‘এটিঅ্যান্ডটি’, ‘ভেরাইজন’ ও ‘লুমেন টেকনোলজিস’সহ যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে আটটি টেলিযোগাযোগ কোম্পানিতে এই হ্যাকিং কার্যক্রম চালিয়েছে চীন।
Published : 05 Dec 2024, 05:24 PM
চীনের হ্যাকিং প্রচারণায় শীর্ষ আট মার্কিন টেলিকম কোম্পানি আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। এর জেরে এনক্রিপশন ছাড়া যে কোনো ধরনের টেক্সট বা বার্তা পাঠানো বন্ধে নাগরিকদের সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এর পাশাপাশি, চীনা সরকার সমর্থিত ‘সল্ট টাইফুন’ নামের ওই হ্যাকার দলকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম বড় গোয়েন্দা হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ। দলটি এরইমধ্যে কয়েক ডজন দেশে আক্রমণ করেছে বলে উল্লেখ করেছেন ওই কর্মকর্তা।
ওয়াশিংটন বলেছে, ‘এটিঅ্যান্ডটি’, ‘ভেরাইজন’ ও ‘লুমেন টেকনোলজিস’সহ যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে আটটি টেলিযোগাযোগ কোম্পানিতে এই হ্যাকিং কার্যক্রম চালিয়েছে চীন। ফলে আমেরিকান নাগরিকদের অনেক ব্যক্তিগত এসএমএস বার্তা ও কলের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে বেইজিংয়ের কর্মীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের এক কর্মী বলেছেন, এই সাইবার হামলায় তিন ধরনের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে হ্যাকাররা।
এরই ধারাবাহিকতায় নিজেদের নাগরিকদের এনক্রিপ্টেড মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহারের অনুরোধ করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা, যাতে নাগরিকদের যোগাযোগে আড়ি পাততে না পারে চীন।
হোয়াইট হাউজের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অ্যান নিউবার্গার বলেছেন, “আমরা বিশ্বাস করি না, দেশের প্রত্যেক নাগরিকদের মেবাইল ফোনে আড়ি পাততে পারে চীন। তবে আমাদের ধারণা, অনেক মার্কিন নাগরিকের ওপরই আড়ি পেতেছে চীন সরকার।”
যুক্তরাষ্ট্রের ‘সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি’র সাইবার সিকিউরিটি বিভাগের নির্বাহী সহকারী পরিচালক জেফ গ্রিন বলেছেন, চীন সরকারের এই সাইবার হামলার আওতা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, হোয়াইট হাউজের পক্ষে ‘কখন আমরা এর থেকে পুরোপুরি মুক্ত হব তার সময়সীমার পূর্বাভাস দেওয়া অসম্ভব হয়ে উঠেছিল।”
আরেক ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা হ্যাকিংয়ের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে না চাইলেও তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কে চীনের চালানো সাইবার হামলার পরিধি বেশ বড় ছিল এবং ‘চলমান এই সাইবার হামলার ঝুঁকি’ এখনও রয়েছে।
“সমসময়ই হ্যাকিং ঠেকানোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখেছে হোয়াইট হাউজ। সেইসঙ্গে মার্কিন আটটি টেলিকম কোম্পানিতে চীনের এই সাম্প্রতিকতম অনুপ্রবেশের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বেশ কয়েকবার ব্রিফ করেছি আমরা।”
এদিকে, এ হ্যাকিংয়ের অভিযোগ মঙ্গলবার নাকচ করেছে ওয়াশিংটনে থাকা চীনা দূতাবাস।
“অন্য দেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব সাইবার হামলা চালানো বন্ধ করা উচিত। পাশাপাশি চীনকে অপবাদ দেওয়ার জন্য এই সাইবার নিরাপত্তার অজুহাত থেকেও দূরে থাকতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে,” বলেছেন চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ।