গোলের ধারা ধরে রাখতে চান রাকিব

ভুটানের বিপক্ষে দুরূহ কোণ থেকে অসাধারণ গোল করেন এই ফরোয়ার্ড, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গোল পেলেন তিনি টানা দুই ম্যাচে।

সবশেষ কবে এমন দৃশ্য দেখা গেছে? বাংলাদেশের কোনো ফুটবলার গ্যালারিতে এসে বসেছেন, ভিনদেশি সাংবাদিকরা তাকে জেঁকে ধরেছেন সাক্ষাৎকার নিতে! রাকিব হোসেনের সৌজন্যে এমন দৃশ্য দেখা গেল বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে।

ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে রাকিবকে তুলে নেন হাভিয়ের কাবরেরা। পা ছিলে যাওয়ায় বাকি সময় তাকে আর খেলাননি কোচ। এরপরই রাকিব চলে আসেন গ্যালারিতে। তবে মাঠ ছাড়ার আগে কাজের কাজটি সেরে এসেছেন বলে তিনি ছিলেন আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে।

বঙ্গবন্ধু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভুটানের বিপক্ষে বুধবার বাংলাদেশের ৩-১ ব্যবধানের জয়ে তৃতীয় গোলটি করেন রাকিব। সেই গোলটি মনে রাখার মতো। দুরূহ কোণ থেকে দারুণ শটে বল জালে জড়ান তিনি। এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচ জালের দেখা পেলেন ২৪ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।

গোল খরায় ভোগার অপবাদ যেখানে বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডদের নিত্যসঙ্গী, সেখানে টানা দুই ম্যাচে গোল রাকিবের। মালদ্বীপের মতো ভুটানের রক্ষণেও গতি দিয়ে ভীতি ছড়িয়েছেন, নজর কেড়েছেন ভিনদেশিদের। তাই গ্যালারিতে তাকে পেয়েই আলাপ জমালেন তারা। এর এক ফাঁকে গ্যালারিতে আসা এক বাংলাদেশী দম্পত্তির ছবি তোলার দাবিও মেটালেন রাকিব।

বাংলাদেশের ফুটবলের ঘুরে দাঁড়ানোর পথে টুকরো টুকরো এই ছবিগুলো আসলেই আশা জাগানিয়া। রাকিব অবশ্য এমন বৃহত্তর ছবিগুলো নিয়ে ভাবছেন না। ভুটানকে হারিয়ে ১৪ বছর পর সাফের সেমি-ফাইনালে ওঠা নিয়েই যত স্বস্তি, আনন্দ তার।

“বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য এটা দরকার ছিল। খুব করে দরকার ছিল। খেলোয়াড়রা সবাই একত্রে চেষ্টা করছে। মাঠে সবাই পরিশ্রম করছে। সবার পরিশ্রমের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। তবে এখনো কাজ বাকি। সেমি-ফাইনালের ম্যাচ কঠিন হবে।  ইনশাল্লাহ, সেরা ফুটবল খেলতে চাই।”

গোল করে দ্বাদশ মিনিটেই বাংলাদেশকে ভড়কে দিয়েছিল ভুটান। তবে দ্রুতই ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়ায় দল। প্রথমার্ধেই তিন গোল করে নেয় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ। ঘুরে দাঁড়ানোর তৃপ্তি, নিজে গোলের ধারায় থাকতে পারার আনন্দ সবই এখন সঙ্গী রাকিবের।

“আমরা চেয়েছিলাম প্রথম থেকেই ভুটানকে চেপে রাখতে। তাই আক্রমণে মনোযোগ ছিল। তবে (পিছিয়ে পড়ার পর) ম্যাচে ফিরতে পেরেছি এটাই আসল ব্যাপার। আমি ফরোয়ার্ড, গোল করার জন্যই মাঠে নামি। গোল পেলে তো ভালোই লাগে। এই ধারা ধরে রাখতে চাই।”

ভুটান ম্যাচের আরেক গোলদাতা শেখ মোরসালিন। এই তরুণ মিডফিল্ডারও রাকিবের মতো জালের দেখা পেলেন টানা দুই ম্যাচ। নিজের গোলের চেয়ে দলের জয়ে বেশি আনন্দ অনুভব করছেন তিনি।

“গোল করছি, ব্যক্তিগতভাবে আমি সন্তুষ্ট। তবে দলকে জেতানো মূল কাজ ছিল। সেটা করতে পেরেছি বলে আনন্দ আরও বেশি হচ্ছে।”