকি ছোটবেলায় মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হয়ে নিজের দুটো হাতই হারান। গত নয় বছর ধরে ওপেন বায়োনিক্সের তৈরি বায়োনিক বাহু ব্যবহার করছেন তিনি।
স্টার্টআপটির এই সর্বশেষ বায়োনিক বাহুটি তৈরিতে সাহায্যও করেছেন টিলি। তিনি বলেছেন, কার্যকারিতা ও প্রযুক্তির দিক থেকে এটি তুলনাহীন।
“নতুন প্রযুক্তিটি ভালো হবে তা আমি জানতাম। তবে এর উন্নয়নের ব্যাপকতা দেখে আমি এতটা হতবাক হব তা আশা করিনি।
“এসব বাহু অনেক বেশি শক্তিশালী। বায়োনিক হাতটিকে খুলে টেবিলের ওপর রাখার পরও এটি আমার সকেটে থাকা তারবিহীন সেন্সরের মাধ্যমে হামাগুড়ি দিয়ে চলতে পারে। এর ফলে দূর থেকেও এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি আমি। আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না, এ প্রযুক্তি কতটা অসাধারণ।”
২০১৪ সালে চালু হওয়ার পর থেকে এক হাজারেরও বেশি ব্যবহারকারীর কাছে নিজেদের সেবা পৌঁছে দিয়েছে ওপেন বায়োনিক্স। কাস্টম বায়োনিক বাহু সরবরাহ করতে থ্রিডি স্ক্যানিং ও থ্রিডি প্রিন্টিং ব্যবহার করেছে স্টার্টআপটি।