সেনেগালকে গুঁড়িয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালে ইংল্যান্ড

গ্রুপ পর্বে তিনটি অ্যাসিস্ট করা হ্যারি কেইন এবার পেলেন জালের দেখা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2022, 07:59 PM
Updated : 4 Dec 2022, 07:59 PM

ছন্দ খুঁজে পেতে অনেকটা সময় লেগে গেল ইংল্যান্ডের। তবে জর্ডান হেন্ডারসনের গোলের পর চেনা রূপে ফিরল তারা। খানিক বাদে গোল খরা কাটালেন হ্যারি কেইন। সেনেগালকে অনায়াসে হারিয়ে কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠল গ্যারেথ সাউথগেটের দল।

আল খোরের আল বাইত স্টেডিয়ামে রোববার রাতে শেষ ষোলোর ম্যাচটি ৩-০ গোলে জিতেছে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয়ার্ধে তাদের তৃতীয় গোলটি করেন বুকায়ো সাকা।

প্রথম দিকে দারুণ কয়েকটি প্রতি-আক্রমণে ইংল্যান্ডের রক্ষণে ভাঙন ধরানো সেনেগাল দ্বিতীয়ার্ধে তেমন একটা লড়াই করতে পারেনি। লাগাম হাতে থাকায় এসময় কেইনদের মাঝেও ছিল না গোলের জন্য মরিয়া চেষ্টা।

গ্রুপ পর্বে আসরে সর্বোচ্চ ৯ গোল করা ইংল্যান্ড এ দিনও শুরু থেকে বল দখলে রেখে আক্রমণ শাণানোর চেষ্টা করে। যদিও প্রথম ত্রিশ মিনিটে পজেশন রাখতে পারলেও তাদের আক্রমণে কোনো ধার ছিল না।

এই সময়ে গোলের উদ্দেশ্যে তারা একটি মাত্র শট নিতে পারে, সেটা যদিও প্রতিপক্ষকে ভাবাতে পারেনি। বরং ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগ তৈরি করে আফ্রিকান চ্যাম্পিয়নরা।

২৩তম মিনিটে কাছ থেকে বোলায়ে দিয়ার ভলি জন স্টোনসের হাঁটুতে লেগে প্রতিহত হয়। বিপদের ওখানেই শেষ নয়, বল পেয়ে যান ইসমাইলা সার; কিন্তু গোলরক্ষকের চ্যালেঞ্জের মুখে সার খুব কাছ থেকে উড়িয়ে মারলে হাঁফ ছাড়ে ইংল্যান্ড।

এই আক্রমণে নাটকীয়তা ছিল আরও; প্রথম দফায় বল স্টোন্সের পায়ে লেগে তার হাতে লাগলে পেনাল্টির আবেদন করে সেনেগাল। যদিও রেফারি সাড়া দেয়নি, ভিএআরেও বাতিল করে দেওয়া হয়।

৩২তম মিনিটে আবারও ইংল্যান্ডের রক্ষণ ভেঙে বক্সে ঢুকে পড়েন দিয়া, নেন জোরাল শট। এক হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। দুই দল মিলিয়ে ম্যাচে এটাই ছিল লক্ষ্যে প্রথম শট।

ছয় মিনিট পর লক্ষ্যে নেওয়া প্রথম শটেই এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। কেইনের পাস ধরে বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে জুড বেলিংহ্যাম বল বাড়ান পেনাল্টি স্পটের কাছে। বিনা বাধায় প্লেসিং শটে অনায়াসে বাকি কাজ সারেন হেন্ডারসন।

গোলের দেখা পেয়ে যেন ছন্দও খুঁজে পায় ইংল্যান্ড। দুই মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারত; কিন্তু ভালো পজিশনে বল পেয়েও জোরাল শটে আকাশে মারেন কেইন।

রাশিয়া বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুট জয়ী কেইন অবশেষে গোলের দেখা পান প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে।

নিজেদের সীমানায় প্রতিপক্ষ বল হারানো মাত্র চোখের পলকে আক্রমণে ওঠে গতবারের সেমি-ফাইনালিস্টরা। মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের লম্বা করে বাড়ানো বল ধরে বাঁ দিক দিয়ে আরেকটু এগিয়ে ফিল ফোডেন পাস দেন ডান দিকে। কেইন বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে ওয়ান-অন-ওয়ানে জোরাল শটে এদুয়া মঁদিকে পরাস্ত করেন।

এবারের গ্রুপ পর্বে তিনটি অ্যাসিস্ট করা কেইনের বিশ্বকাপে মোট গোল হলো ৭টি। রাশিয়া বিশ্বকাপে আসরের সর্বোচ্চ ৬ গোল করেছিলেন তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে অনেক দূর থেকে চেষ্টা করেন কেইন। তবে তার জোরাল শট ঠেকাতে তেমন বেগ পেতে হয়নি মঁদির।

এক মিনিট পরই ব্যবধান আরও বাড়িয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় ইংল্যান্ড। বাঁ দিক দিয়ে শাণানো আক্রমণে সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডারের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে বক্সে বল বাড়ান ফোডেন। আর দারুণ ফ্লিকে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন সাকা।

বিশ্বকাপে ২১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের গোল হলো তিনটি। আসরের শুরুতে ইরানের বিপক্ষে ৬-২ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন তিনি।

বাকি সময়ে সেনেগাল মাঝেমধ্যে পাল্টা আক্রমণে চেষ্টা করেছে, গোলের উদ্দেশ্যে শটও নিয়েছে, যদিও তা একটুও পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি পিকফোর্ডকে।

আগামী শনিবার এই মাঠেই ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নামবে ইংল্যান্ড। পোল্যান্ডকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে দিদিয়ে দেশমের দল।