রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে একের পর এক হোঁচটে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে আর্জেন্টিনা। সবশেষ পেরুর সঙ্গে ঘরের মাঠে ড্র করে পয়েন্ট টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে নেমে গেছে দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
বিশ্বকাপ ভাগ্য নিজেদের হাতেই রাখতে একুয়েডরের বিপক্ষে জিততেই হবে আর্জেন্টিনাকে। তবে মহাগুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচে দল শুধু মেসির উপর নির্ভর করতে পারে না বলে জানিয়েছেন সাম্পাওলি।
বাছাইপর্বে মেসিকে ছাড়া আট ম্যাচ খেলে মাত্র ৭ পয়েন্ট পায় আর্জেন্টিনা। বার্সেলোনা তারকাকে নিয়ে নয় ম্যাচ খেলে ১৮ পয়েন্ট পেয়েছে দলটি।
এদিকে, স্বদেশের জাতীয় দলের কোচ হিসেবে সাম্পাওলিরও সময়টা ভালো যাচ্ছে না। গত জুনে দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত বাছাইপর্বে কোনো জয় দেখেননি তিনি। তার অধীনে তিন ম্যাচের তিনটিতেই ড্র করেছে দল।
অবশ্য জয়ের স্বাদ না পেলেও দুর্দান্ত মেসিকে কোচিং করাতে পেরে ভীষণ খুশি কোচ। আর পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলারের জাদুকরী ফুটবলেই ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন তিনি। তবে দেয়ালে পিঠ ঠেকা অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে অন্যদেরও একইভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানালেন।
কিটোতে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল সাড়ে পাঁচটায় শুরু হবে আর্জেন্টিনা-একুয়েডর ম্যাচটি।
ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে সাম্পাওলি “এই তিন ম্যাচে আমি অবিশ্বাস্য এক মেসিকে নেতৃত্ব দিয়েছি-নিবেদিত, মরিয়া। আমরা যদি মেসির মানে খেলতে পারি তাহলে ম্যাচটি খুব ভালো যাবে।”
“আমাদের মেসি আছে… আরেকটি ব্যাপার যে গত দুই ম্যাচে আমরা ২৮টি গোলের সুযোগ তৈরি করেছি।”
টেবিলের শীর্ষস্থানধারী ব্রাজিলের পয়েন্ট ৩৮। দ্বিতীয় স্থানে থাকা উরুগুয়ের পয়েন্ট ২৮। ২৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে চিলি। কলম্বিয়ার পয়েন্টও ২৬, তাদের গোল পার্থক্যও সমান, তবে কম গোল করায় পিছিয়ে কলম্বিয়া।
পঞ্চম স্থানে থাকা পেরুর পয়েন্ট ২৫। আর্জেন্টিনার পয়েন্টও তাই; দুই দলের গোল ব্যবধানও সমান। তবে কম গোল করায় পিছিয়ে আছে সাম্পাওলির দল।
এই অঞ্চল থেকে সেরা চার দল সরাসরি খেলবে আগামী বছরের বিশ্বকাপে। পঞ্চম দলটির সুযোগ পেতে হলে প্লে-অফ খেলে জিততে হবে ওশিয়ানিয়া অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে।
পয়েন্ট টেবিলে পিছিয়ে পড়লেও বিশ্বকাপ ভাগ্য এখনও নিজেদের হাতেই আছে আর্জেন্টিনার। শেষ রাউন্ডে তাদের উপরে থাকা দুই দল পেরু ও কলম্বিয়া বুধবার একই সময়ে মুখোমুখি হবে। এই ম্যাচ ড্র হলে আর্জেন্টিনা একুয়েডরকে হারাতে পারলে সরাসরিই পাবে রাশিয়ার টিকেট।
আর আর্জেন্টিনার জয়ে পেরু ও কলম্বিয়ার মধ্যে যারা হারবে তারা চলে যাবে আর্জেন্টিনার নিচে। ফলে অন্য সব ম্যাচে যে ফলই হোক না কেন জিততে পারলে অন্তত পঞ্চম স্থানে থেকে প্লে-অফ খেলার সুযোগ পাবে লিওনেল মেসির দল।
আবার একই সময়ে হতে যাওয়া ম্যাচে ব্রাজিলের মাঠে চিলি জিততে না পারলে আর্জেন্টিনা নিজেদের ম্যাচে জিতলে শীর্ষ চারে থেকে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার টিকেট পাবে।
যেকোনো হিসেবেই একুয়েডরের মাঠে আর্জেন্টিনার জিততেই হবে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কিটোর ২ হাজার ৮৫০ মিটার উচ্চতায় বাইরের কারও জন্য খেলাটাই কষ্টকর। এই মাঠে তাদের অতীত পারফরম্যান্সও খুব একটা সুখকর নয়; ২০০১ সালের পর থেকে একুয়েডরকে হারাতে পারেনি আর্জেন্টিনা।
তবে অতীত নিয়ে ভাবছেন না সাম্পাওলি। বাঁচামরার এ লড়াইয়ে জয়ের ব্যাপারে দারুণ আত্মবিশ্বাসী আর্জেন্টাইন এ কোচ।