দলবদলের জটিলতায় নির্ভরযোগ্য আট ফুটবলারকে হারানোর পর চোটের হানায় জেরবার এখন শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব। পরিস্থিতি এমন যে, একাদশ সাঁজানো নিয়েই দুঃশ্চিন্তায় আছেন কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক। ধার-দেনা করে ফুটবলার এনে একাদশ গড়া নিয়েও ভাবতে হচ্ছে তাকে! বিরুদ্ধ স্রোতে সাঁতরে চলা মানিক কিনারের খোঁজে তাই আঁকড়ে ধরছেন হাতের কাছে থাকা শিষ্যদেরই।
Published : 25 Apr 2016, 09:52 PM
আগামী মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এএফসি কাপের ‘ই’ গ্রুপের ম্যাচে সিঙ্গাপুরের দল ট্যাম্পাইন রোভার্সের মুখোমুখি হবে শেখ জামাল। প্রতিপক্ষের শক্তি আর নিজেদের দুর্বলতা ভালোভাবে জানা মানিক তবু আশা ছাড়ছেন না। নিজের দলটাকে ‘আহত সৈনিক’ আখ্যা দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন এই দুঃসময়ে সময়ে ভাগ্যকে পাশে পেতে চান তিনি।
বিরূপ পরিস্থিতির যাতাকলে পিষ্ট হওয়া আপনার দলটাকে এ মুহূর্তে এক বাক্যে কি বলবেন আপনি? এমন প্রশ্নের জবাবে খানিকটা ভেবে মানিক যে উত্তর দিলেন, তাতে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়টাও থাকল লুকিয়ে, “আহত সৈনিক। হ্যাঁ, আহত সৈনিকই বলব আমি। সব মিলিয়ে আমাদের যে অবস্থা, তাতে এটাই বলব।”
মামুনুল ইসলাম, নাসিরউদ্দিন চৌধূরী, জামাল ভূইয়াদের হাত ধরে বাছাইপর্বের চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের প্রথম ক্লাব হিসেবে এএফসি কাপের মূল পর্বে ওঠার ইতিহাস গড়েছিল শেখ জামাল। মৌসুমের শুরুতে সেরা ফুটবলারদের হারিয়ে দলটি এখন হতাশার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। মূল পর্বে টানা চার ম্যাচে চার হারে সেরা ষোলোয় ওঠার আশা শেষ। এখন শুধু চাওয়া-একটু সান্ত্বনা নিয়ে এএফসি কাপ শেষ করা!
কিন্তু সেটাও কঠিন করে তুলেছে চোট। এমেকা ডারলিংটন, ওয়েডসেন আনসেলমে চোটে আক্রান্ত। ইয়াসিন খান ছিটকে গেছেন লাল কার্ডের খাড়ায়। দুই হলুদ কার্ড দেখায় ট্যাম্পাইনের বিপক্ষে ম্যাচে খেলা হচ্ছে না জামাল ভূইয়ারও। বদলি খেলোয়াড় হাতে নেই; সেরা একাদশ গড়া নিয়েও ধার-দেনা করতে হচ্ছে মানিককে। তবু ‘আহত সৈনিকদের’ নিয়ে লড়াই করার দুঃসাহসী ছক কষছেন তিনি।
“কখনও কখনও পরিস্থিতি এমন হয় না যে, দুঃসময়ে পড়লেই সেরাটা বেরিয়ে আসে। মালয়েশিয়াতে সর্বশেষ ম্যাচে আমরা হেরেছি কিন্তু ওই ম্যাচে খেলতে আমরা মাত্র ১৪ জন নিয়ে গিয়েছিলাম। এর মধ্যে আবার ছিল দুইজন গোলরক্ষক। খেলোয়াড় বদল করার সুযোগও ছিল না আমাদের। ওই ম্যাচে কিন্তু এগারো জনই পুরোটা সময় খেলেছে। এ ম্যাচেও এগারো জন ভালোভাবে ম্যাচটা শেষ করে আসতেও পারে।”
ট্যাম্পাইন রোভার্সের মাঠে ৪-০ গোলে হেরেই এএফসি কাপের মূল পর্ব শুরু করে শেখ জামাল। তবে ‘বিধ্বস্ত’ দল নিয়ে চলতি স্বাধীনতা কাপে দাপুটে ফুটবলই খেলেছে তারা, অনায়াসে উঠেছে সেমি-ফাইনালেও। শেখ জামালের ডিফেন্ডার কেষ্ট কুমার বোস জানালেন, স্বাধীনতা কাপের পারফরম্যান্স ট্যাম্পাইনের বিপক্ষে ম্যাচে টেনে নিতে চান তারা।
শিষ্যের সুরে সুর মেলালেন কোচ মানিকও। মাত্র ১৪ জনের দল নিয়ে মালয়েশিয়ার দল সেলানগোর এফএর বিপক্ষে লড়াকু হারটিও তার মনোবল বাড়াচ্ছে। মনের জোর দিয়ে মাঠ ও মাঠের বাইরের বাঁধা পেরুনোর ছক কষছেন শেষ জামাল কোচ। ভাগ্যকেও একটু পাশে পাওয়ার আশা আছে তার।
“মনের জোর দিয়েও কিন্তু অনেক কিছু করা সম্ভব। ভাগ্যকেও পাশে পাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। এক পয়েন্ট পেলেই আমি খুশি হব।”