ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম এ নিয়ে তদন্ত করার কথা বলেছেন।
Published : 23 Jan 2025, 12:40 AM
মূল বাজারে বিক্রি হওয়া দরের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি দরে ব্লক মার্কেটে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের ১৪ হাজারের বেশি শেয়ার কেনাবেচা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
লেনদেনের সর্বোচ্চ বা সর্বনিম্ন সীমা (সার্কিট ব্রেকার) না থাকায় রোববার (১৯ জানুয়ারি) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এমন লেনদেন হয়।
স্টক এক্সচেঞ্জের মূল বাজার থেকে যেখানে সেদিন ৩৩ টাকা ৩০ পয়সায় বিদ্যুৎ সঞ্চালনকারী কোম্পানিটির শেয়ার কেনার সুযোগ ছিল, সেখানে প্রতিটি শেয়ার ৯০ টাকা দরে হাতবদল হওয়া ‘অস্বাভাবিক’ ঠেকছে অনেকের কাছে।
ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম এ নিয়ে তদন্ত করার কথা বলেছেন।
সার্কিট ব্রেকার না থাকায় শেয়ারটি ব্লক মার্কেটে উচ্চ দরে বিক্রির সুযোগ তৈরি হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, তদন্তের পর বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘‘এটি অস্বাভাবিক শেয়ার লেনদেন। এখানে ম্যানিপুলেশন হতে পারে। অভিযোগটি খতিয়ে দেখে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও বিএসইসি গঠিত টাক্সফোর্সের সদস্য ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক আল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘এটি অবশ্যই ম্যানিপুলেশন। যেখানে শেয়ারটি ৩৩ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে তিন গুণ দামে ৯০ টাকায় বেচাকেনা উদ্দেশ্য প্রণোদিত।’’
কমপক্ষে পাঁচ লাখ টাকার মূল্যমানের শেয়ার ব্লক মার্কেটে লেনদেন করা যায়।
ডিএসইর লেনদেনের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ জানুয়ারি ব্লক মার্কেটে ৯০ টাকা দরে ১৪ হাজার ২০৫টি শেয়ার একটি ট্রেডে ১২ লাখ ৭৮ হাজার ৪৫০ টাকায় কেনাবেচা হয়। মূল বাজারে ওই দিন শেয়ারটির সবশেষ দর ছিল ৩৩ টাকা ৩০ পয়সা।
দিন শেষে মূল বাজারে ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ দর কমে সেদিন শীর্ষ দর হারানোর তালিকায় ডিএসইতে প্রথম অবস্থানে ছিল পাওয়ার গ্রিড। আগের কার্যদিবসে শেয়ারটির দর ছিল ৩৯ টাকা ৬০ পয়সা।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে শেয়ারটির দর সর্বোচ্চ উঠেছিল ৫৩ টাকা ২০ পয়সা।
ডিএসই জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তার ধারণা, একজন ট্রেডার তার নিয়ন্ত্রণে থাকা বিনিয়োগকারীর পোর্টফলিও থেকে শেয়ারটি বিক্রি করেছেন তারই আরেক গ্রাহকের কাছে। নানা কারণেই তা হতে পারে। তদন্ত করলেই হয়ত আসল বিষয়টি উঠে আসবে।
রোববার জ্বালানি খাতের কোম্পানি পাওয়ার গ্রিডের লভ্যাংশ ঘোষণার তথ্য ডিএসইতে প্রকাশ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী সেদিন সার্কিট ব্রেকারের সীমা ছিল না।
কোম্পানিটি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার ঘোষণা দেয়। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান আগের চেয়ে কমে হয় ৫ টাকা ১ পয়সা।
এ হিসাবে সবশেষ আর্থিক বছরে কোম্পানিটির মোট লোকসান হয় ৪৫৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আগের বছর শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ১০ টাকা ১১ পয়সা এবং মোট লোকসান ছিল ৬২৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
একইদিন কোম্পানিটি সবশেষ প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২৪) আর্থিক হিসাব প্রকাশে করে। এতে লোকসান হয় শেয়ার প্রতি দুই টাকা ৮১ পয়সা, আগের বছরের একই প্রান্তিকে যা ছিল এক টাকা ৪২ পয়সা।