ডিএসইএক্স বাড়লেও লেনদেন কমেছে।
Published : 02 Jul 2024, 03:16 PM
নতুন অর্থবছরের প্রথম লেনদেনে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দিনভর ওঠানামা শেষে উত্থানে ফিরেছে; আগের দিনের চেয়ে সূচক বেড়েছে প্রায় ১২ পয়েন্ট।
বাজেটে মুনাফার ওপর করারোপসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গত বেশ কিছুদিন থেকে নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইএক্স।
নতুন ২০২৪-২৫ অর্থবছর শুরু হয়েছে সোমবার। ব্যাংক হলিডের কারণে সেদিন পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার অর্থবছরের প্রথম দিন লেনদেন শুরুও হয়েছিল দরপতন দিয়ে।
পরে সূচকের উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে দিন শেষে ঘুড়ে দাঁড়াতে পেরেছে ডিএসইর প্রধান সূচক।
চলতি অর্থবছর থেকে পুঁজিবাজার থেকে ৫০ লাখ টাকার বেশি মুনাফা (ক্যাপিটাল গেইন) হলে কর দিতে হবে ১৫ শতাংশ। এ নিয়ে দেশের দুই পুঁজিবাজার বেশ কিছু দিন থেকেই পতনের মধ্যে ছিল। এটি তুলে নেওয়া হতে পারে এমন গুজবে মাঝে সূচকও বাড়ে। তবে শনিবার পাস হওয়া অর্থবিলে তা বাদ দেওয়া হয়নি। পরদিন রোববার সূচকে বড় পতন হয়।
অপরদিকে তলিকাভুক্ত কোম্পানির বা তহবিলের উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার, পরিচালকদের শেয়ার ও প্লেসমেন্ট শেয়ার বিক্রি থেকে আয়ের উপর এখন থেকে উৎসে কর দিতে হবে ১০ শতাংশ, আগে যা ছিল ৫ শতাংশ হারে।
দিনের লেনদেন পর্যবেক্ষণে ডিএসইর ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, বাড়তি কর নিয়ে শঙ্কা থাকলেও বিনিয়োগকারীরা সেই চাপ সামলে ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বলে মনে হয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “গত এক মাস ধরে তো আলোচনা হয়েছে বাড়তি কর নিয়ে। কর না বাড়িয়ে তুলে নেওয়ার দাবি ছিল। শেষ পর্যন্ত হয়নি।
‘‘বিনিয়োগকারীরা বুঝতে সক্ষম হয়েছন যে, এরকম অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যেই মুনাফাসহ বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে চাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। তারাও কৌশলী হচ্ছেন।”
তার মতে, ‘‘করহার বাড়ানো বা কমানোর চেয়ে বেশি দরকার বাজারের উপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা। সেই আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারলে বিনিয়োগ আরও বাড়বে।”
ওঠানামায় সূচক
দিনের প্রথম কয়েক ঘণ্টায় ওঠানামার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়া ডিএসইএক্স বিক্রির চাপে বেলা ১টা ৯ মিনিটে নেমে যায় ৫ হাজার ৩১৫ পয়েন্টে। এই সময়ে আগের দিনের চেয়ে সূচক হারিয়েছিল ১৩ পয়েন্ট। সেখান থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে লেনদেন ও সূচকের গতি। এভাবে বেলা ২টা ১৯ মিনিটে সূচক সর্বোচ্চ উঠেছিল ৫ হাজার ৩৫১ পয়েন্ট।
সবশেষ গত ৩০ জুন প্রধান সূচক ৫ হাজার ৩২৮ পয়েন্টে লেনদেন শেষ করেছিল।
এদিন বিক্রির চাপ সামলাতে না পেরে ডিএসইর অন্য দুই সূচকও ঋণাত্বক প্রবণতায় লেনদেন শেষ করে। শরীয়াহ সূচক ডিএসইএস আগের দিনের চেয়ে ২ দশমিক ২৬ পয়েন্ট হারিয়ে লেনদেন শেষ করে ১ হাজার ১৭৭ পয়েন্টে।
ডিএস৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট হারিয়ে লেনদেন শেষ করে এক হাজার ৯০৪ পয়েন্টে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয় ৪৪০ কোটি ৬৩ লাখ টাকার, যা গত আট দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। এরমধ্যে ব্লক লেনদেন হয় ৩৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ারের। সবশেষ রোববার লেনদেন হয়েছিল প্রায় ৭১৩ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে দর এগিয়ে ছিল ২১৩ টির, কমে ১২৫টির ও আগের দরে লেনদেন হয় ৫৬টি কোম্পানির।
উত্তান পতনের মধ্যে লেনদেনে এদিন ডিএসই বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা; দিন শেষে মূলধনের পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৬০ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা।
এদিন লেনদেন বাড়াতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে ওষুধ খাত। মোট লেনদেনের প্রায় ২২ শতাংশ অবদান রাখা খাতটির অধিকাংশ শেয়ারের দর ইতিবাচক ছিল।
এরপরই লেনদেনে অবদান ছিল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের। এ খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে। লেনদেনে ১১ শতাংশের বেশি ভূমিকা রাখা বস্ত্র খাতের অর্ধেক কোম্পানির শেয়ারদর ইতিবাচক ধারায় ছিল।