এশিয়ান শিশুদের তুলনায় শ্বেতাঙ্গ শিশুদের স্ক্রিন টাইম ও হতাশার মধ্যে সংযোগের মাত্রাও ছিল বেশি। তবে, ছেলে ও মেয়েদের ক্ষেত্রে তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য পার্থক্য মেলেনি।
Published : 15 Oct 2024, 03:47 PM
৯ ও ১০ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে মানসিক অসুস্থতার বিভিন্ন লক্ষণ বিকাশের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম বা বেশি সময় ধরে ফোনের পর্দায় তাকিয়ে থাকার বিষয়টি – এমনই উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।
‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া সান ফ্রান্সিসকো বা ইউসিএসএফ’-এর গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘বিএমসি পাবলিক হেলথ’-এ।
দুই বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের শিশুদেরকে নিয়ে স্টাডি করেছেন গবেষকরা, যেখানে উঠে এসেছে, ফোনের পর্দায় বেশি সময় কাটানোর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে হতাশা, উদ্বেগ, মনোযোগের সমস্যা ও আগ্রাসনের মতো আরও গুরুতর বিভিন্ন লক্ষণের।
গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু টেক্সট, ভিডিও চ্যাটিং, ভিডিও দেখা বা ভিডিও গেইম খেলে ফোনের পর্দায় বেশি সময় ব্যয় করে তাদের মধ্যে হতাশার লক্ষণ দেখা যাওয়ার শঙ্কা অন্যতের তুলনায় বেশি।
এ গবেষণার প্রধান লেখক ও ‘ইউসিএসএফ বেনিওফ চিলড্রেনস হসপিটাল’-এর সহযোগী অধ্যাপক ড. জেসন নাগাতা বলেছেন, অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমের কারণে শিশুদের মধ্যে শারীরিক ব্যায়াম, ঘুম ও ব্যক্তিগতভাবে সামাজিকীকরণের মতো কার্যকলাপ কমে যেতে পারে। আর এগুলো মূলত শিশুদের হতাশা ও উদ্বেগকে কমাতে সাহায্য করে।
বিভিন্ন বর্ণের শিশুদের উপর স্ক্রিন টাইম কেমন প্রভাব ফেলে সে উত্তরও পাওয়ার চেষ্টা করেছেন গবেষকরা। বর্ণের ভিন্নতার বেলাতে শিশুদের উপর স্ক্রিন টাইম ভিন্ন প্রভাব ফেলে বলে উঠে এসেছে গবেষণায়।
কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের তুলনায় শেতাঙ্গ শিশুদের মধ্যে স্ক্রিন টাইমের কারণে হতাশা, ‘অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিসঅর্ডার বা এডিএইচডি’ অর্থাৎ মনোযোগে সমস্যা ও প্রায়শই বিভ্রান্ত হয়ে পড়া এবং অন্যান্য আচরণগত বিভিন্ন মানসিক সমস্যার নানা লক্ষণের মধ্যে শক্তিশালী সংযোগ মিলেছে।
এমনকি এশিয়ান শিশুদের তুলনায় শ্বেতাঙ্গ শিশুদের স্ক্রিন টাইম ও হতাশার মধ্যে সংযোগের মাত্রাও ছিল বেশি। তবে, ছেলে ও মেয়েদের ক্ষেত্রে স্ক্রিন টাইমের বিভিন্ন প্রভাবের মধ্যে তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য পার্থক্য মেলেনি।
বছরের পর বছর ধরে ফোনের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও বেড়েছে উদ্বেগ।
২০ বছর আগের তুলনায় বর্তমানে টিনএজারদের মধ্যে বড় ধরনের হতাশায় পড়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ বেশি। পাশাপাশি তাদের মধ্যে আত্মহত্যার ঝুঁকিও ২০ বছর আগের তুলনায় এখন ৩০ শতাংশ বেশি।
বর্তমানে কোনও শিক্ষাগত বা শেখার কারণ ছাড়াই প্রতিদিন গড়ে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা সময় ফোনের পর্দায় কাটাচ্ছে শিশুরা।
অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমের বিভিন্ন প্রভাব কমিয়ে আনতে শিশুদের সহায়তা করার জন্য মা-বাবাদের উদ্দেশ্যে ড. নাগাতা বলেছেন, প্রতিটি সন্তানের চাহিদা অনুসারে একটি ‘ফ্যামিলি মিডিয়া ইউজ প্ল্যান’ বা পারিবারিক মিডিয়া ব্যবহারের পরিকল্পনা তৈরি করতে ‘আমেরিকান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিকস’-এর সুপারিশ অনুসরণ করুন।