“কখনও তারা আমাদের অংশীদার হবে... কখনও আমাদের গ্রাহক হতে পারে... আর আমি নিশ্চিত, এমন পরিস্থিতিও আসবে যখন তারা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হবে।”
Published : 27 Feb 2023, 02:09 PM
প্রায় ছয় দশকে প্রথমবারের মতো নিজেদের ব্র্যান্ড পরিচয় বদলের পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছে ফিনিশ ফোন নির্মাতা কোম্পানি নোকিয়া।
কোম্পানির নতুন করে বেড়ে ওঠায় বিশাল উদ্যোগের অংশ হিসেবে রোববারের ঘোষণায় নিজেদের নতুন লোগো উন্মোচন করেছে এই টেলিকম সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক।
নতুন লোগোতে পাঁচটি ভিন্ন আকারের মাধ্যমে ‘নোকিয়া’ শব্দটি গঠিত হয়েছে। আর একাধিক রঙের ওপর ভিত্তি করে এর ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্যে নিজস্ব লোগোর আইকনিক নীল রঙটিও ছেঁটে ফেলেছে কোম্পানিটি।
“এতে স্মার্টফোনের সম্পৃক্ততা ছিল, তবে এখন আমরা একটি ব্যবসায়িক প্রযুক্তি কোম্পানি।” --রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী পেক্কা লান্ডমার্ক।
গেল সোমবার বার্সেলোনায় শুরু হওয়া ‘মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস (এমডব্লিউসি)’ -এর প্রাক্কালে এই কথা বলেন তিনি। আর এই আয়োজন চলবে ২ মার্চ পর্যন্ত।
২০২০ সালে ‘ধুঁকতে থাকা’ ফিনিশ কোম্পানিটির শীর্ষপদে দায়িত্ব হাতে নেওয়ার পর তিনটি ধাপে নিজের পরিকল্পনা সাজান লান্ডমার্ক। সেগুলো হলো ‘রিসেট’, ‘অ্যাক্সেলারেট’ ও ‘স্কেল’। লান্ডমার্ক বলেন, ‘রিসেট’ ধাপ সম্পূর্ণ হওয়ায় এখন দ্বিতীয় ধাপ শুরু হচ্ছে।
নোকিয়া টেলিকম কোম্পানিগুলোর কাছে সরঞ্জাম বিক্রির ব্যবসা বাড়ানোর লক্ষ্যস্থির করলেও, এখন তারা অন্যান্য ব্যবসার কাছে পণ্য বিক্রিতে বেশি মনযোগ দিচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
“আমরা গত বছর এন্টারপ্রাইজের ব্যবসায় ভালোই (২১ শতাংশ) বৃদ্ধি দেখেছি। বর্তমানে এটি আমাদের সামগ্রিক বিক্রির আট শতাংশ, যা প্রায় দুইশ ১১ কোটি ডলারের মতো।” --বলেন লান্ডমার্ক।
“আমরা যত দ্রুত সম্ভব, একে দুই অংকের ঘরে নিয়ে যেতে চাই।”
বেশিরভাগ উৎপাদন খাতেই যেন গ্রাহকদের কাছে ব্যক্তিগত ৫জি নেটওয়ার্ক ও স্বয়ংক্রিয় কারখানার সরঞ্জাম বিক্রি করা যায়, সেই লক্ষ্যে নোকিয়ার মতো বিভিন্ন টেলিকম সরঞ্জাম নির্মাতার সঙ্গে জোট বাঁধছে প্রধান প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো।
নোকিয়ার পরিকল্পনা, নিজেদের বিভিন্ন ব্যবসায় বৃদ্ধির উপায় পর্যালোচনা ও বিকল্প উপায় বিবেচনা করা। এর মধ্যে আছে বিনিয়োগের বিষয়টিও।
“এটি খুবই স্পষ্ট সংকেত। আমরা কেবল এমন ব্যবসায় থাকতে চাই, যেখানে বৈশ্বিকভাবে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ আছে।” --বলেন লান্ডমার্ক।
স্বয়ংক্রিয় কারখানা ও ডেটা সেন্টারের দিকে নোকিয়ার অগ্রগতি থেকে ইঙ্গিত মিলছে,তারা হয়তো মাইক্রোসফট ও অ্যামাজনের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে যাচ্ছে।
“এতে একাধিক ভিন্ন ধরনের ঘটনার দেখা মিলবে, কখনও তারা আমাদের অংশীদার হবে... কখনও আমাদের গ্রাহক হতে পারে... আর আমি নিশ্চিত, এমন পরিস্থিতিও আসবে যখন তারা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হবে।”
উত্তর আমেরিকার মতো উচ্চ লাভের বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় টেলিকম সরঞ্জাম বিক্রির বাজার চাপের মুখে পড়েছে। এতে কোম্পানিগুলো তুলনামূলক কম লাভের ভারতীয় বাজারে মনযোগ দিচ্ছে। এর ফলে, কোম্পানির সাড়ে আট হাজার কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছে নোকিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী এরিকসন।
“ভারত আমাদের তুলনামূলক কম লাভ থাকা সবচেয়ে দ্রুতগতির বৃদ্ধিতে যাওয়া বাজার - এটি একটি কৌশলগত পরিবর্তন।” --বলেন লান্ডমার্ক।
তিনি আরও যোগ করেন, বছরের দ্বিতীয়ার্ধে উত্তর আমেরিকায় তুলনামূলক ভালো ব্যবসার প্রত্যাশা করছে নোকিয়া।