ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা ‘ক্রয় মূল্যে’ গণনার সিদ্ধান্ত হয়েছে: বিএসইসি চেয়ারম্যান

‘‘আমরা ব্যাংককে বলি কিনতে, আর ব্যাংক বলে বিক্রি করতে হবে সীমা ঠিক রাখতে," বলছিলেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2022, 02:14 PM
Updated : 1 August 2022, 02:14 PM

পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ গণনার সীমা শেয়ারের ক্রয় মূল্যের ভিত্তিতে নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, অর্থ মন্ত্রণালয় এখন আইনি দিক বিশ্লেষণ করে গেজেট বা বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার জারি করবে।

তিনি জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ে ত্রি-পক্ষীয় এক বৈঠকে নেওয়া এ সিদ্ধান্ত সাবেক গভর্নর ফজলে কবিরের সময়েই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে মতামতের জন্য পাঠানো হয়েছে। বর্তমান গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার তখন অর্থ সচিব ছিলেন।

পুঁজিবাজার বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) প্রথমবারের মত আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টকে’ রোববার তিনি পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ব্যাংকের এক্সপোজোরের বিষয়টি নিয়ে এসব তথ্য জানান।

সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী জানান, ত্রিপক্ষীয় ওই বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ও বিএসইসির প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

বর্তমানে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী কোনো ব্যাংক তার মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। ব্যাংকের এই বিনিয়োগ সীমা বা এক্সপোজারের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ হিসাব বা গণনার ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজের বাজারমূল্যকে ধরা হয়।

এ নিয়ে বেশ কিছুদিন থেকে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের অনেকেই ব্যাংকের বিনিয়োগ ক্রয় মূল্যে হিসাব করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

এ প্রসঙ্গে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘‘আমরা ব্যাংককে বলি কিনতে, আর ব্যাংক বলে বিক্রি করতে হবে সীমা ঠিক রাখতে।’’

কিছু কিছু সিকিউরিটিজের দর এক দশমাংশে নেমে গিয়েছে ক্রয় মূল্যের চেয়ে। সেক্ষেত্রে কী কোনো লাভ হবে বা এমন সিদ্ধান্ত কি কোনো গবেষণা ও দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব বিবেচনা করে নেওয়া হয়েছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘কিছু ব্যাংকের ক্ষেত্রে এমনটি হতে পারে…কিন্তু অনেক ব্যাংকেরই ক্রয় ক্ষমতা বাড়বে।’’

মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ নিয়ে জালিয়াতি, কারসাজি রোধ, জড়িতদের শাস্তি ও সুশাসনের বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘সুশাসন একার পক্ষে নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। আমি একা কতটুকু পারব? আমার কাজ কী শুধু চোর ধরা?

‘‘ভালো-খারাপ সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হয়। কেউ খারাপ কাজ করলে চেষ্টা করতে হয়, তাকে যতটা সম্ভব ঠিক পথে নিয়ে আসা। এখন আমাকে যদি বলেন- একে ধরেন, ওকে জরিমানা করেন, কম জরিমানা করলেন কেন, বেশি করে জরিমানা করেন, ওমুককে বের করে দেন- এটাই কী কেবল সুশাসন?’’

এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ফ্লোর প্রাইস বাধ্য হয়ে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভালো মানের ও সরকারি কোম্পানির শেয়ার তালিকাভুক্তি নিয়ে চেষ্টা অব্যাহত আছে।

আগামী সপ্তাহে এটিবি (অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড) চালু হওয়া ও শিগগির ট্রেজারি বিল লেনদেনের বিষয়টি শুরু হওয়ার কথা জানান বিএসইসি সভাপতি।

সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমান ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।