‘যত কঠিন আবহাওয়ায় পরিশ্রম করব, তত অনুপ্রাণিত, শক্তিশালী হব’

প্রচণ্ড গরমে প্রস্তুতি নেওয়া কঠিন হলেও নিবেদনে ঘাটতি কেউ রাখছে না বলে মনে করেন এলিটা কিংসলে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 June 2023, 01:29 PM
Updated : 6 June 2023, 01:29 PM

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ সামনে রেখে যথারীতি প্রচণ্ড গরমের মধ্যে দ্বিতীয় দিনের প্রস্তুতি সেরেছে বাংলাদেশ। অসহনীয় তাপমাত্রা খেলোয়াড়রা সয়ে নিচ্ছেন নিজের ও দলের প্রয়োজনে। এলিটা কিংসলে মনে করেন, কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে নেওয়া প্রস্তুতি তাদেরকে করছে আরও অনুপ্রাণিত। 

বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের অনুশীলন করেছে দল। প্রস্তুতির ফাঁকে পায়ে বরফ নিতে দেখা যায় কিংসলেকে। আবাহনীর এই ফরোয়ার্ড অবশ্য জানালেন চোট নয়, হালকা ব্যথা অনুভব করার কারণে বরফ নিয়েছিলেন তিনি। গরমের মধ্যে অনুশীলন বলে কিংসলে বিরক্ত নন মোটেও। 

“খুবই গরম। নিঃশেষ করে দিচ্ছে। আপনারাও দেখতে পাচ্ছেন, আবহাওয়ার কারণে প্রচণ্ড ঘামছি। কিন্তু আমাদের প্রস্তুতি নিতেই হবে, এটাই চ্যালেঞ্জিং। কঠোর পরিশ্রম সবসময়ই একটা দলকে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেয়। আমি মনে করি, দলের সবাই কঠোর পরিশ্রম করছে। আমার মনে আছে, লিগের শুরুতে আমরা যখন খেলতে নেমেছিলাম, আমরা হাঁটছিলাম, কেননা প্রচণ্ড গরম। একই পরিস্থিতি এখন, কিন্তু কিছু করার নেই। আমরা যত কঠিন আবহাওয়ার মধ্যে পরিশ্রম করব, তত বেশি অনুপ্রাণিত হব। শক্তিশালী হবো। 

“পায়ে কোনো সমস্যা নেই। যখনই আমরা কোথাও একটু ব্যথা অনুভব করি, তখনই বরফ লাগাই। ব্যথা চলে যায়। এখন ব্যথা নেই। জাতীয় দলের ক্যাম্প সবসময় ভিন্নরকম। এখানে কোনো কিছু নিয়ে অভিযোগের সুযোগ নেই, অজুহাত দেখানো যাবে না। ভেতরে-বাইরে সবকিছুতে সাচ্ছ্বন্দ্যবোধ করছি। আমি মনে করি, সবকিছু ঠিকঠাক যাচ্ছে।” 

গত সাফেও আশা জাগিয়ে গ্রুপ পর্ব পেরুতে পারেনি বাংলাদেশ। এবার সে বৃত্ত ভাঙতে মরিয়া দল। নাইজেরিয়ান থেকে বাংলাদেশি হয়ে যাওয়া ফরোয়ার্ড কিংসলের কথাতেও ফুটে উঠল তা। তবে লক্ষ্যপূরণে সম্মিলিত লড়াই যে গুরুত্বপূর্ণ, তা মনে করিয়ে দিলেন ৩৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। 

“সাফ নিয়ে আমি যেটা বলতে পারি, সেটা হচ্ছে, সম্মিলিতভাবে আমাদের সামনে অনেক বড় একটা মিশন এটা। সাফ অনেক বড় প্রতিযোগিতা। গত আসরের কথা মনে আছে, আমরা গ্রুপ পর্ব পেরুতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারিনি। এ কারণে এবার আমরা আরও কঠোর পরিশ্রম করছি, যাতে এবার পার হতে পারি।” 

লিগ ও ফেডারেশন কাপে টানা খেলার মধ্যে থাকার ফলে খেলোয়াড়দের ক্লান্তি পেয়ে বসা অস্বাভাবিক নয়। গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর কথাতেও উঠে এলো ক্লান্তির বিষয়টি। তবে সবাই প্রস্তুতিতে সেরাটা নিংড়ে দিচ্ছে বলে মনে করেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরার এই প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক। 

“অবশ্যই অনেক গরম। তারপরও সবাই মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আজকে আমাদের টিম শেপ, কিভাবে আক্রমণে উঠবে, প্রতিপক্ষ আক্রমণ করলে কিভাবে ডিফেন্ডাররা ডিফেন্স করবে, এগুলো নিয়ে কোচ কাজ করেছে। সবাই আজকে নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। কোচ যে নির্দেশনা দিয়েছেন, আমরা সবাই যদি সেভাবে কাজ করতে পারি, আশা করি আমরা আরও উন্নতি করতে পারব।” 

“মাত্র কয়েকদিন আগে লিগের বিরতি হয়েছে, সবাই খেলার মধ্যে ছিল, স্বাভাবিকভাবে একটু ক্লান্ত। অনেক গরমের মধ্যে খেলতে হয়েছে, ক্লান্ত, কিছু প্লেয়ারের চোট আছে, রিহ্যাব করতে হবে। জাতীয় দলের ট্রেনিংয়ে ইনটেনসিটি বেশি থাকে, সেক্ষেত্রে গরমটা আমাদের জন্য একটু সমস্যা হচ্ছে, তারপরও খেলোয়াড়রা সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছে। 

ঢাকায় প্রস্তুতি সেরে আগামী ১০ জুন কম্বোডিয়া রওনা দেবে বাংলাদেশ। সেখানে ১৫ জুন স্বাগতিকদের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলে উড়াল দিবে ভারতের উদ্দেশে। ২১ জুন বেঙ্গালুরুতে শুরু হবে সাফ। মূল লড়াই শুরুর আগে গুছিয়ে ওঠার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাবে বলে মনে করেন জিকো। 

“আমার মনে হয়, আগের সাফের চেয়ে এবার প্রস্তুতির জন্য আমরা বেশি সময় পাচ্ছি। সামনে একটা প্রীতি ম্যাচও আছে, কম্বোডিয়ায় গিয়ে যেহেতু আমরা প্রস্তুতির সময় পাব, ওদের বিপক্ষে একটা প্রস্তুতি ম্যাচও খেলব, এরপর ভারতে গিয়ে প্রস্তুতির সময় পাব, সবাই যদি লম্বা সময়টা কাজে লাগাতে পারি, তাহলে দল হিসেবে আমরা ভালো করব।”