‘এই ট্রফি মোহামেডানকে এগিয়ে নেবে’

কেবল মোহামেডানের নয়, দেশের ফুটবলের জয় হয়েছে বলেও মনে করেন আলফাজ আহমেদ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2023, 01:25 PM
Updated : 30 May 2023, 01:25 PM

ডাগআউটে কখনও তিনি দুই গোল হজমের বিষাদে বিমর্ষ, কখনও সমতা ফেরার উচ্ছ্বাসে উদ্বেলিত। দুঃশ্চিন্তায় এই মাথায় হাত দিলেন, তো পরক্ষণেই গোলের আনন্দে উড়লেন। ম্যাচজুড়েই মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডাগআউটে আলফাজ আহমেদ ধরা দিলেন এমন নানা ভঙ্গিতে। শেষ পর্যন্ত বিজয়ীর চওড়া হাসি নিয়ে বললেন, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে জয়টি এগিয়ে নেবে তার দল মোহামেডানকে।

কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ফেডারেশন কাপের ফাইনালে টাইব্রেকারে আবাহনীকে ৪-২ গোলে হারায় মোহামেডান। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা আট গোলের রোমাঞ্চ ছড়িয়ে শেষ হয় ৪-৪ সমতায়।

সোনালি দিন হারিয়ে ফেলা মোহামেডান ফুটবলের আঙিনায় ধুঁকছে অনেক বছর ধরে। শিরোপা খরা চলছিল সেই ২০১৪ সাল থেকে। এ মৌসুমের মাঝপথে শফিকুল ইসলাম মানিককে বিদায় করে দিয়ে আলফাজের হাতে দায়িত্ব তুলে দেয় মোহামেডান কর্তৃপক্ষ। সাবেক এই তারকা স্ট্রাইকারের হাত ধরেই মোহামেডান একটু একটু করে পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াচ্ছে।

১৪ বছর পর মোহামেডানকে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে তোলার পর আলফাজ বলেছিলেন, একটি জয় মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে তাদের। ম্যাচ শেষে সেই একই সুর তার কণ্ঠে বাজল। নিজের খেলোয়াড়ী জীবনে আবাহনীর বিপক্ষে পাওয়া জয়ের চেয়ে তাই এবারের জয়কে এগিয়ে রাখছেন তিনি।

“এর আগেও আবাহনীর বিপক্ষে এমন ফাইনাল মোহামেডান খেলেছে, আমি নিজেও সেই ম্যাচে খেলেছি, কিন্তু আমি সেই ম্যাচটাকে এগিয়ে রাখব না। বাংলাদেশের ফেুটবলে মোহামেডান আবাহনীর লড়াই… এই ম্যাচের জয়ে মোহামেডানের জয় হয়নি, জয় হয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলের। অবশ্যই এটা আমার জীবনের স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে। খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম, কোচ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হলাম। স্মৃতি হয়ে থাকবে। এই ট্রফির মাধ্যমে মোহামেডান এগিয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।”

দুই গোল পিছিয়ে থেকে বিরতিতে গিয়েছিল মোহামেডান। বিরতি শেষে তার ফিরল আড়মোড় ভেঙে। চার গোল উপহার দিলেন সুলেমানে দিয়াবাতে। টাইব্রেকারের আগে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ছেন দারুণসব সেভ করা প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক সুজন হোসেন। তার বদলি নেমে আলো ছড়ালেন আহসান আহমেদ বিপু। সাফল্যের কৃতিত্ব তাই দলকেই দিলেন আলফাজ।

“বিরতির সময় ড্রেসিংরুমে ছেলেদের বলেছি তোমরা মাথা ঠাণ্ডা রেখে খেলো। ফরমেশনে পরিবর্তন এনেছিলাম। তারা সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে। প্লেয়ার বদলই আমি মনে করি পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। সুজনকে বদল করার সময় একটু টেনশন ছিল । তবে আমাদের আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল বিপুকে টাইব্রেকারে নামানোর।”

“আজকে মোহামেডানের খেলাটা আমার কাছে মনে হয়েছে বিশাল একটা ফুটবল ম্যাচ। যেভাবে ব্যাকফুটে থেকে সমতায় ফেরা, এগিয়ে যাওয়া, আবার সমতা ফেরা, আবার লিড নেওয়া, সমতা ফেরা, টাইব্রেকারে যাওয়া, আসলে সব মিলিয়ে বোঝা যাচ্ছিল না ম্যাচটা কে জিতবে। আমার মনে হয়, প্লেয়াররা যে কমিটেড ছিল, সুলেমান দিয়াবাতের পারফরম্যান্স অসাধারণ, মুজাফ্ফরভের হাত ভেঙে গেলেও সে দলের জন্য খেলেছে, আসলে আমি বলব-এই প্রশংসার দাবিদার খেলোয়াড়রা। তারা তাদের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে মোহামেডানের জন্য খেলেছে এবং চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।”