ওয়েবসাইটের নির্মাতাদের দাবি, বিভিন্ন এ আই কোম্পানি কেবল তাদের অনুমতি ছাড়াই যে তাদের তথ্য ব্যবহার করছে, তা না। বরং এটি ইন্টারনেটের কার্যকারিতাও কমিয়ে দিচ্ছে।
Published : 07 Jul 2024, 11:19 AM
স্ক্র্যাপারদের হাত থেকে নিজেদের লেখা সুরক্ষিত রাখতে পদক্ষেপ নিয়েছে বেশ কয়েকটি বড় ওয়েবসাইট কোম্পানি।
এ বিষয়টিকে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মধ্যে চলমান ও দৃশ্যত ক্রমবর্ধমান যুদ্ধের সর্বশেষ ফ্রন্ট বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
ওয়েবসাইটের বিভিন্ন লেখা থেকে লোকজন তথ্য পেয়ে থাকেন। আর বিভিন্ন এআই কোম্পানি এগুলোকেই নিজেদের নতুন বিভিন্ন টুল তৈরিতে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চায়৷
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উত্থান বেশ কয়েকটি কোম্পানিকে সামনে এনেছে, যারা নতুন ও স্মার্ট এআই প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ দিতে চাইছে। তবে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল সিস্টেমের জন্য বিশেষ করে চ্যাটজিপিটির মতো এআই বটের প্রশিক্ষণের জন্য অনেক বেশি পরিমাণ টেক্সটের প্রয়োজন পড়ে।
এতো টেক্সট কই পাওয়া যাবে? এর জবাব খুঁজতে কিছু এ আই কোম্পানি নজর দিয়েছে ওয়েবসাইট থেকে টেক্সট চুরি করার দিকে।
আর এটি টেক্সটভিত্তিক বিভিন্ন ওয়েবসাইটের নির্মাতাদের একেবারেই খুশি করেনি। তাদের দাবি, বিভিন্ন এ আই কোম্পানি কেবল তাদের অনুমতি ছাড়াই যে তাদের তথ্য ব্যবহার করছে, তা না। বরং এটি ইন্টারনেটের কার্যকারিতাও কমিয়ে দিচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এর মালিক ইলন মাস্ক বারবারই ইঙ্গিত দিয়েছেন, এ ধরনের স্ক্র্যাপিং সিস্টেম ইন্টারনেটে অনেক বেশি পরিমাণে ট্রাফিক তৈরি করে।
এক্স-এর মতো বিভিন্ন সাইট এইসব বট ঠেকাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। অবশ্য নিজেদের সাইটের বিভিন্ন সমস্যা আড়াল করতে এক্স এইসব বটের অজুহাত দেখাচ্ছে বলে অভিযোগও রয়েছে।
গত সপ্তাহে রেডিট অনেক ধরনের পরিবর্তন এনেছে, যা বিভিন্ন বটকে তাদের ওয়েবসাইট স্ক্র্যাপ করা্র হাত থেকে ব্লক করার চেষ্টা করেছে। কোম্পানিটি বলেছে, এক্ষেত্রে তারা আরও সীমাবদ্ধতা ব্যবহার করবে। পাশাপাশি অপরিচিত বিভিন্ন বটকেও কোম্পানিটি ব্লক করবে এবং এই ধরনের নানা সিস্টেমকে তাদের ওয়েবসাইট থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেবে।
কোম্পানিটি আরও বলেছে, এইসব নিয়ম সম্ভবত অন্যান্য স্বয়ংক্রিয় বিভিন্ন সিস্টেমকেও সীমিত করতে পারে, যেখানে স্বচ্ছতার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। যেমন– ইন্টারনেট আর্কাইভ, যা বিভিন্ন ওয়েব পেইজকে সংরক্ষণ করে। তবে কোম্পানিটি জোর দিয়ে বলেছে, গবেষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন টুলে এখনও রেডিট-এর প্রবেশাধিকার থাকবে।
নতুন নিয়ম চালু করার সময় কোম্পানিটি বলেছিল, যারা রেডিট কনটেন্ট ব্যবহার করেন তাদের অবশ্যই আমাদের নীতিমালা মেনে চলতে হবে। যার মধ্যে রেডিটরদের সুরক্ষার নীতিমালাও রয়েছে। আমরা কাদের সঙ্গে কাজ করব সে বিষয়টি বাছাইয়ে আমরা খুঁতখুঁতে স্বভাবের।
এদিকে কিছু কোম্পানি বিভিন্ন এআই কোম্পানিকে তাদের বা তাদের ব্যবহারকারীদের ডেটাতে প্রবেশের জন্য চুক্তিবদ্ধ করেছে। ওপেনএআই ও গুগল উভয়ই রেডিটের সঙ্গে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে যাতে তারা তাদের বিভিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেমকে প্রশিক্ষণের জন্য তাদের ব্যবহারকারীদের নানা পোস্ট ব্যবহার করতে পারে।
অন্যন্য কোম্পানিও আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এছাড়াও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ওপেনএআই ও মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।
এখন ইন্টারনেট অবকাঠামো কোম্পানি ‘ক্লাউডফ্লেয়ার’ একইরকমভাবে বিভিন্ন টুলের জন্য একটি সীমাদ্ধতা চালু করেছে। এমনকি তারা গ্রাহকদের বলেছে, এটি তাদের ‘এআই ইন্ডিপেনডেন্স’ ঘোষণা করার একটি উপায়। সব ক্লাউডফ্লেয়ার গ্রাহক ‘সব ধরনের এআই বট ব্লক’ করার জন্য একটি ‘ইজি বাটন’ পাবেন।