ভারতের বিপক্ষে জয় মেয়েদের অনেক ত্যাগের ফল, বললেন বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন।
Published : 13 Sep 2022, 11:32 PM
শুরুর ১৫ মিনিট শাণাতেই হবে আক্রমণ, ভারত ম্যাচ নিয়ে এমন ছক ছিল গোলাম রব্বানী ছোটনের। সাবিনা-কৃষ্ণা-স্বপ্নারা তাই করলেন। গোলও মিলল ১২ মিনিটে। আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটতে থাকা বাংলাদেশকে পরে আর কোনোভাবে আটকে রাখতে পারেনি ভারত। দারুণ ফুটবল খেলে মেয়েরা ভারতের বিপক্ষে প্রথম জয়ের গল্প লিখল। বাংলাদেশ কোচ ছোটন তাই শিষ্যদেরকে ‘কুর্নিশ’ করতে দ্বিধা করলেন না একটুও।
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে ৩-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ। জোড়া গোল উপহার দেন সিরাত জাহান স্বপ্না, একবার জালের দেখা পান কৃষ্ণা রানী সরকার।
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে আগের ১০ ম্যাচের মধ্যে ভারতের বিপক্ষে একটি ড্র ছিল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ প্রাপ্তি। ২০১৬ সালে শিলিঁগুড়ির সাফে গ্রুপ পর্বের দেখায় গোলশূন্য ড্র হয়েছিল ম্যাচটি। ৯ হারের হতাশায় ভরা পরিসংখ্যানের পাতায় এদিন প্রথম জয়ের ছবি আঁকলেন সাবিনা-কৃষ্ণারা। ছোটনও শিষ্যদের কৃতজ্ঞতায় বাঁধলেন।
“মেয়েদেরকে স্যালুট। গত ৪-৫ বছর ধরে তারা কঠোর পরিশ্রম করেছে। তারা ইতিহাস গড়েছে। আগেও বলেছি বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবলের ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে এবং আজকে মেয়েরা তাদের সামর্থ্য দেখিয়েছে।”
“মেয়েদের প্রতি আমার আসলে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। ওরা কমিটমেন্ট করেছিল দেশের জন্য, বাবা-মা, পরিবারের জন্য ভালো ফুটবল খেলবে এবং তারা খেলেছেও। আমরা সেমি-ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছি, তাই আমাদের হারানোর কিছু ছিল না। বড় ম্যাচের টেম্পারমেন্ট বোঝা এবং ৯০ মিনিট একই ছন্দে খেলা-এটা একটু পরখ করে নেওয়া এবং সেটা করে নিতে পেরেছি।”
পরিবার-পরিজন ছেড়ে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ভবনের চার তলায় থাকেন স্বপ্না-শিউলি আজিমরা। এই ক্যাম্পই তাদের ঘর-বাড়ি, সবকিছু। একসঙ্গে থাকার সুবাদে মেয়েদের মধ্যে বোঝাপড়া দারুণ। ভারত ম্যাচে অনুক্ষণ তা ফুটে উঠেছে। ছোটনও জানালেন অনেক ত্যাগের ফল এই জয়।
“(এই জয়ের নেপথ্যে) কঠোর পরিশ্রম, কঠোর পরিশ্রম এবং কঠোর পরিশ্রম। এই মেয়েরা অনেক পরিশ্রম করেছে, অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে, দীর্ঘদিন তারা পরিবার-পরিজন ছেড়ে বাফুফে ভবনে থাকছে এবং আপনারা যারা বাফুফেতে আসেন, আপনারাও দেখেন, প্রতিদিন তারা কঠোর পরিশ্রম করছে।”
“এখানে আসার পরও আমরা বলে আসছি, এই দলটা একটা পরিবর্তনের আভাস দিবে, সেটাই তারা করতে পেরেছে। আজকে পরিকল্পনা ছিল শুরুর ১৫ মিনিট আক্রমণ করা, মেয়েরা সেটা করেছে। গোল পাওয়ার পর তাদের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গিয়েছিল।”
এই জয়ে বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবলের নতুন যুগের শুরু হলো কিনা-এমন প্রশ্নের উত্তরও ছোটন দিয়েছেন ছোট করে।
“অবশ্যই।”
২০২০ সালের পর ফের ভারতের জালে গোল পাওয়া কৃষ্ণা জানালেন দলীয় প্রচেষ্টায় এসেছে বহু কাঙ্খিত এই জয়। চলতি সাফে আগের দুই ম্যাচ গোল না পাওয়ার হতাশা ভারত ম্যাচে ভুলতে পেরে দারুণ খুশি ২১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।
“প্রথমত, এটা অনেক টিম-ওয়ার্কের ফল। বাংলাদেশে আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি, তার প্রতিফলন আজকে ঘটেছে। এমনকি আমাদের ইচ্ছা ছিল, এইবারই কিছু করার। এবার ভারতকে হারানোর লক্ষ্য ছিল এবং আমরা সেটা পেরেছি।”
“গত দুই ম্যাচে যখন আমি গোল করতে পারিনি, কিন্তু দল জেতায় আমি খুব খুশি ছিলাম। লক্ষ্য ছিল ভারত ম্যাচে গোল করার। এটা আমার বড় লক্ষ্য ছিল এবং আমি সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। গোল করেছি এবং গোল করাতে পেরেছি, অনেক আনন্দ লাগছে।”