কোম্পানির রোবট তৈরির মূল লক্ষ্য হল, সেগুলোকে বিভিন্ন জাদুঘরে প্রদর্শনী হিসেবে রাখা। এর মধ্যে একটি রয়েছে এর কারখানার মূল ভবনেই।
Published : 11 Jun 2024, 06:35 PM
কারো চেহারায় কোনো আবেগ বা অভিব্যক্তি প্রকাশ না পেলে অনেকেই তাকে বলেন রোবটিক চেহারা। এই বিষয়টিই সম্ভবত পাল্টে দিতে চাইছে এক চীনা কোম্পানি।
চীনের রোবট নির্মাতা কোম্পানি ‘এক্স-রোবটস’-এর কারখানায় প্রকৌশলীরা বিভিন্ন এমন হিউম্যানয়েড রোবট বানাচ্ছেন, যেখানে মূল মনযোগ রোবটের চেহারায় অভিব্যক্তি ও আবেগ বাড়ানোর দিকে।
কারখানাটির অবস্থান চীনের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শহর ডালিয়ানে, যেখানে সিলিকন দিয়ে তৈরি বিভিন্ন মুখোশ, বাহু ও পা ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে কারখানার এক টেবিলে।
আর টেবিলের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছে হিউম্যানয়েড রোবটের বিচ্ছিন্ন করা মাথা ও দেহের অংশ, যেগুলো আছে নির্মাণের বিভিন্ন পর্যায়ে। এ ছাড়া, কারখানার দেয়ালে রোবটের নকশাও এঁকেছে কোম্পানিটি।
“আমাদের কাছে নিজস্ব সফটওয়্যারের পাশাপাশি বিভিন্ন অ্যালগরিদমভিত্তিক দলও আছে,” বলেন ‘এক্স-রোবটস’র প্রধান নির্বাহী লি বোইয়াং। তিনি আরও যোগ করেন, রোবটিক পণ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জটিল নির্মাণশৈলী হল হিউম্যানয়েড রোবটের।
“এমন অনেক মৌলিক মডেল ও অ্যালগরিদম আছে, যা সাধারণত ওপেন সোর্স হিসেবেই থাকে। আর সেটা সকলেই ব্যবহার করেন। তবে, আমরা বেশি মনযোগ দিয়েছি কীভাবে রোবটে এআই ব্যবহার করে কাউকে চেনানো যায় ও এর মাধ্যমে অভিব্যক্তি ও আবেগ প্রকাশ প্রকাশ করা যায়, সে বিষয়টির ওপর।”
উদাহরণ হিসেবে, এক্স-রোবটের এক কর্মী যখন নিজের মাথা নাড়ান, হাসেন বা জিহ্বা বের করে ভেংচি কাটেন, হিউম্যানয়েড রোবটটি সে গতিবিধি নকল করার চেষ্টা করে, যার জন্য এটি নিজের মাথার বিভিন্ন অংশে ইনস্টল করা ছোট ছোট মোটরের সহায়তা নেয়।
“আমরা রোবটের ফাউন্ডেশন মডেল তৈরির কাজও করছি। এ মডেলটি মূলত ‘মাল্টি-মোডাল’ ও বিভিন্ন ধরনের আবেগ প্রকাশে সক্ষম। আর এটি নিজের আশপাশের পরিবেশ বিবেচনায় নিয়ে মুখ দিয়ে প্রাসঙ্গিক প্রতিক্রিয়াও তৈরি করতে পারে,” বলেন লি।
এক্স-রোবটস বলেছে, একটি হিউম্যানয়েড রোবট বানাতে তাদের দুই সপ্তাহ থেকে এক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যায়, যেগুলোর দাম পড়বে ১৫ লাখ উয়ান (দুই লাখ সাত হাজার ডলার) থেকে ২০ লাখ উয়ান (পৌনে তিন লাখ ডলার) পর্যন্ত।
কোম্পানির রোবট তৈরির মূল লক্ষ্য হল, সেগুলোকে বিভিন্ন জাদুঘরে প্রদর্শনী হিসেবে রাখা। এর মধ্যে একটি রয়েছে এর কারখানার মূল ভবনেই।
লি বিশ্বাস করেন, ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা খাতে এক সময় বড় ভূমিকা রাখবে হিউম্যানয়েড রোবট।
“মানসিক কাউন্সেলিং ও স্বাস্থ্য নিশ্চিতভাবেই এর ভবিষ্যৎ দৃশ্যপটগুলোর মধ্যে পড়ে। তাই এর প্রাসঙ্গিক গবেষণা নিয়ে এখন কাজ করছি আমরা। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, বিভিন্ন মানসিক ব্যাধির জন্য সহায়ক চিকিৎসা ও প্রাথমিক স্ক্রিনিংয়ের বিষয়টি।”
“এ ছাড়া, আমি বিশ্বাস করি বিভিন্ন পেশাগত খাতেও এমন আবেগি যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্ব আছে, বিশেষ করে যেগুলো শিশুদের উদ্দেশ্য করে তৈরি।”