সেরা সাফল্যকে ছুঁয়ে নতুন ইতিহাসের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

প্রথম সোনার পদক ধরা দিয়েছিল গেমসের দ্বিতীয় দিনে। তৃতীয় দিনে এলো আরও তিনটি। এরপর খরা শুরু। দিন যায়, সোনা আর আসে না। অবশেষে সেই হতাশার প্রহর পেরিয়ে এলো আলো ঝলমলে দিন। তিন দিন পর এক দিনেই মিলল তিন সোনা। সাত দিনে সাত সোনার পদক জিতে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে গেল দক্ষিণ এশিয়ান (এসএ) গেমসে নিজেদের গত আসরের সাফল্যকে।

কাঠমান্ডু-পোখারার এসএ গেমসে গত আসরের সাফল্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার আনন্দে ভাসছে বাংলাদেশ। স্পর্শ করেছে দেশের বাইরের গেমসে নিজেদের সেরা সাফল্যের কীর্তিকেও। হাতছানি এবার নতুন উচ্চতায় ওঠার। 

২০১৬ সালে ভারতের শিলং ও গুয়াহাটির আসরে ৪টি সোনা, ১৫টি রুপা ও ৫৬টি ব্রোঞ্জসহ ৭৫টি পদক জিতেছিল বাংলাদেশ। এবার ৪৬২ অ্যাথলেট নিয়ে নেপালে নোঙর ফেলা বহরের লক্ষ্য ছিল গতবারের সোনার পদকে ছাপিয়ে যাওয়া। সপ্তম দিনে হয়ে গেলো সেটা।

দেশের বাইরে আগের সেরা সাফল্য ছিল ১৯৯৫ সালে, মাদ্রাজ গেমসে। সেবার ৭টি সোনা, ১৭টি রুপা ও ৩৪টি ব্রোঞ্জসহ ৫৮টি পদক পেয়েছিল বাংলাদেশ। এবার এরই মধ্যে ৭ সোনা জয়ী বাংলাদেশের সামনে আছে আরও তিন দিন।

দেশের মাটিতে এসএ গেমসে অবশ্য আরও বেশি সাফল্যের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৮৫ সালে প্রথমবারের মতো এসএ গেমসে আয়োজন করে অর্জন ছিল ৯টি সোনা। ১৯৯৩ সালে দ্বিতীয় দফার আয়োজনের প্রাপ্তি ছিল ১১টি। আগের দুই আসরে ছাপিয়ে ২০১০ সালে ১৮টি সোনার পদক জিতেছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ।

এবারের আসরের দ্বিতীয় দিনে তায়কোয়ান্দো ইভেন্টে ছেলেদের পুমসে ২৯ (প্লাস) বয়স ক্যাটাগরিতে ৮ দশমিক ২৮ ও ৭ দশমিক ৯৬ স্কোর গড়ে সোনা জিতেন দিপু চাকমা। বাংলাদেশও পায় প্রথম সোনার পদকের দেখা।

পরের দিন তিনটি সোনা আসে কারাতে থেকে। পুরুষ একক কুমিতে অনূর্ধ্ব-৬০ কেজিতে আল আমিন, কুমিতে মেয়েদের অনূর্ধ্ব-৫৫ কেজিতে মারজান আক্তার প্রিয়া এবং কুমিতে অনূর্ধ্ব-৬১ কেজিতে হুমায়রা আক্তার অন্তরা সোনা জিতেন। বাংলাদেশ সেদিনই ছুঁয়ে ফেলে গুয়াহাটি-শিলংয়ের আসরকে।

পোখারায় শনিবার মেয়েদের ৭৬ কেজি ওজন শ্রেণিতে স্ন্যাচ ও ক্লিন অ্যান্ড জার্ক মিলিয়ে ১৮৫ কেজি তুলে মাবিয়া আক্তার সীমান্ত সোনা জিতলে গত আসরকে ছাপিয়ে যায় বাংলাদেশ।

পরে ভারোত্তোলনে ছেলেদের ৯৬ কেজি ওজন শ্রেণিতে স্ন্যাচ ও ক্লিন অ্যান্ড জার্ক মিলিয়ে ২৬২ কেজি তুলে জিয়ারুল ইসলাম এবং ফেন্সিংয়ে মেয়েদের সেইবার এককে ফাতেমা মুজিব সেরা হলে মাদ্রাজের সাফল্যকে স্পর্শ করে বাংলাদেশ। আরেকটি সোনার পদক পেলেই এসএ গেমসে নিজেদের সাফল্যের নতুন অধ্যায় রচনা করবে বাংলাদেশ।