“এই প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে আমরা বিশ্বকে দেখাব, বাংলাদেশ একটা বিনিয়োগবান্ধব দেশ।”
Published : 09 Mar 2025, 05:42 PM
দেশে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা অন্তর্বর্তী সরকারের ‘রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে রোববার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “সরকার যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশে স্টারলিংক নিয়ে আসবে; এটা সরকারের ‘পলিটিক্যাল প্রমিজ’ (রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি)।”
“এই প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে আমরা বিশ্বকে দেখাব, বাংলাদেশ একটা বিনিয়োগবান্ধব দেশ। আমরা এফডিআই (সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ) ব্রান্ডিং করার জন্য কাজটা করব।”
দেশের মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারগুলোর (আইএসপি) ইন্টারনেট সেবার মানে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “মান ভালো না হলে প্রিমিয়াম গ্রাহকরা স্টারলিংকে শিফট করবে।”
‘প্রান্তিক পর্যায়ে দ্রুতগতির মানসম্পন্ন সহজলভ্য ইন্টারনেট প্রাপ্তিতে করণীয়’ শিরোনামে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন এ সভা আয়োজন করে।
স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে উদ্দেশ করে ফয়েজ আহমদ বলেন, “স্টারলিংক যখন আসবে, তখন শহর ও গ্রামের ‘প্রিমিয়াম’ গ্রাহকরা স্টারলিংকে চলে যাবে। আপনি বলতে পারেন তার দাম পাঁচ হাজার টাকা বা অনেক বেশি হবে, আপনি তো অনেক কম টাকায় দিচ্ছেন।
“আপনার এই আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো সুযোগ নেই। এই সমাজে এমন গ্রাহক আছেন, যারা ফ্রিল্যান্সার, যারা এনজিও কিংবা ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা করেন, যারা উদ্যোক্তা এবং যারা এসএমই ব্যবসায়ী, তারা কিন্তু ভালো সেবার জন্য স্টারলিংকে চলে যাবে।”
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, “এটা আপনাদের (আইএসপি) প্রিমিয়াম কাস্টমার লেয়ারকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, এটা মোবাইল অপারেটরদেরও ক্ষতি করবে।
“এখন তাহলে এর বিরুদ্ধে আপনারা কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন। আমি মনে করি, আপনাদের এজন্য মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে হবে।”
সভায় দেশের তিন মোবাইল অপারেটর, দুই শীর্ষ এনটিটিএন কোম্পানি, আইএসপি ব্যবসায়ীদের শীর্ষ নেতা এবং তথ্য প্রযুক্তিখাতের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বেসিসের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
উপস্থিত ছিলেন মোবাইল টাওয়ার কোম্পানির প্রতিনিধি, ফ্রিল্যান্সারদের প্রতিনিধি ও আইআইজি খাতেরর ব্যবসায়ী নেতারাও।
সভায় বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কমিটির বিশেষ সহকারী ইশরাক হোসেনও অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের টেলিকম খাতের নীতিগুলোকে ‘আদিম ও ধারাবাহিকতা রক্ষার ধারণা থেকে তৈরি’ বলে মন্তব্য করেন ফয়েজ আহমদ।
তিনি বলেন, “এসব নীতি আমি সমর্থন করি না। প্রথমত এজন্য যে, এসব নীতির মূল ভিত্তি ছিল ভয়েস কলের ভিত্তিতে করা। কিন্তু টেলিকম এখন ডিজিটাল ইকোনমির সেবাখাত। যেহেতু আমরা এটা করতে পারিনি, সেজন্য পুরনো ধ্যানধারণার ওপর কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করছি।”
ফয়েজ আহমদ বেলেন, “সাড়ে তিন হাজার আইএসপি লাইসেন্স আছে। এদের মধ্যে কোনো মানসম্মত সেবা নাই।
“এখনও ঢাকার মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপের একটা কল বারবার ‘রিকানেক্ট’ হয়, যেই কলটা চালাতে খুব অল্প ডেটা লাগে। এটা একেবারে অপ্রত্যাশিত।”
তিনি বলেন, “বিটিআরসি বা কারোরই এদের ওপর নজরদারি চালানোর সক্ষমতা নেই। আমরা বলেছি, এগুলো নজরদারির আওতায় আনব।“
“আমরা সর্বোচ্চভাবে চেষ্টা করব নির্বাহী আদেশ ব্যবহার না করার। কিন্তু যদি আপনারা বিটিআরসি কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন বা বাধা দেন, তাহলে আমরা নির্বাহী আদেশ ব্যবহারে বাধ্য হব।”