‘ভিনিসিউসময়‘ ম্যাচে রিয়ালের জয়

সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহের কারণে ভাইয়েকানোর বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদের ম্যাচটি শুরু হয় অন্যরকম আবহ নিয়ে; তবে প্রত্যাশিত জয়ই পেয়েছে কার্লো আনচেলত্তির দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2023, 07:36 PM
Updated : 24 May 2023, 07:36 PM

বর্ণবাদের শেকড় সমূলে উৎপাটনের বার্তা দেওয়া হলো কিক অফের আগেই। সতীর্থ ভিনিসিউস জুনিয়রের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করতে দলের সবাই মাঠে ঢুকল পিঠে ‘ভিনি’ লেখা জার্সি গায়ে। সমর্থকরাও পোস্টারে, ব্যানারে ফুটিয়ে তুলল বারবার বর্ণবাদী আচরণের শিকার হওয়া ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের পাশে থাকার বার্তা। না খেলেও ম্যাচে তাই প্রবলভাবে থাকলেন ভিনিসিউস এবং এমন ভিন্ন আবহের ম্যাচে জিতল রিয়াল মাদ্রিদও।

সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে বুধবার রাতে লা লিগায় রায়ো ভাইয়েকানোকে ২-১ গোলে হারিয়েছে রিয়াল। দলের হয়ে জালের দেখা পান করিম বেনজেমা ও রদ্রিগো।

ভালেন্সিয়া ম্যাচের লাল কার্ড প্রত্যাহার করে নেওয়া হলেও ভিনিসিউসকে বেঞ্চে রেখে একাদশ সাজান রিয়াল কোচ। হালকা চোট থাকায় তাকে বদলি তালিকাতেও রাখেননি আনচেলত্তি। সতীর্থদের সঙ্গে কিক অফের আগে অবশ্য মাঠে এসেছিলেন ভিনিসিউস। সমর্থকদের করতালির জবাব দিয়ে চলে যান ড্রেসিংরুমের দিকে।

চলতি লিগে রিয়ালকে প্রথম হারের তেতো স্বাদ দিয়েছিল এই ভাইয়েকানোই। নিজেদের মাঠে কার্লো আনচেলত্তির দলকে ৩-২ গোলে হারিয়েছিল তারা। এবারের দেখায়ও ভাইয়েকানো শুরু থেকে বেশ চাপ দিতে থাকে রিয়ালের রক্ষণে। কিন্তু থিবো কোর্তোয়াকে তেমন একটা পরীক্ষায় ফেলতে পারছিল না তারা।

দ্বাদশ মিনিটে উনাই লোপেসের শট যায় কোর্তোয়া বরাবর। ২৬তম মিনিটে সান্তিয়া কোমাসেরার প্রচেষ্টাও পারেনি রিয়াল গোলরক্ষকে পরাস্ত করতে।  

সাদামাটা শুরু করা রিয়াল ৩১তম মিনিটে প্রথম ভালো আক্রমণ থেকেই গোল তুলে নেয়। ফেদে ভালভেরদের সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে গোলরক্ষককে কাটিয়ে কোনাকুনি শট নেন বেনজেমা। জালের দিকে ছুটতে থাকা বল এক ডিফেন্ডার স্লাইড করলেও লাভ হয়নি। বল ঠিকই খুঁজে নেয় ঠিকানা।

লিগে বেনজেমার গোল হলো ১৮টি। অবশ্য সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পিচিচি ট্রফির দৌড়ে ফরাসি স্ট্রাইকারের চেয়ে বেশ এগিয়ে আছেন বার্সেলোনার রবের্ত লেভানদোভস্কি, পোলিশ ফরোয়ার্ডের গোল ২২টি ।

দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান দ্বিগুণের চেষ্টা করতে থাকে রিয়াল। ৫৫তম মিনিটে লুকা মদ্রিচের আড়াআড়ি ক্রসে স্লাইড করে পা ছোঁয়ালেও বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি দানি কারভাহাল।

এরপর থেকে যেন বলের নিয়ন্ত্রণ রাখার দিকেই মনোযোগী ছিল রিয়াল। আক্রমণগুলো হচ্ছিল না তেমন ধারাল। ভাইয়েকানোর বক্সের ভেতরে কিংবা আশপাশেই আটকে যেতে থাকে বেনজেমাদের চেষ্টা।

৭১তম মিনিটে মদ্রিচকে তুলে মার্কো আসেনসিওকে নামান আনচেলত্তি। কিন্তু এই ফরোয়ার্ডও পারছিলেন না ছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে। এরই মধ্যে ৮৪তম মিনিটে সমতা ফেরায় ভাইয়েকানো।

বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা পেপ চাভারিয়া কাটব্যাক বাড়ান বক্সে। বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ঠাণ্ডা মাথার কোনাকুণি শটে কোর্তোয়াকে পরাস্ত করেন রাউল দি তমাস।

৮৯তম মিনিটে দানি সেবাইয়োসের পাস ধরে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নিখুঁত শটে দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন রদ্রিগো। পয়েন্ট হারানোর শঙ্কার মেঘ সরে যায় আগের ম্যাচে ভালেন্সিয়ার কাছে হেরে আসা রিয়ালের আকাশ থেকে।

লা লিগায় জয়ে ফেরার পাশাপাশি টেবিলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে রিয়াল। ৩৬ ম্যাচে ৭৪ পয়েন্ট তাদের। ৭২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা আতলেতিকো মাদ্রিদ অবশ্য রিয়ালের চেয়ে কম খেলেছে এক ম্যাচ।

আগেই শিরোপা জেতা বার্সেলোনার ৩৬ ম্যাচে ৮৫ পয়েন্ট।