আইফোন ১৪ ও ১৫ ব্যবহারকারীদেরকে আরও এক বছর বিনামূল্যে জরুরী স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা চালানোর সুযোগ দেবে অ্যাপল।
অ্যাপলের এই ঘোষণার মাধ্যমে আইফোনের সাম্প্রতিক মডেল নিয়ে থাকা অন্যতম বড় প্রশ্নের জবাব মিলেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
গত বছর আইফোন ১৪’তে এই ‘ইমার্জেন্সি এসওএস’ ফিচার চালু করেছিল অ্যাপল। ফোনে জিএসএম বা ওয়াইফাই সংযোগ না থাকলেও এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী স্যাটেলাইট সংযোগ ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় কল করার সুবিধা পেয়ে থাকেন।
ফিচারটি চালু করার সময় অ্যাপল বলেছিল, এটি কেবল এক বছরের জন্য বিনামূল্যে ব্যবহার করা যাবে। তবে পরবর্তীতে কী হবে, সে বিষয়ে তখন কোনো তথ্য দেয়নি মার্কিন এই টেক জায়ান্ট। এর ফলে, গ্রাহদের মধ্যে ভীতি বাড়তে থাকে যে, ফিচারটির জন্য আর্থিক ফি না দিলে তারা বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ফেঁসে যেতে পারেন।
অ্যাপল বলছে, আইফোন ১৪ ব্যবহারকারীদের জন্য আরও এক বছর কভারেজ বাড়ানো হবে। তবে, এ সময় শেষ হলে কী হবে, সে সম্পর্কে এবারও নির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি কোম্পনিটি।
অ্যাপল বলেছে, এই ফিচারের সহায়তায় ‘অনেক জীবন’ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে, যেখানে সাধারণ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার বাইরে থাকা ব্যক্তিদের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে কোম্পানিটি।
“ইমার্জেন্সি এসওএস ফিচার ব্যবহার করে গোটা বিশ্বে অনেক জীবন বাঁচানোর নজির মিলেছে। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে চারশ ফুট উঁচু পাহাড়ের চূড়া থেকে পড়ে যাওয়া এক গাড়ির চালককে উদ্ধার করা বা ইতালির এপ্পেনিনে পর্বতমালায় হাইকিং করতে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা। আমরা গ্রাহকদের কাছ থেকে এমন অনেক গল্পই শুনেছি ও সামনেও শুনতে থাকব।” --বলেন অ্যাপলের বৈশ্বিক আইফোন পণ্য বিপণন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট কাইয়ান ড্রান্স।
“আইফোন ১৪ ও ১৫’র ব্যবহারকারীরা দুই বছর বিনামূল্যে এই যুগান্তকারী সেবা ব্যবহারের সুযোগ পাবেন, যা নিয়ে আমরা খুবই আনন্দিত।”
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ফিচারটি প্রথম চালু হয় ১৫ নভেম্বর। এর মানে অ্যাপল এমন এক দিনে এর সময় বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে, যা না দিলে ব্যবহারকারীরা কভারেজের বাইরে চলে যেতেন।
ফিচারটি এক বছরের জন্য বিনামূল্যে ব্যবহার করার সুযোগ পেতে আইফোন ১৪ ব্যবহারকারীরা হয়ত আগে থেকেই নিজেদের ডিভাইস সক্রিয় রেখেছেন বলে প্রতিবেদনে ধারণা প্রকাশ করেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
তবে, অ্যাপলের বেলায় সেবাটি বিনামূল্যে নয়। কারণ, সেবাটির জন্য বিভিন্ন স্যাটেলাইট অপারেটরকে অর্থ দিতে হয় কোম্পানিটিকে। তবে, এই ইমার্জেন্সি এসওএস টুল চালাতে কতো খরচ পড়ে, সে সম্পর্কে কিছু বলেনি অ্যাপল।
ফিচারটির মাধ্যমে আইফোন ব্যবহারকারীরা কেবল বিভিন্ন জরুরী সেবায় যোগাযোগ করার সুযোগ পান, বিষয়টি এমন নয়। এর পাশাপাশি, স্যাটেলাইট সংকেত ব্যবহার করে ‘ফাইন্ড মাই’ নামের অ্যাপটি আপডেটের সুবিধাও মেলে।
আইফোন ১৫ উন্মোচনের পাশাপাশি অ্যাপল ঘোষণা দিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের স্যাটেলাইট ব্যবহারকারীরা গাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর বিভিন্ন সেবার সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ পাবেন এতে।